IPL 2025-এ নতুন ইতিহাস! মাত্র ১৪ বছর বয়সে দুর্দান্ত সেঞ্চুরি হাঁকালেন রাজস্থান রয়্যালসের তরুণ ক্রিকেটার বৈভব সুর্যবংশী। গুজরাত টাইটান্সের বিরুদ্ধে খেলতে নেমে মাত্র ৩৫ বলে শতরান পূর্ণ করেন তিনি।
এটাই আইপিএল-এর ইতিহাসে ভারতীয়দের মধ্যে দ্রুততম শতরান। এতদিন এই রেকর্ড ছিল ইউসুফ পাঠানের (৩৭ বলে শতরান) দখলে।
শুধু তাই নয়, বৈভবের এই ইনিংস আইপিএল ইতিহাসে দ্বিতীয় দ্রুততম শতরান। প্রথম স্থানে রয়েছেন ক্রিস গেইল, যিনি ২০১৩ সালে ৩০ বলে সেঞ্চুরি করেছিলেন।
বৈভব তাঁর শতরান পূর্ণ করেন রাশিদ খানের বলকে মিড উইকেটের উপর দিয়ে ছয় মেরে। তার আগে করিম জানাতের একটি ওভারে ৩০ রান নেন তিনি (৬, ৪, ৬, ৪, ৪, ৬)।
করিম এদিনই আইপিএল-এ অভিষেক করলেন বৈভব। ডেবিউ ম্যাচেই রেকর্ড।
এই ম্যাচে বৈভব ৩৮ বলে ১০১ রান করেন, যেখানে ৯৪ রানই এসেছে বাউন্ডারি থেকে। তিনি মোট ১১টি ছয় হাঁকান, যা আইপিএল-এ কোনও ভারতীয়র এক ইনিংসে সর্বাধিক ছয়ের রেকর্ডের সঙ্গে সমান।
তাঁর মারমুখী ব্যাটিংয়ে রাজস্থান রয়্যালস ২১০ রানের টার্গেট অনায়াসে টপকে যায়। তাঁর ওপেনিং পার্টনার যশস্বী জয়সওয়াল অপরাজিত থাকেন ৭০ রানে এবং অধিনায়ক রিয়ান পরাগের সঙ্গে মিলে ম্যাচ শেষ করে দেন।
ম্যাচের সেরা হয়ে বৈভব বলেন, 'ভীষণ ভাল লাগছে। এটা আমার তৃতীয় আইপিএল ম্যাচ, আর তাতেই প্রথম শতরান। গত তিন-চার মাস ধরে যেভাবে প্র্যাকটিস করেছি, তার ফল আজ হাতে পেলাম। আমি মাঠ না দেখে শুধু বলের ওপর ফোকাস করি। যশস্বীভাইয়ের সঙ্গে ব্যাট করা খুব সুবিধার, উনি সব সময় ইতিবাচক কথা বলেন, ফলে আত্মবিশ্বাস বাড়ে।'
বৈভবের আইপিএল অভিষেকটাই হত না, যদি নিয়মিত অধিনায়ক সঞ্জু স্যামসন চোট না পেতেন। স্যামসন পেটে চোটের কারণে ছিটকে যাওয়ায় বৈভব সুযোগ পান এবং প্রথম তিন ম্যাচেই ৩৪, ১৬ ও ১০১ রানের ইনিংস খেলেন।
আইপিএলের আগে অনূর্ধ্ব-১৯ টেস্টেও অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে মাত্র ৫৮ বলে শতরান করেছিলেন তিনি। অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপে দু’টি হাফ-সেঞ্চুরিও আছে তাঁর ঝুলিতে। এছাড়া অনূর্ধ্ব-১৯ স্তরের একটি টুর্নামেন্টে অপরাজিত ত্রিশতরানের (৩০০) ইনিংসও রয়েছে তাঁর নামে।
রাজস্থান রয়্যালস গত বছর নিলামে বৈভবকে ১.১০ কোটি টাকায় দলে নেয় এবং হাই পারফরম্যান্স সেন্টারে তাঁকে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেয়।
ম্যাচ শেষে অধিনায়ক রিয়ান পরাগ বলেন, 'আমরা গত দুই মাস ধরে নেটে ওর ব্যাটিং দেখেছি। জানতাম, ও কী করতে পারে। কিন্তু আজ এত বড় ম্যাচে, এত বড় মঞ্চে যেভাবে বিশ্বমানের বোলারদের বিরুদ্ধে ব্যাট করল, সেটা ভাষায় বোঝানো কঠিন।'
দলের ব্যাটিং কোচ বিক্রম রাঠোরও প্রশংসায় ভাসালেন, 'ওর ব্যাটের সুইং অসাধারণ। সেই কারণেই ও এত শক্তি দিয়ে বল মারতে পারে। নেটে জোফ্রা আর্চারের মতো কঠিন বোলারের বিরুদ্ধেও ভয়ডরহীনভাবে ব্যাট করে। আজ পুরো দুনিয়াকে দেখাল, ও আসলে কত বড় প্রতিভা।'
১৪ বছর বয়সে এত বড় মঞ্চে এই ইনিংস নিঃসন্দেহে আগামী দিনের ভারতীয় ক্রিকেটের জন্য একটা বড় বার্তা!