বৈশাখ মাস পড়ে গিয়েছে। আর বৈশাখ মাস মানেই বিয়ের মরসুম। বৈশাখ মাসে অনেকেই বিয়ে করতে পছন্দ করেন। বিয়ের আগে কেউ উৎকণ্ঠায় রয়েছে, কারও ব্যস্ততা, কেউ আবার মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছেন এই সময়। এখন বেশিরভাগ বাঙালির বিয়েই প্রেমঘটিত। ফলে পাত্রপাত্রী আগে থেকেই নিজেদের চেনেন, জানেন। নিজেদের পছন্দ-অপছন্দ সম্পর্কে অবহিত। প্রেমের বিয়েতে বিশেষ ভাবনার দরকার পড়ে না। পাত্র-পাত্রী পরস্পরের ভালোলাগা-খারাপলাগা জানেন। এমনকি নিজেদের গোপন কথাও তাঁদের গোচরে। তবে এখনও দেখাশোনা বিবাহ অচল হয়ে গিয়েছে এমনটা নয়। এই বৈশাখেও বহু মানুষ পরস্পরের সঙ্গে আবদ্ধ হবেন সম্বন্ধ বিয়ের মাধ্যমে। সম্বন্ধ করে বিয়ে মানেই বোঝপড়ার অভাব থাকবে এমনটা কিন্তু মোটেও নয়। কিন্তু এটাও ঠিক, সম্বন্ধ বিয়েতে গোটা বিষয়টি নতুন করে শুরু করতে হয়। কারণ পাত্রপাত্রী নিজেদের সেই অর্থে চেনেন না। প্রণয় বিয়ের মতো পরস্পরের সব জানেন এমনটাও নয়। তবে দুপক্ষই পরস্পরের প্রতি দায়বদ্ধ থাকলে সম্বন্ধ বিয়ে প্রণয় বিয়ের চেয়েও হিট হতে পারে। বিয়ে মানে প্রত্যাশাও। আর এই প্রত্যাশার ভার একটু লাঘব করলেই সম্পর্ক সুন্দর হতে পারে। স্বামী হিসেবে কোন ৫ জিনিস স্ত্রীর কাছে সম্বন্ধ বিয়েতে আশা করবেন না, চলুন জেনে নেওয়া যাক-
১। নতুন পরিবারে মানিয়ে নেওয়া- স্বামী হিসেবে আশা করাই যায় নতুন বউ মানিয়ে নেবেন সকলের সঙ্গে। এটা অন্যায়! যুগ বদলে গিয়েছে। এই বাস্তবতা মেনে নিতে হবে। মাথায় রাখতে হবে, স্ত্রী পরিবার ছেড়ে এসেছেন। এসেই পরিবারের সকলের সঙ্গে মানিয়ে নেবেন এমনটা হবে না। ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। তাই শুরুতেই স্ত্রীকে চাপ দেবেন না। হতেও পারে তিনি একটু লাজুক স্বভাবের। তাই সময় দিন।
২। স্বামীকে গুরুত্ব দেওয়া- অনেক স্বামীই মনে করেন, বিয়ের পর তিনিই স্ত্রীর জগৎ। এটা একদম ভুল। এমনটা মনে করবেন না। ভালোবাসায় পজেসিভ হওয়া খারাপ নয়, কিন্তু এই 'আমাকেই অগ্রাধিকার' দেওয়ার চিন্তা মাথায় আসলে বুঝতে হবে পুরুষটি অতিরিক্ত পজেসিভ। স্ত্রী নিজের মা-বাবাকে অগ্রাধিকার দেবেন, এটাই স্বাভাবিক। তাঁরও নিজস্ব বন্ধবান্ধবদের জগত রয়েছে। স্ত্রী আপনাকে শুরুতেই বিশ্বাস করতে পারবেন না। স্ত্রীকে সেজন্য সময় দিন। নিজেও সমানতালে চেষ্টা করুন তাঁর ভরসার পাত্র হয়ে উঠতে।
৩। আপনার ভালোলাগা-মন্দলাগা- আপনার ভাল লাগা, মন্দ লাগা,পছন্দ-অপছন্দ স্ত্রী প্রথম দিন থেকে জেনে যাবেন এমনটা ভাবা একদমই ঠিক নয়। সম্বন্ধ বিয়েতে পাত্রপাত্রী পরস্পরের সঙ্গে বিশেষ সময় কাটাতে পারেন না। আর সময় কাটালেও সেটা আনুষ্ঠানিক হয়। দুপক্ষই নিজেদের গুটিয়ে রাখেন। ভালোবাসার মতো ধীরে ধীরে মনের সংযোগ তৈরির গল্প নেই। তাই সম্বন্ধ বিয়েতে স্ত্রী যে আপনার সব কিছু জানবেন, সেটা প্রত্যাশা করবেন না। তাঁর সময় লাগবে।
আরও পড়ুন- মোবাইল-ল্যাপটপ ঘেঁটে চোখে সমস্যা? ৪ খাবারে ফেরান উজ্জ্বল জ্যোতি
৪। স্ত্রী বাধ্য হবে- বিয়ের পর অনেকেই চান, স্ত্রী যেন তাঁর কথা শুনে চলেন। সব সিদ্ধান্ত তাঁকে জানিয়েই নেওয়া হোক। এমন আশা রাখলে কিন্তু সম্পর্ক শুরুতেই ধাক্কা খাবে। স্ত্রীর নিজস্ব ব্যক্তিগত জীবন আছে। সেই পরিসর তাঁকে দিন। আর রইল সিদ্ধান্ত জানানোর কথা, সেটার সময়ও আসবে। ভরসাযোগ্য হয়ে উঠুন। তিনিও আপনার কথা শুনবেন।
৫। পেশায় হস্তক্ষেপ- স্ত্রী চাকরিজীবী হলে পেশাগত জীবনে হস্তক্ষেপ করবেন না। তাঁর বেতন কত, অফিসের নানা কথা কখনও জিজ্ঞাসা করবেন। এটাও মাথায় রাখবেন, অফিসের সহকর্মীরা স্ত্রীর বন্ধু হতে পারেন। অযথা সন্দেহ নিরর্থক। হঠাৎ আপনার মনে হল, স্ত্রী চাকরি করবেন না, এটাও অনুচিত। স্ত্রী অফিসের ভালো-মন্দ নিয়ে আপনার সঙ্গে আলোচনা করতে পারেন, তবে পেশাগত জীবনের সমস্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা একান্তই তাঁর।