নতুন করে ফিটনেস ট্রেনিং শুরু করা খুব সহজ কাজ নয়। সবচেয়ে সোজা মনে করা হয় ফিটনেস অ্যাক্টিভিটির মধ্যে রানিং। সহজ এ কারণেই কারণ এর জন্য কোন বিশেষ কোনও পদ্ধতি দরকার হয় না। সকালে উঠে বা সন্ধ্যায় দৌড় শুরু করলেই হল। এছাড়া আপনার কোনও দ্বিতীয় জিনিস দরকার নেই। কেউ কেউ রানিং শ্যু ব্যবহার করেন। তো সেটিও বাধ্যতামূলক নয়। জানিয়ে দেওয়া যাক যে অনেক লোকেরা মাঠে শ্যু ছাড়া বা বেয়ারফুট রানিং পছন্দ করেন। এর আলাদা ফায়দা রয়েছে।
যদি আপনি রানিং শুরু করার বিষয়ে মনস্থির করে থাকেন, আপনি যদি ভারতের বাসিন্দা হন, তাহলে এখন জেনে নেওয়া দরকার কখন, কীভাবে দৌড় শুরু করলে শরীর ঠিক রেখে পরিশ্রম ফল দেবে। বর্ষায় বৃষ্টি এবং হাওয়াতে আর্দ্রতা বেশি থাকে, বর্ষার সময়ে দৌড়ানোর জন্য আপনাকে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে এবং এর কী কী ফায়দা তা আপনাদের আমি জানিয়ে দিচ্ছি। ঠান্ডা এবং গরমের সময় রানিং এর কী কী লাভ রয়েছে সে বিষয়ে আমরা গুরুত্বপূর্ণ জিনিস জানাব।
প্রত্যেক জায়গায় পরিস্থিতি আলাদা। ভারতে সাধারণভাবে তিনটি ঋতু থাকে। ঠান্ডা, গরম এবং বৃষ্টি। এই তিন মরশুম রানিং শুরু করার জন্য কিছু সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। কিছু রানার্সরা ঠান্ডার মধ্যে রানিং করা পছন্দ করেন আবার কিছু গরমে দৌড়াতে পছন্দ করেন। কিন্তু যদি আপনার ভারতের জলবায়ুতে থাকেন, তাহলে দেশের গরমে, রোদে রানিং যদি শুরু করেন, তাহলে হতে পারে আপনার জায়গা বাড়ি নয় হাসপাতালে হবে। যদি আপনি রানিং শুরু করার জন্য করতে চান, তাহলে মনে রাখবেন যে ঠান্ডা হোক বা গরম বা বর্ষা। কোনও সময়ই এক্সট্রিম ওয়েদার কন্ডিশনে শুরু করবেন না।
রানিং শুরু করার জন্য এক্সট্রিম ওয়েদার কেন ঠিক নয়? আসুন এটা জানিয়ে দিন এর কারণ হলো, যে যদি আপনি রানিং শুরু করার জন্য কোনও চড়া গরম বা প্রচন্ড ঠান্ডা বেছে নেন, তাহলে আপনার শরীর আচমকা এই পরিবর্তন নিতে পারবে না। যখন আপনি দৌড়ন তখন আপনার শরীর গরম হতে শুরু করে, গরমকালে সেই গরম বাইরের গরম এবং ভেতরের গরমের অন্তর আপনার শরীর অসুস্থ করে দিতে পারে।
তাই বলা হচ্ছে যে দৌড়ানোর জন্য সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর অথবা মার্চ থেকে মে মাস পর্যন্ত সবচেয়ে আদর্শ সময়। একবার দৌড়ে অভ্যস্ত হয়ে গেলে তারপর আপনি ঠান্ডা বা গরমে নিজের দৌড় activity কম-বেশি করে তা বজায় রাখতে পারেন। ততদিনে আপনার শরীর বাইরের পরিবেশকে চিনে ফেলবে।
ঠান্ডায় যদি আপনি রানিং করতে যান, তাহলে সেই সময়ে আপনার ধৈর্য রাখতে হবে। এটা কারণ হলো যে, এই সময় রানিং এর সময় ঘাম এবং জল তেষ্টা এতটা অনুভব হবে না। মনে হতে পারে যে আপনার রানিং এর কোন লাভ হচ্ছে না। কিন্তু তা নয়। তাই আপনি যদি পর্যাপ্ত জল না খান, তাহলে কিন্তু শরীর ডিহাইড্রেট হয়ে যেতে পারে। শীতকালেও যা শরীরকে মারাত্মকভাবে অসুস্থ করে দিতে পারে। তাছাড়া ঠান্ডার সময় ফ্রি এবং পোস্ট রানিং স্ট্রেচিং অত্যন্ত জরুরি। কারণ এই সময়ে শরীরকে দ্রুত ঠান্ডা করে দেয় দৌড় বন্ধ করার পর, গা গরম থাকতে থাকতে স্ট্রেচিং করে নিয়ে শরীরের মাংসপেশী গুলিকে সচল করে রাখা জরুরি। নইলে নার্ভ এবং মাংসপেশিতে ইনজুরি তৈরি হতে পারে। যা স্থায়ী হয়ে যেতে পারে।
ঠান্ডায় গরমের চেয়ে বেশি দৌড়ানো সম্ভব। অনেকেই অনেক বেশি ফুর্তি অনুভব করেন। যেহেতু ঘাম কম হয় তাই শরীর দুর্বল কম হয়। গরমে যেখানে আপনি এক কিলোমিটার দৌড়াতে পারবেন, সেখানে অনায়াসে দু কিলোমিটার তিন কিলোমিটার দৌড়াতে পারবেন শীতকালে। তবে মনে রাখা দরকার যে শীতকালে দৌড়ানোর আগে যখন গা গরম হয়নি, তখন মোটা পশমের পোশাক বা জ্যাকেট চড়িয়ে দৌড়ানো উচিত। যখন দৌড় এবং ট্রেনিং পূর্ণমাত্রায় থাকবে, তখন গরম লাগলে তা খুলে ফেলতে পারেন। আবার দৌড় বন্ধ করার সঙ্গে সঙ্গে শরীরের তাপমাত্রার পার্থক্য শরীরকে করাপ্ট করে দিতে পারে। তাই গরম পোশাকে শরীর ঢেকে ফেলতে হবে।
গরমে ট্রেনিং করলে এ বিষয়টি জেনে রাখতে হবে যে এখানে আমাদের ঘাম অত্যন্ত বেশি হয় এ কারণে জরুরি হল, আপনি রানিং এর জন্য ঠিক সময় বেছে নিন। গরমে ট্রেনিং করতে হলে সূর্য ওঠার আগে দৌড়ানো উচিত। সূর্য উঠে গেলে সেই গরমে দৌড়ালে লাভের চেয়ে লোকসান বেশি হতে পারে। আবার বিকেলে দৌড়াতে চাইলে সূর্য ডোবার পরেই দৌড়তে যাওয়া উচিত। আপনি যদি ট্র্যাক ট্রেনিং করেন তাহলে যেই সময়ে ট্রাকে কড়া রোদ থাকবে না সেই সময়টি বেছে নেওয়া উচিত। পাশাপাশি ফুল স্লিভ টি-শার্ট বা ট্রাকসুট, সানস্ক্রিন লোশন এর মত প্রোটেকশন নিয়ে মাঠে নামা উচিত।
নিজের শরীরের সঙ্গে ইন্টারেকশন জরুরি। রানিং শুরু করার পর একটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে যে আপনি কোন মরশুম বেশি পছন্দ করছেন। আসলে একেক জনের শরীর এক এক রকম ভাবে তৈরি থাকে। কেউ অত্যধিক গরম সহ্য করতে পারেন না, কেউ আবার ঠান্ডা সহ্য করতে পারেন না। তাই আপনি যেটাতে কমফোর্টেবল সেই ওয়েদারেই মাঠে নেমে রানিং শুরু করা উচিত এবং অন্যান্য মরশুমে কম বেশি করতে পারেন রানিং। এরপর অবশ্যই শারীরিক কষ্ট এবং এক্সারসাইজ করে নেওয়া দরকার।
সঙ্গে জল রাখতে হবে। যে কোন মরশুমেই হোক, শীত-গ্রীষ্ম বর্ষা অনেক সময় বাইরের ওয়েদারের কারণে আপনার তেস্টা বা শারীরিক কসরত কম হয়েছে বলে মনে হতে পারে। কিন্তু ভেতরে ভেতরে শরীর কিন্তু জলের ঘাটতি তৈরি করে ফেলে। সে কারণে পর্যাপ্ত জল ট্রেনিং এর পর অবশ্যই খেতে হবে. কোনও সময় যে ঘাম শরীর থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে, সেটি পূরণ করার জন্য আপনার এটি জরুরি। কেউ কেউ সাপ্লিমেন্টও খেয়ে থাকেন। তবে অত কিছু প্রয়োজন নেই জলেই কাজ চলবে।