পায়ের আঙুলে ব্যথা, গোড়ালিতে জ্বালা, অস্থিসন্ধি ফুলে গিয়ে যন্ত্রণা- এসবই শরীরে ইউরিক অ্যাসিড বাড়ার লক্ষণ। সবার শরীরেই তৈরি হয় ইউরিক অ্যাসিড। কিডনি তা প্রস্রাবের মাধ্যমে বাইরে বের করে দেয়। নারী ও পুরুষের শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা আলাদা। ইউরিক অ্যাসিড মহিলাদের মধ্যে ৩.৫ থেকে ৬ mg/dL পর্যন্ত স্বাভাবিক। পুরুষদের স্বাভাবিক মাত্রা ৪ থেকে ৬.৫ mg/dL পর্যন্ত। শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হয়ে গেলে হাত-পায়ের অস্থিসন্ধিতে জমা হয়। অস্থিসন্ধির ব্যথা সহ্য করা যায় না। ইউরিক অ্যাসিড সময়ে নিয়ন্ত্রণ করা দরকার। নইলে কখনও কখনও কিডনি বিকল হওয়ার ঝুঁকিও থাকে। কর্মব্যস্ত জীবন ও অনিয়ন্ত্রণ খাবারের কারণে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়ছে।
খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তনের কারণে বাড়ছে ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা। খাবার থেকে উৎপন্ন ইউরিক অ্যাসিড রক্তে মিশে পৌঁছয় কি়ডনিতে। কিডনি এই দূষিত পদার্থকে ছেঁকে মূত্রের মাধ্যেম দেহের বাইরে বার করে দেয়। শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে গেলে কিডনির পক্ষে সেই অতিরিক্ত অ্যাসিডকে বার করা সম্ভব হয় না। ফলে বিভিন্ন অঙ্গে জমতে থাকে ইউরিক অ্যাসিড। তখন গাঁটে গাঁটে শুরু হয় যন্ত্রণা। অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাসই এর জন্য মূলত দায়ী। জেনে অবাক হবেন যে জীবনযাত্রায় এবং খাদ্যাভাসে পরিবর্তন আনলে ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা নির্মূল করা সম্ভব। খাদ্যাভ্যাস এবং জেনেটিক কারণে উচ্চ ইউরিক অ্যাসিড হতে পারে। অ্যালকোহল এড়িয়ে এবং নির্দিষ্ট কিছু খাবার গ্রহণ কমিয়ে ইউরিক অ্যাসিড অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। রইল ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণের ৫ সহজ উপায়।
- আমিষ থেকে দূরত্ব বজায় রেখে ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। রেড মিট, মাছ, মুরগির মাংস ইত্যাদিতে পিউরিনের পরিমাণ বেশি থাকে। যে কারণে ইউরিক অ্যাসিড বৃদ্ধি পায়। এসব থেকে দূরত্ব বজায় রাখলে আপনি এই সমস্যা থেকে অনেকাংশে মুক্তি পেতে পারেন।
- বর্তমান যুগে অধিকাংশ মানুষ এক জায়গায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকেন। শারীরিক পরিশ্রম ছাড়াই জীবন যাপন করছেন। এতে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট শারীরিক পরিশ্রম বা ব্যায়াম করলে ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
- ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যায় ভুগছেন এমন ব্যক্তিদের পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করতে হবে। এটি শরীর থেকে ইউরিক অ্যাসিড বের করতে অনেকাংষে সাহায্য করে। প্রত্যেকে দিনে কমপক্ষে ২-৩ লিটার জল খান। জলের অভাবে সমস্যা বাড়তে পারে।
- অ্যালকোহল, কফি এবং চিনিযুক্ত পানীয় পান করলে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে যায়। এই জিনিসগুলিতে উপস্থিত উপাদানগুলি ইউরিক অ্যাসিডকে বাড়িয়ে দেয়। এসব থেকে দূরত্ব বজায় রেখে শুধু ইউরিক অ্যাসিডই নয় নিয়ন্ত্রণে থাকবে ডায়াবেটিসও।
- ইউরিক অ্যাসিড দূর করার জন্য আপনাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল ও শাকসবজি খেতে হবে। কমলা লেবু, কিউই, স্ট্রবেরি, ব্রকলি এবং টমেটো খেলে উপকার পাওয়া যাবে।
- এছাড়া পালং শাক, টমেটো ও ঢ্যাঁড়শ বাদ দিন। এগুলিতে থাকে ভরপুর ভিটামিন ও খনিজ। থাকে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট এবং ডায়েটরি ফাইবার। এগুলি বেশি মাত্রায় খেলে রক্তে ইউরিক অ্যাসিড মাত্রা বেড়ে যেতে পারে।
আরও পড়ুন- ডায়াবেটিস, ওজনবৃদ্ধি থেকে ক্যানসারও জব্দ হয় ত্রিফলায়, খালি এভাবে খান