প্রতিদিন ফল খেলে সুস্থ থাকে শরীর। ফল শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। শরীরকে রোগবালাইয়ের হাত থেকে রক্ষা করে। তাই ফলকে বলা হয় পুষ্টির পাওয়ার হাউস। বিশেষজ্ঞরা প্রতিদিন ফল খাওয়ার পরামর্শ দেন। বেশিরভাগ মানুষ সকালের প্রাতরাশে ফল খান। এমনও অনেকে আছেন যাঁরা ফল খান বিকেলে বা সন্ধ্যায়। ফল খাওয়ার সময় নিয়ে রয়েছে নানা কথা। অনেকে সময়জ্ঞান মেনে ফল খান। বেশিরভাগই মানতে চান না। ফল খাওয়া নিয়ে যে কথা চালু রয়েছে তা হল দুপুর ২টোর পর খাওয়া উচিত নয়। রাতেও ফল খাওয়া থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেন অনেকে। সত্যিই কি দুপুরের পর ফল খাওয়া বারণ?
কেউ বলেন দুপুর ২টোর পর ফল খাবেন না। কেউ আবার বলেন চারটের পর ফল খাওয়া অনুচিত। প্রত্যেকের নিজস্ব যুক্তি আছে। কেউ বলেন, বিকেলে ফল খেলে ওজন বাড়ে। এতে হজমশক্তি নষ্ট হয়। রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যায়। ফলে ডায়াবেটিসও হতে পারে। কিন্তু এই দাবিগুলির কোনওটাই সত্যি নয়। ফলে থাকে ফাইবার, পটাসিয়াম, ভিটামিন সি এবং ফোলেটের মতো দরকারি পুষ্টিগুণ।
ফল খাওয়ার সেরা সময় কখন?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আম এবং অন্যান্য ফল খাওয়ার সর্বোত্তম সময় সম্পর্কে নানা মুনির নানা মত রয়েছে। এর পিছনে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা তেমন নেই। ফলে এত বেশি ক্যালোরি থাকে না যে রাতে খেলে সমস্যা হতে পারে! ফল শরীরকে পুষ্টি এবং ফাইবারের জোগান দেয়। স্বাস্থ্যকর খাবার।
বিশেষজ্ঞদের মতে, দিনের যে কোনও সময় ফল খাওয়া যেতে পারে। কিন্তু ঘুমের ৩ ঘণ্টা আগে ফল বা কোনও ধরনের খাবার খাওয়ার উচিত নয়। এতে করে ঘুম ভাল হয় এবং কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও হয় না।
সুস্থ থাকতে কোন ফল?
আনারস- আনারসকে পুষ্টির সুপারস্টার বলা হয়। এক কাপ আনারসে ১৩১ শতাংশ ভিটামিন সি এবং ৭৬ শতাংশ ম্যাঙ্গানিজ পাওয়া যায়। আনারসে পাওয়া যায় ব্রোমেলাইন যা অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এনজাইমের মিশ্রণ এবং প্রোটিন হজম করার ক্ষমতা দেয়। টেস্ট-টিউব এবং প্রাণীজ গবেষণায় দেখা গিয়েছে, আনারসে পাওয়া ব্রোমেলিন ক্যান্সার এবং টিউমার বৃদ্ধি রোধ করে।
পেঁপে- পেঁপে ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, পটাসিয়াম এবং ফোলেট সমৃদ্ধ একটি অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর ফল। এতে লাইকোপিনের মতো অ্যান্টি-ক্যান্সার অ্যান্টিঅক্সিডেন্টও রয়েছে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, পেঁপে থেকে শরীর অন্যান্য ফল ও সবজির তুলনায় বেশি লাইকোপিন পায়। পেঁপে হজমশক্তিরও উন্নতি ঘটায়। ওজন কমাতেও কার্যকর।
আপেল- পুষ্টিকর ফলগুলির মধ্যে একটি আপেল। এতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, ভিটামিন সি, পটাশিয়াম, ভিটামিন কে এবং ভিটামিন বি রয়েছে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, আপেলে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হার্টকে সুস্থ রাখে। টাইপ ২ ডায়াবেটিস, ক্যান্সার এবং স্মৃতিহ্রাসের ঝুঁকি কমায়। এ ছাড়া আপেল হাড়ের ঘনত্বও বাড়ায়। আপেলে পাওয়া পেকটিন অন্ত্রে ভাল ব্যাকটেরিয়া বাড়ায়। যা হজম ও বিপাক ক্রিয়াকে উন্নত করে।
ডালিম- স্বাস্থ্যকর ফলগুলির মধ্যে অন্যতম ডালিম। গ্রিন টি এবং রেড ওয়াইনের চেয়ে ডালিমে তিনগুণ বেশি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ডালিমে পাওয়া অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
তরমুজ- তরমুজে ভিটামিন এ এবং সি মেলে। এতে লাইকোপিন, ক্যারোটিনয়েড এবং কিউকারবিটাসিন ই-এর মতো অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পাওয়া যায়। যা ক্যান্সারের মতো মারাত্মক রোগ থেকে রক্ষা করে। লাইকোপিন হার্টকে সুস্থ রাখে। উচ্চ রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল কমায়। তরমুজ খেলে শরীরে কখনও জলের অভাব হয় না।
আরও পড়ুন- রাতে এই ৫ খাবার নয়, গ্যাস ও অনিদ্রার সমস্যা কাটাতে আয়ুর্বেদের দাওয়াই