ভারতীয় হকি খেলোয়াড় বীরেন্দ্র লাকড়া তাঁর ছোটবেলার বন্ধু আনন্দ টপ্পোকে হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন। এমন অভিযোগ করেছেন মৃত আনন্দ টপ্পোর বাবা বন্ধন টপ্পো। এই ঘটনায় ভুবনেশ্বরের ইনফোসিটি থানায় হকি তারকার বিরুদ্ধে ছেলেকে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন বন্ধন টপ্পো। সিবিআই তদন্তের দাবি করেছেন তিনি।
টপ্পো অভিযোগে বলেছেন যে, 'বীরেন্দ্র লাকড়া এবং তাঁর মহিলা বন্ধু মনজিৎ তেতে, আনন্দ টপ্পোকে হত্যা করে এবং পরে এটিকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে।' একই সঙ্গে টপ্পো বলেন, 'হত্যা মামলার তদন্তকে বীরেন্দ্র লাকড়া প্রভাবিত করতে পারেন।' উল্লেখযোগ্যভাবে, আনন্দের মৃত্যুর মাত্র দশ দিন আগে তাঁর বিয়ে হয়েছিল।
মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বন্ধন টপ্পো জানান, 'হকি খেলোয়াড় বীরেন্দ্র লাকড়া তাঁর মহিলা বন্ধু মনজিৎ তেতে এবং আনন্দ সকলেই ইনফোসিটি থানার অধীনে আয়ুশ রেডিয়াস নামে একটি ফ্ল্যাটে থাকতেন। মনজিতকে নিয়ে বীরেন্দ্র ও আনন্দের মধ্যে তর্কাতর্কি হয়। ২৮ ফেব্রুয়ারি বীরেন্দ্র ও মনজিৎ, আনন্দকে একসঙ্গে হত্যা করে এবং হত্যাকাণ্ডের দায় এড়াতে আত্মহত্যার নাম দেয়। আমরা বীরেন্দ্র লাকড়া এবং মনজিৎ তেতের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করছি।'
নিহত আনন্দের গলায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে
বন্ধন টপ্পো বিস্তারিত জানিয়েছেন যে, আনন্দ টপ্পো এই বছরের ফেব্রুয়ারিতে বিয়ে করেছিলেন। ২৬ ফেব্রুয়ারি তিনি তাঁর বন্ধু চুনা সিং এবং সুনন্দ টিকরের সঙ্গে ভুবনেশ্বরে ফিরে যান। বন্ধন বলেন, ' ২৮ ফেব্রুয়ারি বীরেন্দ্র আমাকে ফোন করে জানায় যে আনন্দ শাড়ির সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। আমাদের পরিবার আনন্দের মরদেহ দেখে দেখতে পায় ওর গলায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।'
বন্ধন বলেন, 'আমরা বীরেন্দ্রর কাছে ঘটনার বিস্তারিত জানতে চাইলে তিনি আমাদের সঙ্গে কথা বলতে অগ্রাহ্য করেন।' ঘটনাস্থল থেকে প্রাথমিক তদন্তে ধারণা করা হচ্ছে এটি আত্মহত্যা নয়, ষড়যন্ত্র করে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি। ছেলের ময়নাতদন্তের রিপোর্টও পায়নি তার পরিবার। চার মাস কেটে গেলেও আত্মহত্যার কোনো প্রমাণ দিতে পারেনি পুলিশ।
আরও পড়ুন: ইংল্যান্ড সিরিজে ফের ভারতের ক্যাপ্টেন বিরাট? জল্পনা তুঙ্গে
আরও পড়ুন: মুম্বইকে হারিয়ে ইতিহাস মধ্যপ্রদেশের, প্রথমবার জিতল রনজি
তদন্ত ব্যাহত হচ্ছে
পুলিশ প্রশাসনের থেকে কোনো ধরনের সহযোগিতা পাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছে মৃতের পরিবার। বন্ধন টপ্পো বলেন, 'বীরেন্দ্র একজন আন্তর্জাতিক খেলোয়াড়ের পাশাপাশি একজন পুলিশ অফিসার। এ কারণে তিনি মামলার তদন্তকে প্রভাবিত করতে পারেন। আমরা এই ঘটনার সিবিআই তদন্ত দাবি করছি।'
লাকরা পুলিশের মহাপরিচালক (ডিজিপি) সুনীল কুমার বনসাল এবং অন্যান্য সিনিয়র পুলিশ অফিসারদের উপস্থিতিতে কটকের ওড়িশা রাজ্য পুলিশ সদর দফতরে ডিএসপি হিসাবে যোগদান করেছিলেন। লাকরা 30 সেপ্টেম্বর 2021-এ হকি থেকে অবসরের ঘোষণা দেন।