শীতের মরসুম আসতেই সাধারণত মানুষের খাওয়া-দাওয়ার পরিমাণ কিছুটা বেড়ে যায়। অতিরিক্ত খাওয়া এবং কার্যকলাপ হ্রাসের কারণে, অনেকেরই এই ঋতুতে কিছুটা ওজন বৃদ্ধি পায়। শীতে ফ্লু এবং ভাইরাস এড়াতেও ভাল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা প্রয়োজন। ওজন বেড়ে গেলে, অনেকেই চিন্তায় পড়েন। জানুন কিছু সুস্বাদু সুপারফুড সম্পর্কে, যা খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে কিন্তু ওজন বাড়বে না।
মূলযুক্ত সবজি
গাজর, বীটরুট, মুলো, শালগম, পেঁয়াজের মতো মূলযুক্ত সবজি শীতকালে একেবারেই তাজা পাওয়া যায়। শীতকালে এই সবজিগুলিকে আপনার ডায়েটের অংশ করুন। এগুলিতে উপস্থিত প্রিবায়োটিক, শরীরের ওজন সহজেই কমাতে সাহায্য করে। এই ধরনের সবজি পুষ্টিতে ভরপুর এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ার পাশাপাশি হজমশক্তিও বাড়ায়।
বাজরা
ওজন কমাতে বাজরা খুবই উপকারী। বাজরার রুটি বা লাড্ডু বানিয়ে খাওয়া যেতে পারে। এছাড়া খিচুড়িতে মিশিয়েও খাওয়া যায়। বাজরায় ভিটামিন বি পাওয়া যায় যা, চুলের জন্য খুবই ভাল। এটি মাংসপেশিকে শক্তিশালী করে, শরীরে শক্তি জোগায় এবং ওজনও নিয়ন্ত্রণ করে।
ঘি
ঠান্ডা আবহাওয়ায় ঘি শরীরকে ভেতর থেকে গরম রাখে। মুসুরির ডাল এবং সবজি শুধুমাত্র ঘি দিয়ে রান্না করার চেষ্টা করুন। এছাড়া রুটিতে সামান্য পরিমাণ ঘি লাগিয়ে খেতে পারেন। ঘিতে ভিটামিন এ, ডি, ই এবং কে পাওয়া যায়। এটি শুধু খাবারের স্বাদই বাড়ায় না, ওজনও নিয়ন্ত্রণ করে। দেশি ঘিতে উপস্থিত সিএলএ মেটাবলিজম ঠিক রাখে, যার কারণে স্থূলতা আসে না।
চিনেবাদাম
চিনেবাদাম প্রোটিন সমৃদ্ধ। এটি শীতের জন্য সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর খাবার হিসাবে বিবেচিত। চিনেবাদাম সিদ্ধ, ভাজা বা কাঁচা অবস্থায় খাওয়া যেতে পারে। অনেকে এটি স্যালাড বা সবজিতে যোগ করেও খান। চিনেবাদাম খেলে দীর্ঘ সময় খিদে লাগে না এবং আপনি অতিরিক্ত ক্যালোরি খাওয়া এড়াতে পারেন। চিনেবাদামে রয়েছে ভিটামিন বি, অ্যামিনো অ্যাসিড এবং পলিফেনল যা শরীরকে সুস্থ রাখে। চিনেবাদাম হৃদরোগও দূরে রাখে।
সবুজ শাকসবজি
শীতর মরসুমে প্রচুর সবুজ শাকসবজি পাওয়া যায়। পালং শাক, মেথি, সর্ষের শাক, পুদিনা ইত্যাদির মতো সবজি আপনার খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করুন। সবুজ শাকসবজিতে অনেক পুষ্টি উপাদান পাওয়া যায় যা, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এই সবুজ সবজি টাটকা হতে হবে এবং ভালভাবে ধুয়ে নিতে হবে। সবুজ শাকসবজি খেলে, ঠান্ডা আবহাওয়ায় হাত ও পায়ের ফোলাভাব এবং জ্বালাপোড়া কমে যায়।
ঘরে তৈরি মাখন
শীতকালে মাখন শরীরে উষ্ণতা দেয়। শুধুমাত্র ঘরে তৈরি মাখন খাওয়ার চেষ্টা করুন কারণ এতে চর্বি নেই। রুটি বা পরোটার ওপর সামান্য মাখন লাগিয়ে খেতে পারেন। এটি ডালের সঙ্গেও যোগ করে খাওয়া যেতে পারে। শীতকালে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায় এবং মাখন ত্বককে হাইড্রেটেড রাখে। এটি হাড় এবং ইমিউন সিস্টেমকেও শক্তিশালী করে।
মরসুমি ফল
শীতে আপেল, কমলা, নাশপাতি বা পেঁপের মতো মরসুমি ফল খান। এই সব ফল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে। ওজন কমানোর জন্য, এগুলি দুপুরে এবং রাতের খাবারের মধ্যে স্ন্যাকস হিসাবে খান। এই ফলগুলিতে ফাইবার থাকে যা ত্বকের জন্য ভাল।
তিল
শীতে হাড় ও জয়েন্টের ব্যথা বেড়ে যায়। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে আপনার খাদ্যতালিকায় তিলের বীজ অন্তর্ভুক্ত করুন। এছাড়াও তিল উচ্চ রক্তচাপ কমায়, যার কারণে ঘুম ভাল হয়। তিলে ভিটামিন ই পাওয়া যায়। এটি চিক্কি বা লাড্ডু আকারে খাওয়া যেতে পারে।