গাছে চড়ার স্কুটার! তাও আবার হয় নাকি? যা শুনে স্ক্রল ডাউন করে বেরিয়ে যাওয়ার চিন্তা করলেও একটু অপেক্ষা করুন। কোনও কষ্ট-কল্পনা নয়, সত্যি ঘটনা। আপনাকে জানিয়ে দিই এটা কোন আজব কাহিনী বা কল্পবিজ্ঞান নয়, বরং বাস্তব। কোনও বিজ্ঞানী বা প্রথিতযশা ইঞ্জিনিয়ার নন, আমাদের দেশের সাধারণ কৃষক তৈরি করেছেন এই অভিনব স্কুটার।
কর্নাটকের গণপতি ভট্ট করেছেন এই আবিষ্কার
কর্নাটকের ম্যাঙ্গালোর এর বাসিন্দা ৫০ বছরের কৃষক গণপতি ভট্ট সুপারির চাষ করেন। তিনি নিজেই গাছে উঠে সুপারি পাড়তেন। নিয়মিত ৬০ থেকে ৭০ ফুট উঁচু গাছগুলিতে চড়েন। কিন্তু এখন তিনি বয়স হয়ে যাওয়ায় অত দ্রুত গাছে উঠতে পারেন না। ফলে উদ্যমে ঘাটতি দেখা যায়। তাতে ব্যবসায় ক্ষতি হওয়া শুরু করেছিল। তিনি তখন বিকল্প উপায়ে চিন্তা করতে থাকেন। এই ভাবনা থেকেই তৈরি হয়ে যায় আচমকা এই অভিনব স্কুটার। তিনি এমন স্কুটার তৈরি করেন, যা তাকে বসে বসেই গাছের মাথায় চড়ে পৌঁছে দেবে এবং তার কয়েক ঘণ্টা পরিশ্রম কয়েক মিনিটেই শেষ করে দিতে পারে।
কেমন সেই গাছে চড়া স্কুটার
রয়টার্সের খবর অনুযায়ী, গণপতি ভট্ট এই আজব স্কুটার বাড়িতেই তৈরি করে ফেলেছেন। স্কুটারের একটা ছোট মোটর, একটা সিট এবং দুটি চাকা রয়েছে। হ্যান্ডেলের সঙ্গে একটা সিট বেল্ট আটকে দিয়েছেন তিনি। যার সাহায্যে গণপতি ভট্ট এই স্কুটারে বসে সুপারি গাছের মাথায় চড়ে পড়তে পারেন। তিনি একে Tree Scooter বলে নাম দিয়েছেন।
চার বছর থেকে ডেভলপ হচ্ছিল এই স্কুটার
এই স্কুটার তৈরি করতে তার চার বছর সময় লেগেছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা গবেষণা, কোনও বৈজ্ঞানিক এর চেয়ে কম করেননি তিনি। ২০১৪ তে শুরু করে ৪০ লক্ষ টাকা খরচ করে চার বছর ধরে তিনি এটিকে তৈরি করে ফেলেছেন। এখন তিনি স্কুটার তৈরি করে গ্রামে গ্রামে ৩০০ টি স্কুটার বিক্রিও করে ফেলেছেন। এখন 6২ হাজার টাকা দাম রেখেছেন তিনি।
কীভাবে এল ভট্টর স্কুটার বানানোর আইডিয়া
বয়স বাড়তে থাকায় উদ্দম এবং পরিশ্রম করার ক্ষমতা কমে যাওয়ার পর সহজ উপায়ে গাছে চড়ার বুদ্ধি বের করতে গিয়ে মাথায় আসে এটি। পাশাপাশি বর্ষার সময় যখন গাছে চড়া অত্যন্ত জটিল হয়ে যায়, তখন এই স্কুটার নিরাপদে আপনাকে পৌঁছে দিতে পারে গাছের মাথায়। আবার সুপারি বা অন্য কোনও ফল পেড়ে আবার নামিয়ে আনতে পারে নিরাপদে।