
ঘর-বাড়ি পরিষ্কার রাখার ক্ষেত্রে আরশোলা চিন্তার অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আপাতদৃষ্টিতে এই পতঙ্গকে নিরীহ বলে মনে হলেও, এটি আসলে খুবই ক্ষতিকর। মূলত স্যাঁতেসেঁতে বা আবর্জনা আছে, এরকম স্থানে এই পতঙ্গ বংশবিস্তার করে। খাবার-দাবারের উপর আরশোলা বসে, জীবাণু ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়।
কীটনাশক ব্যবহার করেও আরশোলার হাত থেকে নিস্তার মেলেনি? ঘরবাড়ি পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করছেন, কিন্তু পারছেন না? জানুন কীভাবে বাড়ি থেকে তাড়াবেন আরশোলা।
রান্নাঘর শুষ্ক ও পরিষ্কার রাখুন
আরশোলা খাবারের অবশিষ্টাংশ, এঁটো বাসনপত্র এবং আর্দ্রতার প্রতি আকৃষ্ট হয়।
* প্রতি রাতে রান্নাঘরের কাউন্টারগুলি মুছুন।
* ঘুমানোর আগে সিঙ্কটি শুকনো রাখুন।
* বায়ুরোধী পাত্রে খাবার সংরক্ষণ করুন
* এর ফলে তাদের খাবার বা জল খুঁজে পেতে সমস্যা হবে এবং উৎপাত কমবে।
তেজপাতার ব্যবহার
তেজপাতাতে এমন যৌগ থাকে যা আরশোলা অপছন্দ করে।
* তেজপাতা গুঁড়ো করে রান্নাঘরের ক্যাবিনেট, ড্রয়ার, গ্যাস ওভেনের পিছন দিকে ছড়িয়ে দিন। তেজপাতার সাহায্যে কোনও তীব্র গন্ধ ছাড়াই প্রাকৃতিকভাবে আরশোলা ভাগবে।
বেকিং সোডা ও চিনির মিশ্রণ
এটি একটি প্রমাণিত ঘরোয়া প্রতিকার।
* সমান অংশে বেকিং সোডা এবং চিনি মিশিয়ে নিন।
* রান্নাঘরের সব কোণায় এবং সিঙ্কের নিচে অল্প পরিমাণে রাখুন।
চিনি আরশোলাকে আকর্ষণ করে এবং বেকিং সোডা তাদের নির্মূল করতে সাহায্য করে।
লেমনগ্রাস বা লেমনগ্রাস তেল
লেমনগ্রাস একটি শক্তিশালী প্রাকৃতিক উপাদান, যা আরশোলা তাড়াতে কাজে লাগে।
* রান্নাঘরে লেমনগ্রাস রাখুন।
* লেমনগ্রাসের তেল জলের সঙ্গে মিশিয়ে কোণায় স্প্রে করুন।
* এই গন্ধ তাৎক্ষণিকভাবে আরশোলা দূরে রাখে।
নিম পাতা বা নিম তেল ব্যবহার
নিম জীবাণুমুক্ত, ছত্রাকনাশক এবং শক্তিশালী পোকামাকড় প্রতিরোধক।
* নিম পাতা ফুটিয়ে সেই জল স্প্রে করুন।
* গরম জলের সঙ্গে নিম তেল মিশিয়ে ক্যাবিনেটের পিছনে এবং সিঙ্কের নীচে স্প্রে করতে পারেন।
* এই টোটকায় আরশোলা দূর হবে।
ফাটল এবং প্রবেশের স্থান সিল
বেশিরভাগ আরশোলা ফাটল দিয়ে প্রবেশ করে।
* পাইপের চারপাশের ফাঁক, রান্নাঘরের টাইলসের ফাটল, দরজার নীচের জায়গা আটকে দিলে, আরশোলা ঢুকতে পারবে না।
আবর্জনা ফেলে দিন ডাস্টবিন পরিষ্কার করুন নিয়মিত
* খোলা ডাস্টবিন অন্য কিছুর মতো আরশোলা আকর্ষণ করে। একটি শক্ত ঢাকনাযুক্ত বিন ব্যবহার করুন।
* প্রতিদিন ডাস্টবিন পরিষ্কার করুন।
* গরম জল এবং ভিনেগার দিয়ে বিনটি সপ্তাহে অন্তত একবার পরিষ্কার করুন।
শসার টুকরো
তাজা শসায় এমন প্রাকৃতিক যৌগ রয়েছে যা আরশোলা তাড়ায়।
* শসা টুকরো করে কিচেন ক্যাবিনেট, পাইপের পাশে, সব কোণায় রাখুন এবং প্রতি ২-৩ দিন অন্তর প্রতিস্থাপন করুন। এতে আরশোলা ধারে-কাছে আসবে না।
সাবান ও জলের স্প্রে
সাবান ও জলের একটি সাধারণ মিশ্রণ আরশোলা তাৎক্ষণিকভাবে মেরে ফেলতে পারে। আরশোলার উপর সরাসরি স্প্রে করুন। সাবান তাদের শ্বাস-প্রশ্বাসের ছিদ্র বন্ধ করে দেয়।
প্রয়োজনীয় তেলের মিশ্রণ
১০ ফোঁটা পুদিনা তেল, ১০ ফোঁটা ইউক্যালিপটাস তেল, জল, প্রতি রাতে রান্নাঘরের কোণে এটি স্প্রে করুন। এই সুগন্ধি শক্তিশালী আরশোলা প্রতিরোধক।
এই সব ঘরোয়া টোটকার বাইরেও মনে রাখতে হবে, অপরিষ্কার ও অগোছালো স্থানে আরশোলার আনাগোনা বেশি হয়। তাই ঘরবাড়ি পরিষ্কার রাখলে আরশোলার উপদ্রব কমাতে পারবেন। ঘরকে এমনভাবে সাজান এবং আসবাবপত্র এমনভাবে রাখুন, যাতে আরশোলা বাসা বাঁধতে না পারে।