ভারতীয় সংস্কৃতিতে গাছ-গাছালির পুজো করা হয়। শাস্ত্রে বিবিধ গাছ-গাছালিতে দেব-দেবীর আবাসের কথা বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে রয়েছে ফুলের মাহাত্ম্যও। দেবদেবীদের রয়েছে নিজস্ব পছন্দের ফুল। তাঁদের সকলের পছন্দ আলাদা। এই সব ফল-ফুলের কথাও রয়েছে শাস্ত্রে। আসলে এর পিছনে রয়েছে বিজ্ঞান। কারণ এই গাছ, ফুলগুলি বৈজ্ঞানিকভাবেও উপকারী। যেমন তুলসী। তুলসী গাছ সর্দি-কাশি থেকে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলার মোক্ষম দাওয়াই। প্রতিটি হিন্দুর বাড়িতেই থাকে এই গাছ। এই গাছে লক্ষ্মী ও বিষ্ণু বাস করেন বলে বিশ্বাস। শাস্ত্রের মাধ্যমেই গাছের গুরুত্বের কথা তুলে ধরা হয়েছে। তেমনই একটি ফুল রয়েছে, যা দেবী লক্ষ্মীর প্রিয়। এই ফুল ইউরিক অ্যাসিড কমাতে কার্যকর দাওয়াই।
দেবী লক্ষ্মীর প্রিয় ফুল পলাশ। লক্ষ্মীপুজোয় এই ফুল নিবেদন করা হয়। তাঁর আশীর্বাদ মেলে। ঘরে অর্থ আসে। নেতিবাচকতা দূর হয়। আয়ুর্বেদের বিচারে পলাশের ফুলের পাশাপাশি গাছের বাকল এবং পাতাও ঔষধি গুণে ভরপুর। এটি একটি বা দুটি নয়, একাধিক রোগ নিরাময় করে। পলাশ ফুল শুকিয়ে পাউডার তৈরি করে খেলে নানা উপকার মেলে। ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি সিরোসিস, দৃষ্টিশক্তি, ডায়াবেটিস এবং ত্বকের সমস্যার নিরাময় হয়। গাঁটের ব্যথা, ফোলাভাব এবং আর্থ্রাইটিসেও আরাম দেয় পলাশ ফুল।
পলাশ ফুলের কী কী গুণ- পলাশ ফুল, গাছের পাতা থেকে ছাল- অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল গুণে পরিপূর্ণ। শরীরে গ্লুকোজ শোষণ করে এবং নিয়ন্ত্রণ করে। এর পাশাপাশি এটি রক্তে শর্করার পরিমাণ ঠিক রাখে। গরমে পলাশের গুঁড়ো জলে মিশিয়ে খেলে ইউরিক অ্যাসিডও থাকে নিয়ন্ত্রণে। আর্থ্রাইটিসের কারণে গাঁটের ব্যথা এবং ফোলা কমে।
আরও পড়ুন- ৫০-এর পরেও থাকবে অফুরান যৌবনশক্তি, খালি পাতে রাখুন সস্তার ৭ খাবার
কীভাবে পলাশ ফুল ব্যথা উপশম করে- পলাশ ফুল গাঁটের ব্যথা এবং আর্থ্রাইটিস প্রতিকার করে। প্রথমে এই ফুলগুলি গরম জলে দিয়ে ফুটিয়ে নিন। এবার ছেঁকে নিয়ে একটি কাপড়ে ফুল নিয়ে ফোলা ও ব্যথার জায়গায় লাগান। এতে ব্যথা ও ফোলার উপশম হবে।
জ্যোতিষ শাস্ত্রেও পলাশ ফুলের গুরুত্ব- জ্যোতিষ শাস্ত্রেও পলাশ ফুলের গুরুত্ব রয়েছে। শাস্ত্র অনুসারে, এটি মা লক্ষ্মীর অন্যতম প্রিয় ফুল। ঘরে ইতিবাচক শক্তির প্রবাহ ঘটে। টাকা রাখার জায়গায় রাখুন পলাশ ফুল। টাকা পয়সার অভাব হবে না।
লাল কাপড়ে বেঁধে রাখুন পলাশ ফুল।