মানুষের জীবন বদলে গিয়েছে। গতিশীল জীবনে কাজের চাপের সঙ্গে বেড়েছে মানসিক চাপও। সে কারণে ক্রমবর্ধমান হার্ট অ্যাটাক। যা বিশ্বজুড়ে মৃত্যুর কারণের মধ্যে অন্যতম। অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস এবং বসে থেকে টানা কাজের কারণে হৃদরোগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে মৃতের সংখ্যাও। অনেকেই বলছেন, হার্ট অ্যাটাক হঠাৎ করেই আসছে। যা সাইলেন্ট অ্যাটাক নামে পরিচিত। সাইলেন্ট অ্যাটাক মুহূর্তে সব শেষ করে দিচ্ছে। ব্যাপারটা কিন্তু তেমনটা নয়। সাইলেন্ট অ্যাটাক বলে-কয়ে না এলেও আগে থেকে ইঙ্গিত দেয়।
সাইলেন্ট হার্ট অ্যাটাক কী? হার্ট অ্যাটাক আসার আগে বুকে চিনচিন ব্যথা করে। তবে নীরব ঘাতক সাইলেন্ট হার্ট অ্যাটাক। প্রায় কোনও অভাসই দেয় না। হার্টের কাজ করার জন্য অক্সিজেনযুক্ত রক্তের প্রয়োজন। শিরাগুলিতে দূষিত পদার্থ জমার কারণে রক্ত প্রবাহ ধীর বা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। হৃৎপিণ্ডে রক্ত প্রবাহ যত ধীর হবে, ক্ষতি তত বেশি হবে। ধীরে ধীরে হার্টকে দুর্বল করে তোলে সাইলেন্ট হার্ট অ্যাটাক। সাইলেন্ট হার্ট অ্যাটাক কী, এর লক্ষণ, কাদের ঝুঁকি বেশি এবং কীভাবে মোকাবিলা করা উচিত?
সাইলেন্ট হার্ট অ্যাটাক কাদের বেশি হয়?
চিকিৎসকের মতে,ডায়াবেটিস রোগীদের সাইলেন্ট হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। ডায়াবেটিক রোগীদের পা অসাড় হয়ে যায়। দাঁড়াতে অসুবিধা, প্রস্রাব করতে সমস্যা এবং যৌন ইচ্ছা কমে যাওয়ার মতো উপসর্গগুলি দেখা যায় রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়লে।
আরও পড়ুন- ডায়াবেটিস থেকে ওজন কমাতে ওস্তাদ ঢ্যাঁড়শ, কখন-কতখানি খেলে লাভ?
সাইলেন্ট হার্ট অ্যাটাকের কারণ কী?
হার্ট অ্যাটাকের সবচেয়ে বড় কারণ দূষিত পদার্থ যাতে কোলেস্টেরলও থাকে। এটি আপনার করোনারি ধমনীতে জমে। এটি শিরাগুলিতে রক্ত প্রবাহকে ধীর করে দেয়। অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত হার্টের পেশীতে পৌঁছতে বাধা পায়। ডাক্তার বলেছেন, সুষম খাবার, প্রতিদিন ব্যায়াম করা উচিত। অ্যালকোহল ও সিগারেট ছেড়ে দেওয়া দরকার। ৪০ বছরের বেশি বয়স হলে নিয়মিত চেকআপ করান।
সাইলেন্ট হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ কী কী?
বুকে ব্যথা ও অস্বস্তি বোধ- সাধারণত হার্ট অ্যাটাকের ব্যথা হঠাৎ এবং তীক্ষ্ণ হয়। ফলে সময়মতো চিকিৎসা করা যায়। তবে সাইলেন্ট হার্ট অ্যাটাকের ক্ষেত্রে লক্ষণগুলি শনাক্ত করা কঠিন। কারণ এতে ধীরে ধীরে হার্টের ক্ষতি হয়। তবে বুকে ব্যথা,অস্বস্তি বা চাপ অনুভব করতে পারেন। এই ধরনের উপসর্গ দেখলে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।
শরীরের অন্যান্য অংশে ব্যথা- হার্ট অ্যাটাক শুধুমাত্র আপনার হার্টকেই নয়, পুরো শরীরকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। সাইলেন্ট হার্ট অ্যাটাকে শরীরের একাধিক অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। কাঁধ, পিঠ, ঘাড়,চোয়াল এবং পেটে অস্বস্তি বা ব্যথা হলে অবহেলা করবেন না। সতর্ক হোন।
আরও পড়ুন- ডায়াবেটিস থেকে ওজন কমাতে ওস্তাদ ঢ্যাঁড়শ, কখন-কতখানি খেলে লাভ?
শ্বাস নিতে সমস্যা- সিঁড়ি বেয়ে উঠতে, দৌড়াতে বা খেলাধুলা করার সময় শ্বাসকষ্ট হওয়া সাধারণ ব্যাপার। শ্বাসকষ্টের সঙ্গে বুকে ব্যথা হলে বা অতিরিক্ত শ্বাসকষ্ট হলে সাইলেন্ট হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ হতে পারে। মাথা ঘোরা বা হালকা মাথা ব্যথাও সাইলেন্ট হার্ট অ্যাটাকের উপসর্গ।
বমি ভাব ও শীতল ঘাম- শীতল ঘাম, বমি বমি ভাব এবং জ্বরও লক্ষণ হতে পারে সাইলেন্ট হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ।