চাকদহের গ্রাম থেকে উঠে আসা। সেখান থেকে বিশ্বের মঞ্চে নিজের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করার লড়াই একেবারেই সহজ ছিল না ঝুলন গোস্বামীর (Jhulan Goswami) কাছে। একে মেয়ে, তার ওপর বাংলার গ্রাম থেকে ক্রিকেট খেলা বিরাট বড় চ্যালেঞ্জ ছিল চাকদহ এক্সপ্রসের (Chakdaha Express) কাছে। প্রথম দিকে বাড়ির কাউকে না জানিয়েই খেলতে জেতেন দূর দূরান্তে। বাড়িতে খবর পৌঁছতেই জুটত মার।
সাহিত্য আজতক কলকাতার মঞ্চে এসে এমন সব অজানা তথ্যই জানালেন ঝুলন। তিনি বলেন, 'চাকদহতে ছেলেদের খেলারই সঠিক পরিকাঠামো ছিল না। মেয়েদের তো একেবারেই আলাদা ব্যাপার। মাঠের অবস্থাও খুব খারাপ ছিল। সেই জন্য খেলা শিখতে অনেক দূর যেতে হত। গোটা দিন লেগে যেত। মাত্র ১৫ বছর বয়সে ভোর চারটের সময় খেলতে চলে যেতাম। ফিরতাম বিকেল চারটের সময়। বাড়ির কেউ জানত না আমি খেলতে যাচ্ছি। তারা জানত কোনও কাজে যাচ্ছি।'
পড়াশুনো করতে ইচ্ছে ছিল না ঝুলনের। বইয়ের মধ্যে 'How To Play Cricket' বইটা লুকিয়ে রেখে পড়তেন বিশ্বের সবথেকে বেশি উইকেট পাওয়া মহিলা ফাস্ট বোলার। তিনি বলেন, 'সকলে যে বয়সে স্ল্যাম বুক নিয়ে ঘুরত, সেই সময় আমি সেই সচিন তেন্ডুলকর, স্ল্যাম বুকে সচিন তেন্ডুলকর (Sachin Tendulkar), সুনীল গাভাস্কারের (Sunil Gavaskar) ছবি লাগাতাম। বইয়ের ফাঁকে ছোট্ট একটা বই রাখতাম। সকলে ভাবত বই পড়ছি। কিন্তু আসলে পড়তাম 'হাউ টু প্লে ক্রিকেট'।''
'২০০৯ সালে খেলা ছেড়ে দিতে চেয়েছিলাম'
একের পর এক চোট সমস্যায় ফেলে দিয়েছিল ঝুলনকে। ২০০৯ সালে চোটে জর্জরিত হয়ে খেলা ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তই নিতে চেয়েছিলেন ঝুলন। বিশ্বের সবচেয়ে বেশি উইকেট তুলে নেওয়া ঝুলন বলেন, 'আমরা যখন ক্রিকেট খেলতাম তখন বিসিসিআই-এর অধীনে মহিলা ক্রিকেট ছিল না। ফলে চোট আঘাত লাগলে চিকিৎসার সুযোগ খুব বেশি ছিল না। সেই জন্যই খেলা ছেড়ে দিতে চেয়েছিলাম। তবে এরপর ন্যাশানাল ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনে যাই। সেখানে রিহ্যাব হয়। তারপর ফিরে আসি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে।'