Advertisement

Kolkata-Salt lake-Newtown waterlogging: কলকাতা না হয় প্রাচীন, হালে তৈরি সল্টলেক-নিউটাউনেও জল জমে কেন?

অভিযোগ, শুধু পূর্ব কলকাতার জলাভূমি নয়, গোটা শহর জুড়েই পুকুর ও জলাশয় বুজিয়ে বাড়িঘর তৈরি হচ্ছে। কলকাতা পুরসভার পুরোনো হিসেব বলছে, গত তিন দশকে কলকাতা থেকে প্রায় পাঁচ হাজার পুকুর ও জলাশয় নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। সবচেয়ে বেশি পুকুর ভরাট হয়েছে কলকাতা পুরসভার সংযোজিত এলাকায় (১০০–১৪৪ ওয়ার্ড)। এর মধ্যে শীর্ষে রয়েছে গার্ডেনরিচ, যাদবপুর, বেহালা এবং টালিগঞ্জ।

কলকাতা ও সল্টলেকের পরিস্থিতি।-গ্রাফিক্সকলকাতা ও সল্টলেকের পরিস্থিতি।-গ্রাফিক্স
সুকমল শীল
  • কলকাতা ,
  • 24 Sep 2025,
  • अपडेटेड 4:42 PM IST
  • কলকাতায় বর্ষার ভোগান্তি নতুন কিছু নয়।
  • কিন্তু একই পরিস্থিতি উন্নত নকশা ও পরিকল্পনায় গড়ে ওঠা সল্টলেক-নিউটাউন-রাজারহাটে কেন?
  • বুধবারও সেখানকার পরিস্থিতি বিশেষ বদলায়নি।

কলকাতায় বর্ষার ভোগান্তি নতুন কিছু নয়। ধাপে ধাপে গড়ে ওঠা প্রাচীন শহরের এই 'ব্যারাম' মানুষের গা-সওয়া। কিন্তু একই পরিস্থিতি উন্নত নকশা ও পরিকল্পনায় গড়ে ওঠা সল্টলেক-নিউটাউন-রাজারহাটে কেন? ইতিমধ্যেই সেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বুধবারও সেখানকার পরিস্থিতি বিশেষ বদলায়নি। বিধাননগরের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে এখনও জল। পাম্পের সাহায্যে জল নামানোর কাজ চলছে। কোথাও আবার জল ঠেলেই মন্থর গতিতে চলছে গাড়ি।

গঙ্গায় ব্রিটিশদের 'পিনস্টক' গেট
সল্টলেক, নিউটাউন ও রাজারহাট নিকাশির জন্য বাগজোলা, কেষ্টপুর ও নোয়াই খালের ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু সেই খালগুলির আশেপাশে যথেচ্ছ বাড়িঘর তৈরি হওয়ার ফলে সেগুলির নাব্যতা কমছে বলে অভিযোগ। জল নামার ক্ষমতা নেই। এই দাবি করেছেন কলকাতা পুরসভার টাউন প্ল্যানিং বিভাগের প্রাক্তন ডিরেক্টর জেনারেল দীপঙ্কর সিনহা।

দীপঙ্কর সিনহার আরও বক্তব্য, 'কলকাতার ড্রেনেজ গড়ে উঠেছিল ১৮৮০ নাগাদ, সিপাহী বিদ্রোহের পরে। ওরাই গঙ্গায় ‘পিনস্টক’ গেট তৈরি করেছিল। শহর গড়ে উঠেছে নিজস্ব ছন্দে, যাকে বলে অর্গানিক ডেভেলপমেন্ট। তখন কলকাতায় বহু পুকুর ও খাল-বিল ছিল। বৃষ্টির জল সবসময় নিকাশি নালায় চাপ বাড়াত না। এখন সেগুলি বোঝাই করে ঘরবাড়ি তৈরি করার ফলে সব জল ড্রেনেজের ওপর নির্ভরশীল। ফলে নিকাশির সমস্যা দিন দিন বাড়ছে।'

আরও পড়ুন

সল্টলেক বালিতে বোঝাই!
দীপঙ্কর সিনহার আরও দাবি, 'সল্টলেক-নিউটাউনে মূলত জলাভূমি বোঝাই করে নগরায়ণ হয়েছে। সল্টলেক বালি দিয়ে বোঝাই করা হয়েছিল সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায়ের আমলে। কিন্তু শহরের জল যেদিক দিয়ে বেরোবে, তা রক্ষা করার ধারাবাহিকতা বজায় রাখা হয়নি। কলকাতায় একটা ড্রেনেজ প্ল্যান হয়েছিল এডিবি ব্যাঙ্কের টাকায়। সেই প্ল্যানে ত্রুটি ছিল। পরে তা ঠিক করা হয়নি।'

বাগজোলা খালের লে-আউট।

যথেচ্ছে নির্মাণ বাড়ছে
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণ-প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক পার্থপ্রতিম বিশ্বাস বলেন, 'বিল্ডআপ এরিয়া কত, তার ওপর নির্ভর করে রানঅফ কত হবে। যত বেশি কংক্রিটে ঢাকা শহর হবে, তত বেশি মাটির জল ধারণক্ষমতা বাধাপ্রাপ্ত হবে। কিন্তু সল্টলেক-রাজারহাটে বিল্ডআপ এরিয়া তো দিন দিন বাড়ছে। ফলে সমস্যা তৈরি হচ্ছে। এখন তো দেশের সব শহরেই এরকম বৃষ্টি বাড়ছে, আরও বাড়বে। ফলে রাজারহাট-নিউটাউনের পাশাপাশি কলকাতাতেও দরকার, জলের কানেক্টিভিটি নিশ্চিত করা। কিন্তু সেটাই করা হচ্ছে না।'

Advertisement
আবসন চত্বরেও জল।-নিজস্ব ছবি

কলকাতায় 'পুকুর চুরি'
অভিযোগ, শুধু পূর্ব কলকাতার জলাভূমি নয়, গোটা শহর জুড়েই পুকুর ও জলাশয় বুজিয়ে বাড়িঘর তৈরি হচ্ছে। কলকাতা পুরসভা সূত্রে জানা গেছে, গত তিন দশকে কলকাতা থেকে প্রায় পাঁচ হাজার পুকুর ও জলাশয় নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। সবচেয়ে বেশি পুকুর ভরাট হয়েছে কলকাতা পুরসভার সংযোজিত এলাকায়। যার মধ্যে শীর্ষে রয়েছে গার্ডেনরিচ, যাদবপুর, বেহালা এবং টালিগঞ্জ।

কলকাতা শহরে কতগুলো পুকুর ভরাট হয়েছে তার ওপর একটি সমীক্ষা করেছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, রাজ্য জলসম্পদ দফতর এবং তথ্য-প্রযুক্তি বিভাগ। সেই সমীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০০৪ সাল থেকে ২০২২ সালের মধ্যে শুধু গার্ডেনরিচ ও মেটিয়াবুরুজ এলাকার পাঁচটি ওয়ার্ডে মোট ২৭০টি পুকুর বুজিয়ে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ।

ভারী বৃষ্টিতে পরিস্থিতি বিপজ্জনক।-নিজস্ব ছবি

অসাধু প্রোমাটার রাজ
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাস্তু জমির তুলনায় পুকুর অনেক কম দামে কিনতে পাওয়া যায়। পুকুর ভরাট করে বাড়ি বানাতে পারলে প্রোমোটারদের লাভ বেশি হয়। সেই কারণেই এক শ্রেণির অসাধু প্রোমোটার পুর-নিয়মকে তোয়াক্কা না করে পুকুর ভরাট করতে পিছপা হয় না বলেও অভিযোগ ওঠে অনেক সময়। 

বিধানগর পুরনিগমের বক্তব্য
বিধাননগর পুরনিগমের মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তী বলেন, 'খাল যদি উপচে পড়ে, তাহলে জল জমবেই। বহু জায়গায় জল জমেছিল। সেইসব জল নেমে গেছে। রাজারহাটে কিছু জায়গায় জল জমে রয়েছে।'

 

Read more!
Advertisement
Advertisement