শহুরে যুদ্ধে স্বল্প বা মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের প্রয়োজন হয়। এই ধরনের ক্ষেপনাস্ত্রের অভাবেই ইউক্রেনের অনেক ক্ষতি হয়েছে। তারা রাশিয়ার আক্রমণের উপযুক্ত জবাব দিতে পারেনি। কিন্তু ইউক্রেনের মতো পরিস্থিতি যদি ভারতের হয়, তাহলে কী হবে? উত্তর হল ভারত তাহলে জবাব দিতে প্রস্তুত। কারণ, ভারতের কাছে এই ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে। গত ২৭ মার্চ ওড়িশার বালাসোরে ইন্টিগ্রেটেড রেঞ্জ থেকে এই জাতীয় দুটি ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা হয়েছে। (ছবি : DRDO)
ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (DRDO) সফলভাবে মাঝারি রেঞ্জের সারফেস থেকে এয়ার মিসাইল - MRSAM-এর সফল পরীক্ষা করেছে। এই ক্ষেপণাস্ত্রটি তার লক্ষ্যবস্তুকে ধ্বংস করেছে। (ছবি: DRDO)
DRDO ভারতীয় সেনাবাহিনীর জন্য তৈরি MRSAM ক্ষেপণাস্ত্রের লাইভ ফায়ারিং ট্রায়াল করেছে। এই ক্ষেপণাস্ত্রের প্রচণ্ড গতিতে আকাশের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে। পরীক্ষার সময় দেখা গেছে, ক্ষেপণাস্ত্রটি উৎক্ষেপণের সঙ্গে সঙ্গেই তার লক্ষ্য চিনতে পেরেছে। (ছবি: DRDO)
MRSAM ক্ষেপণাস্ত্রটি ইসরাইল অ্যারোস্পেস ইন্ডাস্ট্রির সহযোগিতায় DRDO দ্বারা তৈরি করা হয়েছে। এই মিসাইল সিস্টেমে মাল্টি-ফাংশন রাডার, মোবাইল লঞ্চার এবং অন্য সামরিক সরঞ্জাম এবং যানবাহন রয়েছে। ইসরায়েল থেকে আসা ভারতের বারাক মিসাইলও MRSAM। সারফেস টু এয়ার মিসাইল (SAM) আর্মি ওয়েপন সিস্টেম কমান্ড পোস্ট, মাল্টি-ফাংশন রাডার, মোবাইল লঞ্চার সিস্টেম নিয়ে গঠিত। এটি ইসরায়েলের বিপজ্জনক ক্ষেপণাস্ত্র বারাক-৪ এর উপর ভিত্তি করে তৈরি। (ছবি: উইকিপিডিয়া)
MRSAM এর ওজন প্রায় ২৭৫ কেজি। দৈর্ঘ্য ৪.৫ মিটার এবং ব্যাস 0.৪৫ মিটার। এই ক্ষেপণাস্ত্রে ৬০ কেজি ওয়ারহেড অর্থাৎ অস্ত্র লোড করা যাবে। এটি একটি দ্বি-পর্যায়ের ক্ষেপণাস্ত্র, যা উৎক্ষেপণের পর কম ধোঁয়া নির্গত করে। একবার চালু হলে, MRSAM সরাসরি আকাশে ১৬ কিমি পর্যন্ত একটি লক্ষ্যকে আঘাত করতে পারে। যাইহোক, এর পরিসীমা আধা কিলোমিটার থেকে ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত। অর্থাৎ এই রেঞ্জে আসা শত্রুর যান, বিমান, ড্রোন বা মিসাইল ধ্বংস করা যাবে। (ছবি: DRDO)
MRSAM মিসাইলের নতুন বিশেষত্ব হল এর রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি সিকার। অর্থাৎ শত্রুর বাহন শুধুমাত্র রেডিওকে ফাঁকি দেওয়ার জন্য ব্যবহার করলেও তা মেরে ফেলবে। এর গতি প্রতি সেকেন্ডে ৬৮০ মিটার অর্থাৎ ঘণ্টায় ২৪৪৮ কিলোমিটার। (ছবি: DRDO)
ভারত ইসরায়েলের কাছ থেকে MRSAM মিসাইলের পাঁচটি রেজিমেন্ট কেনার কথা বলেছিল। এতে 40টি লঞ্চার এবং ২০০টি ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে। প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকার চুক্তি হয়েছিল। এই ক্ষেপণাস্ত্র ভারতকে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে আরও শক্তিশালী করেছে। (ছবি: DRDO)
বিশাখাপত্তনম গাইডেড মিসাইল ডেস্ট্রয়ার ৩২টি অ্যান্টি-এয়ার বারাক মিসাইল মোতায়েন করতে পারে। যার রেঞ্জ ১০০ কিমি। বা বারাক 8ER ক্ষেপণাস্ত্রও মোতায়েন করা যেতে পারে, যার রেঞ্জ ১৫০ কিলোমিটার। এটিতে ১৬টি অ্যান্টি-শিপ বা ল্যান্ড অ্যাটাক ব্রহ্মোস মিসাইল লাগানো যেতে পারে। অর্থাৎ এই দুটি ক্ষেপণাস্ত্রের হামলায় ভেঙে পড়বে শত্রুর জাহাজ ও বিমানে। (ছবি: উইকিপিডিয়া)