ভারতের জাতীয় প্রতীক অশোক স্তম্ভ নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে। নয়া সংসদ ভবনে সাড়ে ৯ হাজার কেজি ব্রোঞ্জের অশোক স্তম্ভে সিংহের মুখের আদল বদলের ঘটনায় দেশজুড়ে চর্চা চলছে। কারণ, যে সারনাথের অশোক স্তম্ভের আদলে ভারতের জাতীয় প্রতীক তৈরি করা হয়েছিল, সেই সিংহ অনেক শান্ত। কংগ্রেসের অভিযোগ, কেন্দ্র অশোক স্তম্ভের অপমান করছে।
আলিপুর চিড়িয়াখানা গিয়েছিলেন টানা ৩ মাস
এই বিবাদ-বিতর্কের মধ্যেই মূল অশোক স্তম্ভ প্রতীকে যিনি ডিজাইন করেছিলেন, সেই দীনানাথ ভার্গবের পরিবার জানালেন, অশোক স্তম্ভ ডিজাইনের আগে টানা ৩ মাস দীনানাথ কলকাতায় আলিপুর চিড়িয়াখানায় যেতেন নিয়মিত, সিংহের মুখের গঠন দেখতে।
ভারতীয় সংবিধানের পাণ্ডুলিপিতে লাগানো জাতীয় প্রতীকের ডিজাইন যে টিম করেছিল, সেই দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন দীনানাথ ভার্গব। ১৯০৫ সালে সারনাথে খননকার্যের সময় আসল অশোক স্তম্ভটি মিলেছিল। যার উচ্চতা ছিল ৭ ফুট। সেটি আপাতত সারনাথে মিউজিয়ামে রাখা আছে।
আরও পড়ুন: নয়া সংসদ ভবনের অশোক স্তম্ভে আপত্তি TMC-র, পরিবর্তনের দাবি
দায়িত্ব দেওয়া হল শান্তিনিকেতনের নন্দলাল বসুকে
দীনানাথ ভার্গবের স্ত্রী প্রভা জানান, 'ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু সংবিধানের মূল পাণ্ডলিপির ডিজাইনের দায়িত্ব দিয়েছিলেন শান্তিনিকেতনের কলা ভবনের তত্কালীন প্রিন্সিপাল শিল্পী নন্দলাল বসুকে। নন্দলাল বসু স্তম্ভের ডিজাইনের জন্য বেছে নেন আমার স্বামীকেও। উনি তখন কলাভবনের ছাত্র। গুরুর নির্দেশে আমার স্বামী কলকাতায় টানা ৩ মাস নিয়মিত চিড়িয়াখানায় সিংহ দেখতে যান। কীভাবে সিংহ দাঁড়ায়, গম্ভীর মুখে কী ভাবে চেয়ে থাকে, সব কিছু ভাল করে লক্ষ্য করেন।'
অশোক স্তম্ভের মূল কলাকৃতী ভার্গব পরিবারের কাছে এখনও আছে। দীনানাথ ভার্গবের ডিজাইন করা অশোক স্তম্ভের নীচে লেখা 'সত্যমেব জয়তে'।
দীনানাথের পুত্রবধূর দাবি, যে কোনও মূর্তি একটু আধটু বদল অস্বাভাবিক নয়।