শিক্ষাক্ষেত্রে ডিগ্রির শেষ নেই। বর্তমানে এডুকেশন ডাটা নিয়ে পিএইচডি করার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন মালদা শহরের ছাত্রী ব্রততী পন্ডিত। কিন্তু বাবা সুকুমার পন্ডিত মালদা শহরের একজন নামকরা মৃৎশিল্পী।
তাই শিক্ষা গ্রহণের পাশাপাশি বাবার সঙ্গে দুর্গা প্রতিমা তৈরিতে হাত লাগিয়েছেন, পিএইচডি প্রস্তুতি নেওয়া ছাত্রী ব্রততী পন্ডিত। মালদা শহরের হাটখোলা ঘোষপাড়া এলাকার বাসিন্দা ব্রততী। এবার শহরের একটি নামকরা ক্লাবের দুর্গা প্রতিমা তৈরি গড়ছেন। তার বাবার হাত ধরেই ছাত্রী ব্রততী পণ্ডিতের আধুনিক থিমের সেই প্রতিমা তৈরি করছেন।
দেখে রীতিমত হতবাক হয়ে গিয়েছেন পাড়া-প্রতিবেশী থেকে তার বন্ধুরাও । ব্রততীর হাতে তৈরি হওয়া দেবী দুর্গার ছবি এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। বিভিন্ন স্তর থেকে ওই ছাত্রী প্রশংসাই ঝড় সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্রমাগত বয়ে চলছে।
পন্ডিত পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে ব্রততী পন্ডিত স্টার মার্কস নিয়ে ২০১২ এবং ২০১৪ সালে পাশ করেন । এরপর ২০১৭ সালে ইউনিভারসিটি অফ গৌড়বঙ্গ থেকে এডুকেশন অনার্স নিয়ে পাস আউট হন। পরবর্তীতে ২০১৯ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এডুকেশনে পিজি কোর্স সম্পূর্ণ করেন ছাত্রী ব্রততী পন্ডিত ।
২০২০ সালে এডুকেশন নিয়ে নিট পরীক্ষায় সাফল্য অর্জন করেন তিনি। একই বছর ওয়েস্ট বেঙ্গল কলেজ সার্ভিস কমিশনের অন্তর্গত এডুকেশন বিষয়ে পাশ করেন। তারপরে ২০২১ সালে বি-এড কোর্স সম্পন্ন করেন। পাশাপাশি কম্পিউটার ডিপ্লোমায় টেকনোলজি বিষয়ক বিভাগে রাজ্যের মধ্যে ভালো ফলাফল করেন ওই ছাত্রী।
বর্তমানে এডুকেশন ডাটার উপর তিনি পিএইচডি করার প্রস্তুতি নিয়েছেন । কিন্তু শিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে যতই সাফল্য আসুক না কেন, বংশের ঐতিহ্য ধরে রাখতে পন্ডিত পরিবারের একমাত্র মেয়ে ব্রততী এখন তার বাবা মৃৎশিল্পী সুকুমার পন্ডিতের সঙ্গে প্রতিমা তৈরীতে হাত লাগিয়েছেন।
দুর্গা প্রতিমা তৈরীর জন্য মাটির প্রলেপ থেকে রং করার ক্ষেত্রে ছাত্রী ব্রততী পন্ডিত এখন বাবার সঙ্গে কাজ শিখে রীতিমতো দক্ষতা হাসিল করেছেন। আর তার এই কাজে রীতিমতো পন্ডিত পরিবার গর্ব বোধ করছেন।
ছাত্রী ব্রততী পন্ডিত বলেন, বাবাকে দেখেই আমি প্রতিমা তৈরির কাজ শিখেছি । শিক্ষাক্ষেত্রে এখন পিএইচডি করার প্রস্তুতি নিচ্ছি। কিন্তু বংশের প্রাচীন এই ঐতিহ্যকে কীভাবে ভুলে যাব। বাবাকে দেখেছি কিভাবে উনি কঠোর পরিশ্রম করে প্রতিমা তৈরি করতেন। বাবার সাথেই প্রতিমা করার কাজ শিখেছি।
যতটুকু পারছি দুর্গা প্রতিমা তৈরি করে বাবার পরিশ্রমের মাত্রা কমানোর চেষ্টা করছি। আগামীতে পিএইচডিতে সাফল্য পেলে অধ্যাপিকা হওয়ার কথা জানিয়েছেন কৃতী ওই ছাত্রী ব্রততী পন্ডিত। ওই ছাত্রী প্রতিমা তৈরীর কাজ দেখে মালদার অনেক বিশিষ্ট মৃৎশিল্পীরা প্রশংসার পাশাপাশি সাধুবাদ জানিয়েছেন।