কেউ মোটা হলে তাকে হাসি,ঠাট্টা, বিদ্রুপের শিকার হতে হয়। হাসি ঠাট্টা সহ্য করতে করতে সেই মানুষটি ডিপ্রেশনেও চলে যেতে পারেন। আবার এমনও হয় যে, রসিকতা সহ্য করে অনেকে আবার উদ্বুদ্ধ হয়ে নিজেকে বদলানোর চেষ্টা করেন। সেরকমই একজন যুবক শুভম ঘোষ। তিনি শুধু ৪৮ কেজি ওজনই কমাননি, ওজন কমিয়ে সাব-ইন্সপেক্টরও হয়েছেন। কীভাবে এই অসম্ভবকে সম্ভব করলেন ওই যুবক ? শুভম ঘোষ জানান, তাঁর ওজন একসময় ১২০ কেজি ছিল। আর তা কমিয়ে তিনি ৭২ কেজিতে নিয়ে আসেন।
শুভম ঘোষের কথায়, তিনি খেতে খুব পছন্দ করতেন। সেই কারণে তাঁর ওজন অনেক বেড়ে গিয়েছিল। ২০১৩ সালে যখন তিনি কলেজে ভর্তি হন, তখন তাঁর ওজন প্রায় ১২০ কেজি ছিল। প্রথম বর্ষে ওজন বাড়লেও, অতটা বিচলিত হননি। কলেজের খেলাধুলোতেও অংশ নিতেন। তবে এরপর তিনি সবার হাসি-ঠাট্টার পাত্র হয়ে ওঠেন। এরপর একটি ঘটনা তাঁকে অনুপ্রাণিত করে।
তবে ওজন বেড়ে যাওয়ায় তাঁর কলেজের বন্ধুরা হাসি-ঠাট্টা করতে শুরু করে। খেলাধুলো ভালো করলেও হাসি-মশকরার কারণে তিনি ভেঙে পড়তেন। কলেজে পড়াকালীন তিনি সলমান খানের 'ওয়ান্টেড' সিনেমা দেখতে গিয়েছিলেন। এবং সালমানকে পুলিশ ইউনিফর্মে দেখে খুব অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন।
তাঁর কথায়, 'সিনেমাটি দেখার পর আমি সলমান খানের ভক্ত হয়ে পড়ি। পরদিন থেকেই ভোর ৫টায় উঠতে শুরু করি। আমি আমার কলেজ মাঠের চারপাশে হাঁটতে শুরু করি। সন্ধেবেলাতেও মাঠে পরিশ্রম করতে শুরু করি। তারপর যখন একটু পাতলা হলাম, তখন জিমে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। ধীরে ধীরে আমার ওজন কমতে থাকে এবং ২০১৫ সাল নাগাদ আমার ওজন ৮৪ কেজি হয়। আমার ফিটনেস এমন হয়ে গিয়েছিল যে আমি একবারে ১০০টি পুশআপ করতে পারতাম। তারপর আমি ৬ প্যাক অ্যাবস তৈরি করার সিদ্ধান্ত নিই। এবং তারপর আমি কঠোর পরিশ্রম করতে থাকি এবং তখন আমার ওজন ৭২ কেজি পর্যন্ত হয়।'
তিনি আরও জানান, এখন তাঁর ওজন ৮২ কেজি। তাঁর কথায়, 'এই ওজন কমানোর সিদ্ধান্ত সহজ ছিল না। সেজন্য অনেক পরিশ্রমও করতে হয়েছে। তবে বডি ফিট থাকার কারণে আমি আজ সাব-ইন্সপেক্টর।'
কী কী খেতেন ?
শুভম ঘোষ জানান, নিয়ম করে সকাল ৮ টায় প্রাতরাশ সারতেন। ঠিক বেলা ১২ টায় মধ্যাহ্নভোজন। আর তারপর সন্ধে সাতটায় রাতের খাবার খাওয়া সম্পন্ন করতেন। বিকেলে ওয়ার্ক আউটের পর প্রোটিন পাওডার খেতেন। সকালে খেতেন ৪ পিস ব্রাউন ব্রেড ও ৪টি ডিম। এরপর দুপুরে খেতেন, এক হাতা ব্রাউন রাইস, একবাটি সব্জি ও অলিভ অয়েলে রান্না করা চিকেন। ডিনারে থাকত, ২ টি রুটি, ১৫০ গ্রাম চিকেন।