চলতি বছরের শেষ চন্দ্রগ্রহণ ঘটতে চলেছে ৮ নভেম্বর। সূর্য, পৃথিবী এবং চন্দ্রের অবস্থানের কারণে গ্রহণ হয়। গ্রহণে কিছুক্ষণের জন্য চাঁদের আলো আসবে না পৃথিবীতে। আগামী ৮ নভেম্বর মঙ্গলবার পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ। চন্দ্রগ্রহণকে সূর্যগ্রহণের মতো ক্ষতিকারক বলে মনে করা হয় না। তবে চন্দ্রগ্রহণ নিয়ে মানুষের মধ্যে নানা ভাবনা রয়েছে। গ্রহণের সময় খাওয়া বা ঘুমানো উচিত নয়। এ ব্যাপারে কী বলছে আয়ুর্বেদ?
ভারতীয় সময় অনুযায়ী গ্রহণ
গ্রহণ স্পর্শ (আরম্ভ)- দুপুর ২টো ৩৯ মিনিট।
পূর্ণগ্রাস আরম্ভ– দুপুর ৩টে ৪৬ মিনিট।
গ্রহণ মধ্য– বিকেল ৪টে ২৯ মিনিট।
পূর্ণগ্রাস সমাপ্তি– সন্ধ্যা ৫টা ১২ মিনিট।
গ্রহণ মোক্ষ (সমাপ্তি)– রাত ৬টা ১৯ মিনিট।
পূর্ণগ্রাস স্থিতি- ১ ঘণ্টা ২৬ মিনিট।
গ্রহণ স্থিতি– ৩ ঘণ্টা ৪০ মিনিট।
পঞ্জিকা মতে
হিন্দু পঞ্জিকা মতে,বছরের দ্বিতীয় এবং শেষ চন্দ্রগ্রহণ ৮ নভেম্বর মঙ্গলবার বিকেল ৫টা ৩২ মিনিট থেকে শুরু হবে। শেষ হবে ৬টা ১৮ মিনিট। অর্থাৎ চন্দ্রগ্রহণের মোট সময়কাল ৪৬ মিনিট। অশুভ সময় ৯ ঘন্টা আগে সকাল ৯টা ২১ মিনিট থেকে শুরু।
আয়ুর্বেদে চন্দ্রগ্রহণ নিয়ে আলাদা করে কিছু লেখা নেই। সূর্যগ্রহণের কথা রয়েছে। আয়ুর্বেদ বলছে, গ্রহণের সময় পরিবেশ দূষিত হয়। শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে শরীরে নানা ধরনের জীবাণু প্রবেশের আশঙ্কাও থাকে। চন্দ্রগ্রহণের সময় খাওয়া,ঘুম ছাড়াও শারীরিক সম্পর্ক না করার কথা রয়েছে। লোকবিশ্বাস, চন্দ্রগ্রহণের সময় কোনও শুভ কাজ করা উচিৎ নয়।
আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞরা বলছেন,গ্রহণের সময় পরিবেশ দূষিত হওয়ার কারণে রান্না করলে জীবাণুর আধিক্য বাড়ে। খাবার খেলে বিগড়ে যেতে পারে হজমশক্তি। এছাড়া মেটাবলিজমও প্রভাবিত হতে পারে।
গ্রহণের আগে শুদ্ধ ও সাত্ত্বিক খাবার গ্রহণ করা উচিত। আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গ্রহণের সময় মন্ত্র জপ, প্রার্থনা এবং ধ্যান করা শ্রেয়।
কী করবেন না
১। গ্রহণের সময় শারীরিক মিলন করবেন না।
২। অশুভ সময়ের আগে খাবার, দুধ, দই ইত্যাদিতে তুলসী পাতা রাখুন। এই সময়ে খাবার খাবেন না। গ্রহণকালে খাবার খাওয়া এবং রান্না করা অশুভ বলে মনে করা হয়।
৩। এই সময়ে পুজো করাও নিষিদ্ধ। বাড়ির ঠাকুরঘরের দরজা বন্ধ করে রাখুন।
৪। শিবের নাম নিয়ে ধ্যান করতে পারেন।
৫। কোনও শুভ ও মঙ্গল কাজ করবেন না।
৬। এই সময় ঘুমোবেন না। তবে অসুস্থ, শিশু ও বয়স্কদের ছাড় দেওয়া হয়েছে।
৭। গর্ভবতী মহিলারা বাড়ির বাইরে বেরোবেন না।
যা করবেন-
গ্রহণ শেষ হলে গঙ্গাজল ঢেলে স্নান করুন। মন্দিরের দরজা খুলুন। বিগ্রহকে স্নান করান। প্রদীপ জ্বালিয়ে পুজোপাঠ করুন। সম্ভব হলে গরীব ও অভাবী মানুষকে কম্বল, খাদ্যশস্য, ফলমূল এবং অন্যান্য খাদ্য সামগ্রী দান করুন। এই দিনে দান করা শুভ বলে মনে করা হয়।
সাবধান থাকবেন কোন রাশি
জ্যোতিষশাস্ত্র অনুসারে, শেষ চন্দ্রগ্রহণ সংগঠিত হবে মেষ রাশি, ভরণী নক্ষত্রে। মেষ রাশিতে অবস্থান করছে রাহু এবং চন্দ্র। মিথুন রাশিতে মঙ্গল। তুলা রাশিতে একত্রে অবস্থান সূর্য, বুধ, শুক্র এবং কেতুর। মেষ রাশির অধিপতি মঙ্গল। ফলে এই রাশির জাতক-জাতিকাদের সাবধান থাকতে হবে। গ্রহণকালে অপ্রয়োজনীয় কাজে ঘর থেকে বের হবেন না।
আরও পড়ুন- পুরুষের এই ৪ অভ্যাস দুর্বল করে নারীর মন, আজও মেলে চাণক্যনীতি