WB Forest Turtle: পরিচিতের বাড়িতে দেখেছিল সংরক্ষিত কচ্ছপ। আর তা বন দফতরের হাতে তুলে দিলেন এক কলেজ পড়ুয়া। তাঁর এই কাজের প্রশংসা করেছে প্রকৃতি-পরিবেশপ্রেমীরা। উত্তর ২৪ পরগণা জেলার বনগাঁর ঘটনা।
মাছের দোকান থেকে কিনেছিলেন
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মাছের দোকান থেকে বিদেশি রেড ইয়ার্ড স্লাইডার ভেবে এক জোড়া ইন্ডিয়ান রুফ্ড টার্টল কিনে এনেছিলেন বনগাঁর এক মহিলা। সেই বাড়িতে কচ্ছপগুলো বিদেশি পরিচয়ে ছিলও বহাল তবিয়তে। কিন্তু কে-ই বা জানত যে তারা আবার নিজেদের বাসস্থানে ফিরে যাবার সুযোগ পাবে!
প্রশ্ন জাগে মনে
এই প্রাণীগুলোর মুক্তির সূত্রপাত নীলেশ রায়ের হাত ধরে। দিন কয়েক আগে নীলেশ তাঁর এক পরিচিতের বাড়ি গিয়েছিলেন। তখন তিনি ওই কচ্ছপ দু'টোকে দেখেন। সেগুলো দেখে তাঁর ইন্ডিয়ান রুফ্ড টার্টল মনে হয়। নিশ্চিত হওয়ার জন্য নীলেশ ছবি পাঠান প্রকৃতি সংরক্ষণ নিয়ে কাজ করা এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কাছে।
সহায়তায় বন দফতর
এরা দেশি কচ্ছপ নিশ্চিত হওয়ার পর নীলেশ নিজেই কচ্ছপগুলো বন দফতরের কাছে হস্তান্তরের জন্য ইচ্ছাপ্রকাশ করেন। তখন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা বন্ডিং অ্যানিম্যালস উইথ নেচার (বন)-এর পক্ষ থেকে রাজ্য বন দফতরের বনগাঁ রেঞ্জের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।
আরও পড়ুন: বিয়ের প্রথম দিন থেকেই মহিলাদের এই ৮ ভুল নয়, নইলে পরে আফশোস
আরও পড়ুন: রুশ স্পেস স্টেশন ভাঙার 'হাড় হিম' Video! ভারতে ভেঙে পড়তে পারে?
আরও পড়ুন: ভারতে উচ্চশিক্ষার সুযোগ বেড়েছে মেয়েদের: সমীক্ষা
এবং এই কচ্ছপ হস্তান্তরের প্রক্রিয়া শুরু করা হয়। অবশেষে মঙ্গলবার বনগাঁ রেঞ্জ অফিসে গিয়ে তা তুলে দেওয়া হয়। বন দফতর জানিয়েছে, এদের উপযুক্ত প্রাকৃতিক বাসস্থানে মুক্ত করা হবে।
রেড ইয়ার্ড স্লাইডার মূলত আমেরিকার একটি কচ্ছপের প্রজাতি। তাই ভারতীয় বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ আইনে এটা তপশীলভুক্ত নয়। পোষ্য হিসেবে এটার কেনা-বেচার ওপর বিশেষ কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই। তাই পোষ্য হিসেবে অনেকেই এটি রাখেন। তবে যেহেতু এরা ভারতীয় প্রজাতি নয়, তাই প্রকৃতিতে এদের মুক্ত করা যায় না।
ইন্ডিয়ান রুফ্ড টার্টল বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ আইনের তফশিল ১-এর অন্তর্ভুক্ত। মূলত উত্তরবঙ্গ ও অসমে এর দেখা মেলে। আইইউসিএন (IUCN) রেড লিস্টে এরা সংকটাপন্ন (Vulnerable) হিসেবে নথিবদ্ধ। এই কচ্ছপ রাখা, কেনা, বেচা অপরাধ।
স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা জানাচ্ছে
বনগাঁর ওই যুবক যেভাবে নিজে থেকে এগিয়ে এসে সেগুলোর মুক্ত করার উদিযোগ নিয়েছিলেন। বন্ডিং অ্যানিম্যালস উইথ নেচার (বন)-এর সহকারী সম্পাদক কিংশুক মণ্ডল দাবি করেন, "এরকম কচ্ছপ পোষা বেআইনি জেনেও অনেকে লুকিয়ে-চুরিয়ে পোষেন।" তিনি বলেন, "উনি জানার পর সেগুলো আবার প্রকৃতিতে ফেরানোর পদক্ষেপ করেছেন। তার জন্য ওই যুবককে কুর্নিশ জানাই। এভাবেই সবাই এগিয়ে এলে প্রকৃতি সংরক্ষণের লড়াই আরও জোরদার হবে।"