শরীরে ভিতরে কোনওরকম সমস্যা হলেই বাইরে তার লক্ষণ দেখা যায়। তবে অনেকেই সেই লক্ষণগুলিতে গুরুত্ব দেন না, যা পড়ে রীতিমতো বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। সম্প্রতি এক মহিলার সঙ্গে ঘটেছে এমনই এক ঘটনা। ওই মহিলার ঠোঁটে একটি দাগ ছিল, যেটিকে তিনি বিউটি স্পট ভেবেছিলেন। কিন্তু পরবর্তী সময়ে সেই দাগটিকে ঘিরে তিনি এমন একটি রোগের বিষয়ে জানতে পারেন যে হতবাক হয়ে যান। অ্যান্ড্রিয়া মোজর নামে ওই মহিলা মনে ভাবতেন যে তাঁর ঠোঁটে যে দাগটি রয়েছে সেটি একটি বিউটি স্পট। তবে ধীরে ধীরে সেটির রং বদলাতে থাকে এবং আকারেও বড় হতে থাকে।
গোটা বিষয়টি কী?
ঘটনাটি ২০২০ সালে। গায়ের রঙ ফর্সা হওয়ার কারণে নিজের ত্বকে একটি বাদামী রঙের দাগ দেখতে পান মন্টানার বাসিন্দা অ্যান্ড্রিয়া মোজর। সেটি নিয়ে চিকিৎসকের কাছেও যান তিনি। তবে চিকিৎসক জানান এটা নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। জানা গিয়েছে, একদিন অবসর সময়ে দেখেন ইনস্টাগ্রামে কোনও এক ইউজার বার্ষিক ত্বক পরীক্ষার একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন। তারপরেই ডারমাটোলজিস্টের কাছে গিয়ে ত্বক পরীক্ষা করানোর সিদ্ধান্ত নেন অ্যান্ড্রিয়া। তাঁর বায়োপসি করা হয়। তাতে জানা যায়, তাঁর ঠোঁটের ওপরে হওয়া বাদামী স্পট ক্যান্সারের আগের সংকেত।
পেশায় এস্টেট এজেন্ট অ্যান্ড্রিয়া মোজর জানাচ্ছেন যে, ডার্মাটোলজিস্টের কাছে গিয়ে বিষয়টি জানতে পারায় তিনি খুশি। ২০২০ সালে তাঁর ঠোঁটের ওপরের দাগটি সরানোর প্রক্রিয়া শুরু করেন চিকিৎসকেরা। ওই স্পটের আশেপাশের এলাকা ঢেকে রাখার জন্য চিকিৎসকদের জায়গাটি কাটার দরকার পড়ে। এর মাধ্যমে ওই স্পটটিকে আলাদা করা হয়। অ্যান্ড্রিয়া মোজর জানাচ্ছেন, ভাল চিকিৎসক পাওয়ায় তিনি ভীষণ খুশি। পরে সেটির টেস্ট করে জানা যায় যে, এটিতে ভয়ঙ্কর ত্বক ক্যান্সারে আক্রন্ত হতে পারতেন তিনি।
জানা গিয়েছে, সাধারণত এই ধরেন দাগগুলি বাদামী বা কাবো রঙের হয়। দেহের বিভিন্ন অংশে হতে পারে এই দাগগুলি। কারও কারও বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এগুলি দেখা যায়। সাধারণত এই ধরনের স্পটগুলির আকার, আয়তন ও রঙ একই ধরনের থাকে। তবে আকার ও আয়তনে পরিবর্তন দেখা দিলে সেটি স্কিন ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে।
চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন , তাঁরা অ্যান্ড্রিয়া মোজরের মুখের দাগটি পুরোপুরি সরিয়ে দিয়েছেন। এবিষয়ে অ্যান্ড্রিয়া জানাচ্ছেন যে তিনিও কখনও স্বপ্নেও ভাবেননি যে তাঁর সঙ্গে এমনটা হতে পারে। এখন হাসলে তাঁকে অন্যরকম দেখায় বলেই জানাচ্ছেন তিনি। তাছাড়া চিকিৎসকরা যে অংশটি কেটেছিলেন সেটি ঠিক হতেও কিছুটা সময় লাগবে। তবে সময় থাকতেই বিষয়টি জানতে পারায় তিনি খুশি।
নিজের পুরনো ছবি দেখে অ্যান্ড্রিয়া মোজর জানান, ২০০৯ সালে তাঁর ঠোঁটের ওই দাগটি বাড়তে শুরু করে। এছাড়া সোশ্যাল মিডিয়াতেও বিষয়টি জানিয়েছেন তিনি, যাতে মানুষ এর থেক সচেতন হতে পারেন। অ্যান্ড্রিয়া জানাচ্ছেন, আগে তিনি নিজের ত্বকের বিষয়ে গুরুত্ব দিতেন না, তবে তাঁর পোস্ট দেখে মানুষ বুঝতে পারবেন যে, নিয়মিত স্কিনের চেক-আপ করানো কতোটা জরুরি।
আরও পড়ুন - সিভিক ভলান্টিয়ারের মা খুন, দুষ্কৃতীদের চিনে ফেলাতেই পরিণতি?