Samar 'Badru' Banerjee: প্রয়াত কিংবদন্তী ফুটবলার সমর বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি যদিও ময়দানে বদ্রু বন্দ্যোপাধ্যায় নামেই তিনি অধিক পরিচিত। বয়স হয়েছিল ৯৩ বছর। দীর্ঘ রোগভোগের পরে শুক্রবার রাতে ২টো ১০ মিনিট নাগাদ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। বার্ধক্যজনিত অসুস্থতার পাশাপাশি শরীরে বাসা বেঁধেছিল কোভিডও। ১৯৫৬ সালের মেলবোর্ন অলিম্পিক্সে তাঁর নেতৃত্বেই ভারতীয় ফুটবল দল চতুর্থ স্থান অধিকার করেছিল। যা বর্তমান সময়ে ভাবাই যায় না। ভারত অলিম্পিক্সে যোগ্যতাই অর্জন করতে পারে না।
বদ্রুর জন্ম ১৯৩০ সালে হাওড়ার বালিতে। ফুটবল খেলার পাশাপাশি পড়াশোনাতেও যথেষ্ট ভাল ছিলেন তিনি। ডাক্তারি পড়ার সুযোগও পেয়েছিলেন প্রাক্তন ফুটবলার। আরজি কর-এ ডাক্তারি পড়তে গিয়েছিলেন। তবে তাঁর পরিচিতি, প্রতিষ্ঠা সবটাই ফুটবলকে ঘিরে। মাত্র ১৮ বছর বয়সে বালি প্রতিভার হয়ে প্রথম খেলা শুরু। তার পরের বছরই তিনি যোগ দেন বিএনআরএ। সেখানে তিন বছর দাপিয়ে ফুটবল খেলার পরে ১৯৫২ সালে যোগ দেন মোহনবাগান ক্লাবে (Mohun Bagan)। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।
আরও পড়ুন: ক্রিকেট খেলার সময়ে বুকে বলের আঘাত, দিল্লিতে খেলতে গিয়ে মৃত কলকাতার যুবক
ক্লাব ফুটবলে সবুজ-মেরুন জার্সিতে সেই সময় দেশের সমস্ত ট্রফি জেতা তো ছিলই পাশাপাশি রাজ্য এবং দেশের হয়েও প্রতিনিধিত্ব করছিলেন তিনি। উজ্জ্বল করেছেন বাংলার নাম। ১৯৫৬ সালের মেলবোর্ন অলিম্পিক্সে নেতৃত্ব দেওয়ার দায়িত্ব পান বদ্রু। সেই সময়টাই ছিল ভারতীয় ফুটবলের সেরা সময়। এশিয়ান গেমসে সোনা জয়ের পাশাপাশি অন্যান্য আর্ন্তজাতিক ফুটবল প্রতিযোগিতা এবং বিদেশ সফরে ভারতীয় ফুটবলাররা নিজেদের জাত চেনাচ্ছেন। মেলবোর্নেও ভারতীয় ফুটবল দল দারুণ খেলেছিল।
আরও পড়ুন: ব্যান না উঠলেও, কীভাবে AFC কাপে খেলবে ATK মোহনবাগান?
২০০৯ সালে মোহনবাগান রত্ন সম্মানে সম্মানিত হন বদ্রু বন্দ্যোপাধ্যায় ১৯৫৮ সালে সবুজ মেরুনের অধিনায়ক হয়েছিলেন। ফুটবল থেকে অবসর নেওয়ার পরে কোচ হিসেবে বড়িশা ক্লাবের দায়িত্ব নেন তিনি। বাংলা দল ১৯৬১ সালে তাঁর কোচিংয়ে সন্তোষ ট্রফি জেতে। বাংলা দলের নির্বাচক হিসেবেও নতুন প্রতিভা তুলে নিয়ে আসার কাজ করেছিলেন তিনি। সদা হাস্যমুখ মানুষটির প্রয়ানে ময়দানে শোকের ছায়া।
আরও পড়ুন: এক মরশুমে একাধিক ক্যাপ্টেন, মোহন-কোচের কী ভাবনা?
শোক প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। ট্যুইট করে তিনি লেখেন, 'তারকা ফুটবলার সমর (বদ্রু) বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রয়াণে আমি গভীর শোক প্রকাশ করছি। তিনি আজ কলকাতায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বয়স হয়েছিল ৯২ বছর। তিনি ১৯৫৬ সালে মেলবোর্নে সামার অলিম্পিকসে জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক ছিলেন। এছাড়া মোহনবাগান, বালি প্রতিভা ক্লাব, বেঙ্গল নাগপুর রেলওয়ে দলেও খেলেছিলেন। অংশ নিয়েছেন ডুরান্ড কাপ, কলকাতা ফুটবল লিগ, আইএফএ শিল্ড, রোভার্স কাপে। তাঁর জনপ্রিয়তা ছিল অতুলনীয়। পশ্চিমবঙ্গ সরকার ২০১৬-১৭ সালে তাঁকে 'লাইফ টাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড' প্রদান করে। তাঁর প্রয়াণে ক্রীড়া জগতের অপূরণীয় ক্ষতি হল। আমি সমর (বদ্রু) ব্যানার্জির পরিবার-পরিজন ও অনুরাগীদের আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।'