Advertisement

Most Visited Place In North Bengal: সারাবছরই পর্যটকদের ভিড়, ২০২৩ সালে উত্তরবঙ্গ-ভ্রমণের সেরা ১০ জায়গা

Most Visited Place In North Bengal: দার্জিলিংয়ের হেরিটেজ টয়ট্রেন হোক কিংবা জলদাপাড়া-গরুমারার জঙ্গলের একশৃঙ্গ গণ্ডার। অমোঘ টানে ছুটে আসেন টুরিস্টরা। ২০২৩ সালেও তার ব্যাতিক্রম হয়নি। করোনার কয়েক বছর একটু ভাঁটা পড়লেও আবার স্বমহিমায় উত্তরবঙ্গের পর্যটন। আসুন আমরা জেনে নিই, এ বছর পর্যটকদের পছন্দের নিরিখে উত্তরের সেরা দশটি পর্যটন কেন্দ্র। যা এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি পর্যটকরা গিয়েছেন।

সারাবছরই পর্যটকদের ভিড়, ২০২৩ সালে উত্তরবঙ্গ-ভ্রমণের সেরা ১০ জায়গাসারাবছরই পর্যটকদের ভিড়, ২০২৩ সালে উত্তরবঙ্গ-ভ্রমণের সেরা ১০ জায়গা
সংগ্রাম সিংহরায়
  • শিলিগুড়ি,
  • 24 Dec 2023,
  • अपडेटेड 7:51 PM IST

Most Visited Place In North Bengal: বাঙালির পায়ের তলায় সর্ষে। তবে সর্ষে থাকলেই তো হবে না, তা গড়ানোর জন্য রেস্তো চাই। তাই হিল্লি-দিল্লির চেয়ে হাতের কাছে রাজ্যেরই উত্তরে যখন রয়েছে সৌন্দর্য ও পর্যটনের খনি, তখন তা এক্সপ্লোর না করে কোন পাগল। তাছাড়া উত্তরবঙ্গের পাহাড়ে-জঙ্গলের খ্যাতি বিশ্বজোড়া। যা দেখতে ছুটে আসেন দেশ-বিদেশের পর্যটকরাও। তা সে দার্জিলিংয়ের হেরিটেজ টয়ট্রেন হোক কিংবা জলদাপাড়া-গরুমারার জঙ্গলের একশৃঙ্গ গণ্ডার। অমোঘ টানে ছুটে আসেন টুরিস্টরা। ২০২৩ সালেও তার ব্যাতিক্রম হয়নি। করোনার কয়েক বছর একটু ভাঁটা পড়লেও আবার স্বমহিমায় উত্তরবঙ্গের পর্যটন। আসুন আমরা জেনে নিই, এ বছর পর্যটকদের পছন্দের নিরিখে উত্তরের সেরা দশটি পর্যটন কেন্দ্র। যা এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি পর্যটকরা গিয়েছেন।

দার্জিলিং (Darjeeling)

স্বাভাবিকভাবেই যুগ-যুগান্তর ধরে পয়লা নম্বর পছন্দের জায়গা ধরে রেখেছে সেই চিরচেনা অথচ চির আকর্ষণের দার্জিলিং। দার্জিলিংয়ের টয়ট্রেন, ঘুমের বাতাসিয়া লুপ, চিড়িয়াখানা, রোপওয়ে ও আশপাশের সৌন্দর্য নিয়ে এখনও বাঙালির সেরার তালিকায় শীর্ষস্থানে দার্জিলিং।

কালিম্পং (Kalimpong)

কালিম্পংও পছন্দের তালিকায় রয়েছে। কালিম্পং শহর ও তাকে কেন্দ্র করে আশপাশের একাধিক জায়গায় ঘুরে বেড়িয়েছেন পর্যটকরা। কালিম্পংয়ের সবচেয়ে উঁচু জায়গা ডেলোতে গিয়েছেন প্রচুর মানুষ। এছাড়া আশপাশের বৌদ্ধ মনেস্ট্রি ও নানা গুম্ফা রয়েছে কালিম্পংয়ের আশপাশে। সেগুলিতেও ভিড় জমিয়েছেন পর্যটকরা।

পেডং (Pedong)

কালিম্পং থেকে আলগরা হয়ে যেতে হয় পেডং। উচ্চতা চার হাজার ফুটের কিছু বেশি। সিকিমের বর্ডারে অবস্থিত উত্তরবঙ্গের এই ছোট্ট জনপদ কালিম্পং জেলার অন্তর্গত। ঐতিহাসিক দিক থেকে এর গুরুত্ব অসীম। প্রাচীন সিল্ক রুট যাওয়ার একটি পথ গিয়েছে পেডং হয়ে। তাছাড়াও এখানে খ্রিস্টান ও বৌদ্ধধর্মের প্রচার ও প্রসার ঘিরে তৈরি হয়েছে গুম্ফা, গির্জা ইত্যাদি। ভারতে প্রথম চা উৎপাদনের সঙ্গেও জড়িয়ে পেডং-এর নাম।

লাভা (Lava)

কুয়াশা ও মেঘে ঢাকা পাইন গাছে ঘেরা এই ছোট্ট গ্রামটি কালিম্পং থেকে ৩৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। ভূটানের সঙ্গে বাণিজ্যের পুরনো পথের মধ্যে অবস্থিত গ্রামটি রয়েছে ২৩৫০ মিটার উচ্চতায়। এখানে একটি বৌদ্ধ মন্দির ও প্রকৃতি পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে। প্রকৃতি উপভোগ ও পাখি দেখার জন্য বিখ্যাত লাভা, নেওরাভ্যালি ন্যাশনাল পার্কে ওঠার শুরুও। শিলিগুড়ি থেকে সেবক ব্রিজ পেরিয়ে ডামডিম-গরুবাথান হয়েও আসা যায় লাভা। এটিও বিগত এক দশকে বাঙালির পছন্দের তালিকায় নাম লিখিয়েছে।

Advertisement

মিরিক (Mirik)

শিলিগুড়ি থেকে ৫২ কিমি বা দার্জিলিং থেকে ৪৯ কিমি পথ পাড়ি দিয়ে সহজেই পৌঁছে যাওয়া যায় ৪৯০৫ ফুট উচ্চতার মিরিকে। মিরিকের মূল আকর্ষণ সুমেন্দু লেক। কী শীত, কী গ্রীষ্ম, রোদে গা দিয়ে হ্রদের ধারে সারাটা দিন কাটিয়ে দেওয়া যায়। এখানকার উচ্চতম স্থান বোকার মোনাসটেরি হ্রদের পশ্চিম পাড়ে আছে সিংহ দেবী মন্দির। দার্জিলিং থেকে মিরিক যাওয়ার আরও এক আকর্ষণ নেপালের পশুপতি মার্কেট দেখা। দার্জিলিং-মিরিক পথটি কিছুটা নেপাল সীমান্ত ছুঁয়ে গেছে। সেই সুযোগে প্রায় সব পর্যটক নেপালের ভিতর ঢুকে ৩-৪ কিমি গিয়ে দেখে আসেন সস্তার বাজার পশুপতি মার্কেট। মিরিক বরাবরই পছন্দের পর্যটকদের কাছে।

লামাহাটা (Lamahatta)

দার্জিলিং থেকে ২১ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত একটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা একটি ছোট গ্রাম হল এই লামাহাট্টা। লামাহাটা উচ্চতা প্রায় ৫৭০০ ফিট মুলত শেরপা , ভুটিয়া তামাং ও বিভিন্ন পাহাড়ি জাতির লোকেদের নিয়ে গড়ে উঠেছে এই গ্রামটি ।লামা কথার অর্থ হল বৌদ্ধ ভিক্ষু এবং হাট্টা কথার অর্থ হল বাসস্থান অর্থাৎ এই লামাহাটা শব্দটির অর্থ হলো যেখানে বৌদ্ধরা বাস করেন, ভারতিয় সরকার তিব্বতিয় লামাদের বসবাস করার জন্য এই জাইগাটি নির্বাচন করেছিলেন সেই জন্নই এখানকার নাম লামাহাট্টা। লামাহাটা গ্রামটির মূল আকর্ষণ হল এখানকার লামাহাটা পার্ক। যেটি ২০১২ সালে আমাদের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উদ্বোধন করেন। তারপর থেকেই এর আকর্ষণ ও টুরিস্ট আনাগোনা বেড়েছে।

লোলেগাঁও (Lolegaon)

কালিম্পং-এর একটি ছোট্ট, শান্ত গ্রাম হল লোলেগাঁও। এটি অপূর্ব সুন্দর । ঘন সবুজ অরণ্য এবং শান্ত উপত্যকার লোলেগাঁওকে প্রকৃতি অকৃপণ হাতে দান করেছে। ভোরের কুয়াশায় মাঝে দাঁড়িয়ে থাকা কাঞ্চনজঙ্ঘা পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয়। কালিম্পং ও লাভা থেকে পাইনের জঙ্গলে ঘেরা আঁকাবাঁকা পথ ধরে লোলেগাঁও যেতে এক ঘণ্টা সময় লাগে। লাভার সঙ্গে সকলে একই রুটে থাকা এই জনপদ ঘুরে যান। পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্র এই জায়গা।

সান্দাকফু-ফালুট (Sandakphu-Phalut)

সান্দাকফু শৃঙ্গটি ৩৬৩৬ মিটার (১১৯৪১ ফুট উঁচু)। এটি পশ্চিমবঙ্গের উচ্চতম শৃঙ্গ। দার্জিলিঙের সিঙ্গালিলা জাতীয় উদ্যানের ধারে পশ্চিমবঙ্গ-নেপাল সীমান্তের এই শৃঙ্গ সিঙ্গালিলা পাহাড়ের সবচেয়ে উঁচু বিন্দু। সান্দাকফু শৃঙ্গে একটি ছোট গ্রাম আছে, সেখানে কয়েকটি হস্টেলও রয়েছে। এভারেস্ট, কাঞ্চনজঙ্ঘা, লোৎসে এবং মাকালু -- পৃথিবীর পাঁচটি সবচেয়ে উঁচু শৃঙ্গের চারটিই সান্দাকফু থেকে দেখা যায়। সান্দাকফুতে বছরের অর্ধেক সময় বরফ থাকে। ফালুটও একই রুটে। যাঁরা যান একবারে দুটি জায়গা দেখে আসেন। পর্যটকদের পছন্দের তালিকায় উপরের দিকে রয়েছে এটিও।

গরুমারা (Gorumara)

উত্তরের জঙ্গলের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় গরুমারা। একাধিক পয়েন্ট থেকে এটি ঘুরতে পারা যায়। তাই পর্যটকরা পছন্দ করেন গরুমারা জঙ্গলে ঘুরতে। ভারতীয় একশৃঙ্গ গন্ডার, বাইসন আর হাতির জন্য গরুমারা অভয়ারণ্য বিখ্যাত। বহেড়া, কাটুস, শিমুল, শিরীষ, জাম, লালি গাছে ছাওয়া সবুজ অরণ্য ছড়িয়ে আছে প্রায় ৮০ বর্গ কিমি জায়গা জুড়ে। ১৯৭৬ সালে অভয়ারণ্যের স্বীকৃতি পায় গরুমারা। ১৯৯৪ সালে পায় জাতীয় উদ্যানের শিরোপা।

বেঙ্গল সাফারি পার্ক (Bengal Safari Park)

সবচেয়ে নতুন সংযোজন হলেও শিলিগুড়ির বেঙ্গল সাফারি পার্ক ক্রমশ পর্যটক টানার নিরিখে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। একটি সাফারি পার্ক যেখানে বাঘ, ভাল্লুক, গণ্ডার, হাতি থেকে শুরু করে দেশে পাওয়া সব রকম জন্তু জানোয়ার ও পাখি রয়েছে। উইক এন্ড ডেস্টিনেশন হিসেবে এই জায়গায় গত ৪-৫ বছরে ক্রমশ জনপ্রিয় হচ্ছে। এই ধরণের সাফারি ভারতে খুব একটা বেশি নেই। তাই স্থানীয় ও দেশি পর্যটকদের পাশাপাশি বিদেশী পর্যটকদের কাছেও দারুণ জনপ্রিয় এই পর্যটন কেন্দ্র।

Advertisement

(বিভিন্ন ওয়েব ও পর্যটন স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে কথা বলে এই প্রতিবেদন তৈরি করা)

 

Read more!
Advertisement
Advertisement