Nathula New Route: বারবার ধস, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে বিধ্বস্ত হয়েছে শিলিগুড়ি থেকে সিকিমগামী ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক। প্রায় এক বছরের বেশি সময় থেকে এই রাস্তা দারুণভাবে বিপর্যস্ত হয়েছে। কখনও আংশিক, কখনও গোটা রাস্তাই বন্ধ রাখতে হয়েছে। দীর্ঘদিন থেকেই বিকল্প স্থায়ী রাস্তার দাবি ছিল। এবার সেটাই বাস্তবায়িত হতে চলছে। ডুয়ার্স থেকে সরাসরি কালিম্পং হয়ে নতুন রাস্তাটি সিকিম পৌঁছবে। এতে প্রায় ১ ঘণ্টা সময়ও বাঁচবে বলে দাবি নির্মাতাদের।
জলপাইগুড়ি জেলার প্রায় সেবক লাগোয়া বাগ্রাকোট থেকে ইন্দো-চিন সীমান্তের নাথু লা (Nathu La) পর্যন্ত বিকল্প জাতীয় সড়কের নির্মাণকাজ প্রায় শেষের পথে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে চলতি বছরেই সড়কটি চালু হয়ে যেতে পারে বলে ন্যাশনাল হাইওয়ে ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেড (এনএইচআইডিসিএল) সূত্রের খবর। এই রাস্তাটি চালু হলে সড়কপথে নাথুলা আরও সহজে যাওয়া যাবে। এতে পর্যটকদের সুবিধা তো হবেই, পাশাপাশি সেনাবাহিনীর জন্য দারুণ কার্যকর হবে এই রাস্তা।
৪ হাজার কোটি টাকা খরচ
কেন্দ্রীয় ভূতল পরিবহণমন্ত্রকের উদ্যোগে ভারতমালা পরিযোজনায় ৪ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে এই সড়ক তৈরির কাজ শুরু হয় ২০২০ সালে। তৈরি হচ্ছে দু-লেনের ১০ মিটার চওড়া রাস্তা। যার জাতীয় সড়ক নম্বর ৭১৭ এ এবং ৭১৭ বি জাতীয় সড়ক। বাগ্রাকোট থেকে পেডং পর্যন্ত রাস্তার কাজ এগিয়েছে অনেকটাই। তৈরি হচ্ছে ৭ টি ভায়াডাক্ট ও একাধিক লুপ। লুপ ও ভায়াডাক্টগুলো এমনভাবে তৈরি করা হচ্ছে যে, ১৩ কিলোমিটার পাহাড়ি পথ ওঠার পর ১ কিলোমিটার দূরত্বে কোনও গাড়ি আছে কি না তা স্পষ্ট দেখা যাবে।
সম্পূ্র্ণ রুটটি কী?
শিলিগুড়ি থেকে গেলে সেবক হয়ে ডুয়ার্সের রাস্তায় যেতে হবে। ওদলাবাড়ির আগে বাঁহাতে ছোট্ট জনপদ বাগ্রাকোট থেকে শুরু হয়ে ৭১৭-এ জাতীয় সড়ক পেডং পেরিয়ে পূর্ব সিকিমের ঋষি সীমান্ত পর্যন্ত যাবে। তারপর রেনক-রোরেথাঙ, পাকিয়ং, রানিপুল হয়ে উত্তর সিকিমের মেনলা পর্যন্ত এগিয়ে যাবে ৭১৭ বি জাতীয় সড়ক। মেনলা থেকে ৩১০ নম্বর জাতীয় সড়কের সঙ্গে জুড়ে নাথু লা পৌঁছাবে সড়কটি। বর্তমানে এনএইচ-১০ ধরেও রানিপুল হয়ে নাথু লা যাওয়া যায়। তবে বর্ষায় ধস ও দুর্যোগের কারণে মাঝে মাঝেই ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক বন্ধ হয়ে যায়। বিকল্প রাস্তা থাকলে সমস্যা কম হবে।
সিকিম যোগাযোগে নয়া দিগন্ত
সিকিমের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগে বিকল্প পথ হিসেবে ব্যবহারের পাশাপাশি নতুন এই সড়কটি এ রাজ্যের দুই জেলা বিশেষ করে কালিম্পং ও জলপাইগুড়ির পর্যটন প্রসারেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে চলেছে বলে আশাবাদী পর্যটন বিশেষজ্ঞরা। বাগ্রাকোট, চুইখিম, বরবট, নিমবঙ, কাফেরগাঁও, লাভা, পেডং হয়ে সিকিম সীমান্তের রেসি পর্যন্ত এলাকাগুলোর আর্থসামাজিক চালচিত্র বদলে যাবে বলে মনে করছেন তাঁরা। এই রাস্তার কাজের প্রোজেক্ট ম্যানেজার প্রতাপ শর্মা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন বাগ্রাকোট থেকে রেসি পর্যন্ত সড়ক এ বছরই চালু হয়ে যেতে পারে।