
বেশীরভাগ মানুষ বিশ্বাস করে যে দীর্ঘায়ু শুধুমাত্র ভাল জিনের উপর নির্ভর করে, কিন্তু এটা সত্য নয়। সাম্প্রতিক এক গবেষণা অনুসারে জানা যাচ্ছে, জিন মানুষের আয়ুর মাত্র ২০% নির্ধারণ করে। বাকি ৮০% আমাদের অভ্যাস এবং জীবনযাত্রার উপর নির্ভর করে। বিজ্ঞানীরা ১৫ বছর ধরে ১৮,০০০ মানুষের উপর এই গবেষণাটি পরিচালনা করেছেন।
গবেষণায় দেখা গেছে যে ৯০ বছর বা তার বেশি বয়স পর্যন্ত বেঁচে থাকা ব্যক্তিদের মধ্যে কিছু সাধারণ অভ্যাস থাকে। জানুন সেই বিশেষ অভ্যাসগুলি অন্বেষণ করব যা দীর্ঘ এবং সুস্থ জীবনে অবদান রাখে।
মনকে ভেতর থেকে শান্ত রাখুন
যারা দীর্ঘ জীবনযাপন করেন তারা সাধারণত মন শান্ত রাখেন। এটি শরীরের উপর চাপের নেতিবাচক প্রভাব প্রতিরোধ করে। অতিরিক্ত চাপ হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ এবং দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার মতো সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে যে যারা কম চাপ অনুভব করেন এবং তাদের আবেগ নিয়ন্ত্রণ করেন তারা দীর্ঘ সময় সুস্থ থাকেন। চাপ নিয়ন্ত্রণ করতে, আপনি যোগব্যায়াম, ধ্যান বা শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম চেষ্টা করতে পারেন।
নতুন কিছু শেখার ইচ্ছে
যারা ক্রমাগত নতুন জিনিস শেখেন তাদের মন সক্রিয় থাকে। কৌতূহল মস্তিষ্ককে তীক্ষ্ণ করে, স্মৃতিশক্তিকে শক্তিশালী করে এবং বয়স্কদের মধ্যে সাধারণ রোগ, যেমন ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি কমায়। তাই, মনকে সক্রিয় রাখার জন্য পড়া, ধাঁধা সমাধান করা এবং নতুন দক্ষতা শেখা অপরিহার্য।
প্রকৃতির সঙ্গে সংযুক্ত থাকা
যারা প্রকৃতিতে বেশি সময় কাটান, যেমন বাগানে হাঁটা, পার্কে বসে থাকা, অথবা মুক্ত বাতাসে হাঁটা, তাদের স্বাস্থ্য ভাল থাকে। মানসিক চাপ কমে যায়, ঘুম ভাল হয়, মেজাজ উন্নত হয়, হৃদরোগের উন্নতি হয় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী হয়। তাই, আপনি যদি দীর্ঘ এবং সুখী জীবনযাপন করতে চান, তাহলে প্রকৃতির সাথে যতটা সম্ভব সময় কাটান।
কৃতজ্ঞতা
যারা দীর্ঘ জীবনযাপন করেন তারা ক্ষুদ্রতম জিনিসের জন্যও কৃতজ্ঞ থাকেন। তাদের যা আছে তাতে সন্তুষ্ট থাকা, ধন্যবাদ জানানো, ইতিবাচক চিন্তা করা এবং ঈর্ষা ও রাগের মতো আবেগ এড়ানো তাদের জীবনযাত্রার অংশ। এটি সম্পর্ক উন্নত করে, চাপ কমায় এবং সুখী জীবনের দিকে পরিচালিত করে।
দীর্ঘায়ু
গবেষণায় দেখা যায়, যারা ৯০-১০০ বছর বয়স পর্যন্ত বেঁচে ছিলেন তারা কখনও দীর্ঘায়ুর চেষ্টা করেননি। তারা সম্পর্কের জন্য সময় দিত, সুখী থাকত এবং একটি ভারসাম্যপূর্ণ জীবনযাপন করত।
তাই, যদি আপনি দীর্ঘ এবং সুখী জীবনযাপন করতে চান, তাহলে আজ থেকেই আপনার জীবনযাত্রায় কিছু অভ্যাস অন্তর্ভুক্ত করুন। সপ্তাহে কমপক্ষে ১৫০ মিনিট ব্যায়াম করুন, প্রাকৃতিক খাবার খান, প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমান, ধূমপান এবং অ্যালকোহল থেকে দূরে থাকুন এবং মানসিক চাপ এড়িয়ে চলুন।