খাওয়াদাওয়ায় অনিয়ম। তেলমশলাদার খাবার। সারাক্ষণ অফিসে বসে কাজ। পরিশ্রম নেই। চোখের সামনেই বেড়ে চলেছে ওজন। পেটের চারপাশে মেদ জমা দিয়ে শুরু হয় ওজনবৃদ্ধি। দেখতে দেখতে মুখেও জমে নাছোড় মেদ। অতিরিক্ত ওজন শুধু অসুখবিসুখের আঁতুরঘরই নয়, দেহের সৌন্দর্যও নষ্ট করে। ডায়াবেটিস, ক্যানসার, কোলেস্টেরল ও উচ্চ রক্তচাপের মতো গুরুতর অসুখ তো আছেই। তাই নিরোগ থাকতে ওজন কমানো জরুরি।
অতিরিক্ত ওজন ভয়ানক অসুখের দিকে ঠেলে দিতে পারে। শুধু ডায়েট করে কমবে না ওজন। বরং শারীরিক কসরতও দরকার। এবার ভাবছেন হাতে সময় নেই জিম যাওয়ার। জিম যাওয়ার দরকার নেই। ঘরেই কমাতে পারেন ওজন। ঘরে ক্যালোরি বার্ন কীভাবে করবেন? বাজারে নানা ধরনের ওষুধপত্র রয়েছে যা ক্যালোরি বার্ন করার দাবি করে। কিন্তু সেগুলির গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও রয়েছে। যা হিতে বিপরীত হতে পারে। ওজন কমানোর জন্য ক্যালোরি পোড়ানো এবং বিপাক হার বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। পুষ্টিবিদরা বলছেন, যত বেশি শরীর সক্রিয় থাকবে,তত বেশি ক্যালোরি বার্ন হবে। আধ ঘন্টায় ৪০০ থেকে ৫০০ ক্যালোরি পোড়াতে চাইলে কয়েকটি সহজ ব্যায়াম করলেই হবে। সেজন্য জিমে যাওয়ার দরকার নেই।
স্কোয়াট- ওজন কমানো এবং ফিটনেসের জন্য সেরা ব্যায়ামগুলির মধ্যে একটি হল স্কোয়াট। পাতি বাংলায় যাকে বলে ওঠবোস। দেহের সমস্ত প্রধান পেশীকে শক্তিশালী করে তোলে স্কোয়াট। স্থিতিশীলতা বাড়ায়। সেই সঙ্গে প্রচুর ক্যালোরি পোড়ায়। শুরু করুন ৪০টি দিয়ে। তার পর বাড়ান।
জাম্পিং- লাফদড়ি ছোটবেলায় খেলেননি এমন কেউ নেই। লাফদড়ি ক্যালোরি পোড়াতে সাহায্য করে। পা,কোমর, কাঁধ, পেট এবং বাহু থেকে অতিরিক্ত মেদ ছেঁটে দেয়। শরীরকে শক্তিশালী করে। দ্রুত হাঁটার চেয়েও বেশি কার্যকর জাম্পিং। শুরু করুন ১০০টি লাফ দিয়ে। তার পর বাড়ান।
ক্রাঞ্চ- পেটের চর্বি কমানোর জন্য ক্রাঞ্চ অন্যতম সেরা ব্যায়াম। এটি কার্যকর কোর ব্যায়াম। যা আপনার শরীরে সব পেশী, কোমর এবং পেলভিক অঞ্চলকে শক্তিশালী করে । ক্যালোরি পোড়ায়। এটি কমপক্ষে ৩০ বার করুন।
পুশ আপ- পুশ আপ ওজন কমানোর একটি কার্যকর উপায়। পেশীর শক্তি বৃদ্ধি করে। সবচেয়ে বড় কথা হল এর জন্য আপনার কোনও মেশিন বা যন্ত্রপাতি লাগে না। এটি আরও ক্যালোরি পোড়াতেও সহায়ক। শুরু করুন ৪০টি দিয়ে।
আরও পড়ুন- ৩০-র পর ৫ অভ্যাস, রোগবালাই থাকবে দূরে, অটুট যৌবন
যা মাথায় রাখবেন-
ফিটনেস বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রথমে কম করে শুরু করুন এই ব্যায়ামগুলি। শরীরে ব্যথাও হবে। তার পর ধীরে ধীরে সয়ে যাবে। তখন সেটে সংখ্যা বাড়াতে থাকবেন। মানে পুশআপ এক সেটে ৫০টা করলেন। এভাবে ৩টে সেট। সেটাও সয়ে গেলে বাড়িয়ে ৫টা করতে পারেন। সময় কিন্তু একই রাখবেন। শরীর সয়ে গেলে খাটনি আরও বাড়াতে হবে। অনেকে এই ভুলটাই করেন, ভাবেন যে সেট দিয়ে শুরু হয়েছিল সেটাই সারাবছর চালাবেন। এটা করলে প্রথম দিকেই ক্যালোরি খরচ হবে, পরে হবে না। কারণ শরীর ওই কসরতের সঙ্গে সয়ে গিয়েছে।
শরীরের কোনও অংশে সমস্যা থাকলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। অসুবিধা হলে ট্রেনারের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। শুরুতেই তেড়েফুঁড়ে নেমে পড়বেন না।