অবশেষে ইস্টবেঙ্গলের (East Bengal) ডার্বি জয়। ছোটদের হলেও, ডার্বির (Kolkata Derby) মাহাত্ম্য বরাবরই এক। আর সেই ডার্বিতে দুই গোলের নায়ক কুশ ছেত্রী (Kush Chhetry), এই জয় উৎসর্গ করলেন লাল হলুদ সমর্থকদের।
প্রসঙ্গত, ইস্টবেঙ্গল শেষ ডার্বি জেতে ২০১৯ সালের ২৭ জানুয়ারি। সেই ম্যাচে লাল হলুদের হয়ে গোল করেন জবি জাস্টিন (Jobby Justin) এবং জেইম স্যান্টোস (Jaime Santos)। তারপর থেকে এখনও পর্যন্ত আর একটিও বড় ম্যাচ জিততে পারেনি তাঁরা। ডার্বি ম্যাচ সবসময় কলকাতা ফুটবলে একটি আলাদা মাত্রা যোগ করে। বড় ম্যাচ ঘিরে সমর্থকদের আবেগ, উত্তেজনা এবং উচ্ছ্বাস চোখে পড়ার মতো। সবকিছুকে কেন্দ্র করে আছে সেই দুই ক্লাব, মোহনবাগান (Mohun Bagan) এবং ইস্টবেঙ্গল। আইএসএলে (ISL) লাল হলুদের সিনিয়র দল ডার্বি হারের হ্যাট-ট্রিক করে ফেলেছে। বিগত শেষ কয়েকটি মরশুম ধরে ক্লাবে বড় কোনও ট্রফি নেই।
আরও পড়ুন: অবশেষে ডার্বি জয় ইস্টবেঙ্গলের, মোহনবাগানকে হারাল ২-০ গোলে
কিন্তু সেই জ্বালা কিছুটা ঘুচল যুব দলের পারফরম্যান্সে। ডার্বি জয়ের স্বাদ পেলেন ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা (East Bengal Supporters)। রিল্যায়েন্স ফাউন্ডেশন ডেভেলপমেন্ট লিগের (RFDL) ডার্বিতে, নৈহাটি স্টেডিয়ামে এটিকে-মোহনবাগানকে ২-০ গোলে হারাল ইস্টবেঙ্গল। দুটি গোলই করেন কুশ ছেত্রী। বলা যেতে পারে, লাল হলুদ সমর্থকদের নয়নের মণি এখন সেই কুশই। গোটা ম্যাচে অনবদ্য ফুটবল উপহার দেন ইস্টবেঙ্গলের এই তরুণ মিডফিল্ডার।
আরও পড়ুন: ইস্টবেঙ্গলের কোচ হচ্ছেন না, ভয়েই পালালেন লোবেরা!
ডার্বি জয়ের নায়ক কুশ bangla.aajtak.in-কে জানালেন, ‘জয়ের পর দারুণ লাগছে। কোচ অনেক মোটিভেট করেছে আমাকে। আমি বেশ কিছু সুযোগ মিস করেছিলাম আগের কয়েকটি ম্যাচে। কিন্তু কোচ সবসময় পাশে ছিল, বলত গোল পাব আমি। স্যার বলত ভালো করে খেল, তোর মধ্যে সেই এবিলিটি আছে। আমি সেই মতোই চেষ্টা করে গেছি। ডার্বি ম্যাচে ২ গোল করা অনেক বড় ব্যাপার।‘
অন্যদিকে, এই বড় ম্যাচের আগে ড্রেসিংরুমের পরিবেশ দারুণ ছিল। কুশ বলছেন, ‘আমরা ঠিকই করে নিয়েছিলাম, এই ম্যাচ আমাদের জিততে হবে এবং টেবিল টপার হয়েই কোয়ালিফাই করতে হবে। ফলে ড্রেসিংরুমে সবাই নিজেদের ভীষণভাবেই মোটিভেট করছিল। সবাই নিজের সেরাটা দেওয়ার জন্যই ঝাঁপায় এই ম্যাচে। আমাদের কোচ (Coach), সাপোর্ট স্টাফ (Support Staff) এবং ম্যানেজমেন্ট (Management) সবাই আমাদের খুব ভালোভাবে বুঝিয়েছিল। বরাবর আমাদের পাশে ছিল। আমাদের জিততে হবে এবং টেবিল টপার হতে হবে, এই ছিল মূলমন্ত্র। বহুদিন হয়ে গেছে ডার্বি জিততে পারিনি আমরা। তাই আমাদের কাছে প্রমাণ করার ম্যাচ ছিল এটি।‘
প্রসঙ্গত, মহম্মদ রোশলের (Muhammed Roshal PP) ক্রস থেকেই প্রথম গোল পান কুশ ছেত্রী। দ্বিতীয় গোলের ক্ষেত্রেও রোশলের যথেষ্ট ভূমিকা ছিল। রোশলের পাস যায় আমান সিকের (Aman CK) দিকে এবং সেইখান থেকে বল পান কুশ। আর তারপরেই দ্বিতীয় গোলটি করে, দলের জয় নিশ্চিত করেন এই প্রতিভাবান মিডফিল্ডার। এই প্রসঙ্গে কুশ ছেত্রী bangla.aajtak.in-কে আরও জানালেন, ‘আমরা প্র্যাকটিসে অনেকবার এই বিষয়গুলোর ওপর অনুশীলন করেছি। ক্রসিং থেকে শুরু করে কিভাবে প্রথম এবং দ্বিতীয় পোস্ট নিতে হবে, এইসব কিছুই ট্রেনিং শিডিউলে ফলো করেছি আমরা। আজ এই জয় আসলে কঠোর অনুশীলনের ফলাফল।‘
এই জয় তিনি লাল হলুদ সমর্থকদের উৎসর্গ করতে চান। কুশ বলছেন, ‘সমর্থকরা আমাদের অনেক সাপোর্ট করেছেন। নিজেদের সবটা দিয়ে তাঁরা আমাদের সমর্থন করে গেছেন। তাই এই জয় সমস্ত ইস্টবেঙ্গল সাপোর্টারদের উৎসর্গ করতে চাই।‘
সবশেষে কুশ জানালেন, ‘এইরকমভাবেই আমাদের সাপোর্ট করতে থাকুন, নিরাশ করব না।‘ লাল হলুদ সমর্থকদের প্রতি বার্তা দিলেন ডার্বি জয়ের নায়ক কুশ ছেত্রী।
স্বভাবতই, তাঁর এই পারফরম্যান্সের ফলে আগামী দিনে লাল হলুদ ব্রিগেডের শক্তি যে বৃদ্ধি পাবে সেই কথা বলাই বাহুল্য।