মহাসপ্তমীতে কলা বউ স্নানের পর মায়ের ভোগ নিবেদন। গোটা রাজ্য জুড়ে আপামর বাঙালিরা মেতে উঠেছে দুর্গাপুজোর আনন্দে।
তবে দার্জিলিং জেলার পাহাড় ও সমতল মেতে ওঠে অন্য উৎসবে। ফুলপাতি উৎসবে। এই উৎসব নেপালি সম্প্রদায়ের কাছে অন্যতম বড় উৎসব।
নিজস্ব পোশাকে নিজেদের সংস্কৃতি তুলে ধরে নেপালি সম্প্রদায়ের মানুষ। নেপালি বাদ্যযন্ত্র নিয়ে বেরিয়ে পড়েন তাঁরা। গোটা রাস্তা ধরে চলে গান।
কি এই ফুলপাতি উৎসব? ফুলের ডালা পালকির আদলে নিয়ে শোভাযাত্রা। সেই ডালাতেই ফুল নিবেদন করেন সাধারন মানুষ। সংগৃহীত ফুল দেবী দুর্গার চরণে নিবেদন করা হয়।
প্রতি বছরই ঘটা করে ফুলপাতি উৎসবে মতে উঠে দার্জিলিং ও কালিম্পঙবাসী। মূলত এই ফুলপাতির শোভাযাত্রা বের হয় পাহাড় থেকে সমতলের শিলিগুড়িতেও।
শিলিগুড়িতে প্রচুর নেপালি ভাষাভাষী লোক বাস করেন। বিশেষ করে প্রধাননগর, গুরুংবস্তি, চম্পাসারি, শালবাড়ি, সুকনা এলাকায় এই উৎসবের রেশ ছিল বেশি।
এছাড়াও অংশ নেন শোভাযাত্রায় নেপালি ছাড়াও অন্যান্য সম্প্রদায়ের প্রচুর মানুষ। মূলত পাহাড় ও সমতলের মধ্যে ঐক্য, সম্প্রীতি অটুট রাখার আহ্বানও জানানো হয় এই শোভাযাত্রা থেকে।
একই ভাবে এ বছরও শিলিগুড়ি সহ পাহাড়ের দার্জিলিং ও কালিম্পঙে এই ফুলপাতি শোভাযাত্রা আয়োজন করা হয়।
বাঘাযতীন কলোনি থেকে শোভাযাত্রা বের হয়ে হিলকার্ট রোড পরিভ্রমণ করে। ঘোড়ার গাড়িও অংশ নেয় এই শোভাযাত্রায়।
নেপালি সম্প্রদায়ের লোকেরা নিজেদের বাদ্য যন্ত্র বাজিয়ে নিজস্ব সংস্কৃতি তুলে ধরে। অনেকে মাঝ রাস্তায় উৎসবের শোভাযাত্রার সঙ্গে পা মেলান।
সেই সঙ্গে মহিলারা নেপালি গানের তালে নৃত্যও পরিবেশন করেন। হিলকার্ট রোড ধরে হাসমিচক ছুঁয়ে রঙিন শোভাযাত্রা শেষ হয় বাঘাযতীন কলোনিতেই।
তবে এবারে করোনা আবহেরা কারণে অন্যান্য বারের তুলনায় শিলিগুড়িতে শোভাযাত্রায় জৌলুসও কম ছিল। তবে এটা সময়ের দাবি বলেই মেনে নিয়েছেন তাঁরা।
শিলিগুড়ি সমতলে এবার দুর্গাপুজোর জৌলুস যেমন কম, তেমনই অন্যান্য ধর্মীয় উৎসবেও তেমন উচ্ছ্বাস নেই। তবু তার মধ্যেই নিয়ম মেনেই চলছে বছরকার অনুষ্ঠান।