গরমের দাবদাহে কাহিল সকলে। আর গ্রীষ্মে (Summer) মানুষের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে থাকার প্রবণতা বর্তমানে অনেক বেড়েছে। সেই সঙ্গে ঠাণ্ডা পানীয়, আইসক্রিম খাওয়া, হালকা পোশাক পরা ইত্যাদি আমাদের রোজকার রুটিনে পরিণত হয়। ত্বক,চুল বা ডায়েটের যত্ন নিলেও একটা জিনিস অনেকেই এড়িয়ে যাই। তা হল চোখের যত্ন (Eye Care) নেওয়া।
তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চোখের অতিরিক্ত যত্ন নেওয়া উচিত বলেই পরামর্শ দিচ্ছেন চক্ষু বিশেষজ্ঞরা (Ophthalmologists)। গরমের চোখের সঠিক যত্ন নিয়ে পরামর্শ দিলেন ডাঃ বামশিধর (Dr. Vamshidhar), ফ্যাকো রিফ্লেক্টিভ সার্জন (ম্যাক্সিভিশন চক্ষু হাসপাতাল)। চিকিৎসক জানালেন, বর্তমানে চোখের বিভিন্ন সংক্রমণে প্রায় ৩০% বৃদ্ধি পেয়েছে যা কনজাংটিভাইটিস (Conjunctivitis) নামেও পরিচিত।
চোখের কিছু সাধারণ সমস্যা
* সূর্যে উপস্থিত ইউভি রশ্মি (UV Rays), চোখে ছানি (Cataracts) পড়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। এর পাশাপাশি রেটিনার ক্ষতির সম্ভাবনাও থাকে যা সৌর রেটিনোপ্যাথি (Solar Retinopathy) নামে পরিচিত।
* সূর্যের আলোতে উপস্থিত এই ইউভি রশ্মির সরাসরি সংস্পর্শের এলে টেরিজিয়াম (Pterygium) হতে পারে। এটি এমন একটি অসুস্থতা যা কর্নিয়ায় অতিরিক্ত বৃদ্ধি ঘটায়।
* গ্রীষ্মকালে অনেকেই চোখে শুষ্কতার মতো সমস্যায় ভোগেন। সূর্যের আলো এবং অতিরিক্ত উত্তাপের প্রত্যক্ষ সংস্পর্শের কারণে, চোখের শুষ্কতার ফলে চোখের থেকে টিয়ার ফিল্মের বাষ্পীভবন ঘটে।
চিকিৎসক জানান, "আমাদের মেডিকেল সেন্টারে, আমরা অ্যালার্জিক কনজাংটিভাইটিস এবং ভাইরাল কনজাংটিভাইটিসের হঠাৎ বৃদ্ধি দেখতে পাচ্ছি।" গ্রীষ্মকালে চোখের উল্লিখিত ঝুঁকির কারণে চোখকে সুরক্ষার জন্য কয়েকটি সহজ টিপস শেয়ার করলেন ডাঃ বামশিধর।
চোখের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায়
* ইউভি প্রোটেকশন যুক্ত সানগ্লাস চোখের যে কোনও ধরণের ক্ষয়ক্ষতি রক্ষায় সহায়তা করতে পারে এবং সূর্যের আলোর যে কোনও ধরণের সংস্পর্শকে হ্রাস করে।
* গ্রীষ্মকালে পর্যাপ্ত জল পান করতে হবে এবং স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে। যে সমস্ত ফলে জলীয় পদার্থ বেশি, সেগুলি খেলে চোখের শুষ্কতা প্রতিরোধ হয়। তাই গরমকালে হাইড্রেটেড থাকা খুব জরুরী।
* লুব্রিকেন্ট বা আই ড্রপের মতো অনেক ধরণের বিকল্প ব্যবস্থা আছে চোখের প্রাকৃতিক আর্দ্রতা ফিরিয়ে আনার জন্য। গ্রীষ্মে এগুলি ব্যবহার করা যেতে পারে। এটে কেবল শুষ্কতা ক্মতে তা নয়, সেই সঙ্গে যে কোনও ধরণের সংক্রমণও দূরে থাকে। তবে সেগুলি অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ মেনেই ব্যবাহার করতে হবে।
* ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবার যেমন সবুজ শাক, গাজর, শসা, পেঁপে ইত্যাদি রোজকার ডায়েটে রাখতে হবে।
তবে সব শেষে বলা যায় আপনার শরীরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ, চোখের লালনপালনের জন্য সুষম খাদ্য গ্রহণ করা, পর্যাপ্ত জল গ্রহণ এবং উপরে বর্ণিত টিপসগুলি অনুসরণ করা গুরুত্বপূর্ণ।