দ্যুতি চাঁদের নাম আশা করি আপনারা সকলেই শুনেছেন। দেশের হয়ে এই স্প্রিন্টার বহু পদক জয় করলেও, বিতর্কের কারণে তিনি বারবার সংবাদপত্রের শিরোনামে উঠে এসেছেন।
ওড়িশার এই অ্যাথলিটের দখলে রয়েছে ১০০ মিটার স্প্রিন্টে জাতীয় রেকর্ড। কিন্তু, ২০১৯ সালে তিনি নিজের হোমোসেক্সুয়াল সম্পর্কের কথা ঘোষণা করেন। এই ঘটনার পর থেকেই তিনি পরিবারের বিরাগভাজন হয়েছিলেন।
২০১৮ এশিয়ান গেমসে দ্যুতি জোড়া রুপোর পদক জয় করেছিলেন। তবে ২০১৪ সালে তাঁর জীবনে নেমে এসেছিল আরও একটি বিতর্কিত অধ্যায়। ২০১৪ সালে তাঁর শরীরে টেস্টোস্টেরন হরমোন বেশি থাকার কারণে মহিলা হিসেবে কোনও প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। চিকিৎসকদের পরিভাষায় এটাকে হাইপাররানড্রোজেনিসম বলা হয়ে থাকে। সেইসময় দ্যুতির বয়স ছিল মাত্র ১৮ বছর। তিনি ক্রীড়াজগতের বিশেষ আদালতে (CAS) এই নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে মামলা করেন এবং সেটা জিতেও যান।
ওড়িশার চাকা গোপালপুর গ্রামে এক তাঁতী পরিবারে জন্ম হয়েছিল দ্যুতির। ছোটোবেলায় অ্যাথলেটিক্সের প্রতি তাঁর বিন্দুমাত্র আগ্রহ ছিল না। কিন্তু, সরকারি চাকরির লোভে তিনি অ্যাথলিট হয়ে যান। তাঁর বোন সরস্বতীও একজন কাবাডি খেলোয়াড় তথা দৌড়বিদ। তিনিই প্রাথমিকভাবে দ্যুতিকে খেলাধুলোর জগতে নিয়ে আসেন। কিন্তু, যেদিন থেকে দ্যুতি তাঁর ব্যক্তিগত সম্পর্কের কথা সকলকে ঘোষণা করেছেন, সেদিন থেকে সরস্বতীও তাঁর দিক থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছেন।
২০১৬ সালে তিনি রিও অলিম্পিকে অংশগ্রহণ করলেও যোগ্যতা অর্জনকারী পর্বে সপ্তম হন তিনি। এই অলিম্পিকের আসরে তিনি ছিলেন তৃতীয় ভারতীয় মহিলা যিনি ১০০ মিটারের দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছিলেন।
তবে দ্যুতি শুধুমাত্র নিজের একার জন্যই নয়, লড়াই করেছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার অলিম্পিয়ান ক্যাস্টার সেমেনিয়ার জন্যও। তাঁর শরীরেও দ্যুতির মতোই টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্রা বেশি ছিল। ফলে তাঁর লিঙ্গ নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল।
২০১৯ সালে ইউনিভার্সিয়েডে সোনার পদক জয় করেন দ্যুতি। মাত্র ১১.৩২ সেকেন্ডে তিনি ১০০ মিটার দৌড় সম্পূর্ণ করেছিলেন।
(প্রত্যেকটা ছবিই গেটি ইমেজেস থেকে সংগৃহীত)