ইনস্যুরেন্স পিওএসপি (POSP)
একজন পিওএসপি (বা পয়েন্ট অফ সেলস পার্সন) হলেন যিনি ইনস্যুরেন্স প্রোডাক্ট বিক্রি করেন। এরা হলেন ইনস্যুরেন্স এজেন্ট যারা ইনস্যুরেন্স কোম্পানির সঙ্গে কাজ করে তাদের পলিসি গ্রাহকদের কাছে তাদের ব্যক্তিগত চাহিদা অনুযায়ী বিক্রি করে। ১৮ বছর বা তার বেশি হলেই এই কাজ শুরু করা যায়। দশম শ্রেণী পাশ হতে হবে আর লাইসেন্সের জন্য একটা প্রশিক্ষণও বাধ্যতামূলক। এই কাজে আপনার আয় কমিশনের ওপর নির্ভর করে। ত বেশি আপনি বিক্রি করবেন, আপনার আয়ও তত বেশি হবে।
বাড়িতে তৈরি জিনিস বিক্রি
অনেকেই অনলাইনে হাতে তৈরি জিনিস বিক্রি করে টাকা উপার্জন করেন। এর মধ্যে রয়েছে কেক, চকোলেট, ঘর সাজানোর বিভিন্ন জিনিস, হ্যান্ডমেড সাবান, পারফিউম, খাবার ইত্যাদি। আপনার যদি শিল্প ও হাতের কাজে বা রান্নায় দক্ষতা থাকে, তাহলে আপনি সহজেই এটসি, অ্যামাজন, ফ্লিপকার্ট, জোম্যাটো বা আজিও-এর মতো সাইটে নিজেকে বিক্রেতা হিসেবে রেজিষ্টার করাতে পারেন। সোশ্যাল মিডিয়াতেও বিক্রি করতে পারেন, সেক্ষেত্রে আপনার একটি সেকেন্ডারি ডেলিভারি পরিষেবা দরকার। কাঁচামাল কেনার জন্য কিছুটা অর্থ বিনিয়োগের প্রয়োজন রয়েছে। আপনি কতগুলি প্রোডাক্ট বিক্রি করবেন, আপনার বিক্রি করার দক্ষতা এবং আপনি যে সেলিং পার্টনার সাইটটি বেছে নেবেন তার উপর আপনার আয় নির্ভর করবে।
অনুবাদকের কাজ
একাধিক ভাষা জানা থাকলে গৃহিণীদের জন্য টাকা উপার্জনের আরেকটি উপায় হল অনুবাদক হওয়া। নথি, ভয়েস মেল, কাগজপত্র, সাবটাইটেল এবং আরও অনেক কিছু অনুবাদ করতে পারে এমন মানুষের বেশ চাহিদা রয়েছে। আপনি ট্রান্সলেশন এজেন্সি বা ফ্রিল্যান্সিং পোর্টালগুলির সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। এখানে তেমন কোনো বিনিয়োগের ব্যাপার নেই এবং সাধারণত কোন নির্দিষ্ট শিক্ষা যোগ্যতার প্রয়োজন হয় না। আপনি যতগুলি ভাষা জানবেন আপনার আয়ও তত বেশি হবে। এছাড়াও, যখন আপনাকে প্রতি শব্দ পিছু টাকা দেওয়া হয়, তখন আপনি ভাষার উপর ভিত্তি করে প্রতি শব্দ পিছু ১ থেকে ৪ টাকা উপার্জন করতে পারেন।
ব্লগ শুরু করা
বাড়িতে বসে টাকা উপার্জনের আরেকটি জনপ্রিয় উপায় হল একটি ব্লগ শুরু করা। যে কেউ একজন ব্লগার হতে পারেন, আপনার শুধুমাত্র আগ্রহের একটি বিষয় থাকা প্রয়োজন , যেমন ভ্রমণ, শিল্প ও হাতের কাজ, খাবার, বই, মেকআপ ইত্যাদি। আপনি ওয়ার্ডপ্রেস, উইবলি, মিডিয়াম বা ব্লগার এর মত ব্লগিং সাইটগুলিতে সাইন আপ করতে পারেন। তারপর, আপনাকে আগ্রহের বিষয়গুলি সম্পর্কে লিখতে হবে, এবং একবার আপনার ব্লগ শুরু হয়ে গেলে এবং কিছু ট্র্যাফিক পেয়ে গেলে, আপনি বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আয় করতে পারেন। এছাড়াও, আপনি আপনার ব্লগে পিডিএফ, প্রিন্টেবল্, ই-বুক বিক্রি করতে পারেন, বিশেষ করে যদি আপনি রেসিপি বা হস্তশিল্পের নির্দেশাবলীর মতো জিনিস শেয়ার করেন। যদি না আপনি একটি নির্দিষ্ট ডোমেন নাম কিনতে চান, খুব বেশি বিনিয়োগের প্রয়োজন নেই। তবে, আপনার সাইটটি যাতে আরও দৃশ্যমান হয় সেইজন্য সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশান (বা এসইও)-এর দক্ষতা অর্জন করলে আপনার সুবিধা হবে। আপনার উপার্জন নির্ভর করবে আপনার সাইটের ট্রাফিক, কতটা উপযুক্ত স্থানে আছে, এবং পাঠকদের উপর।
ইউটিউব চ্যানেল
আপনি ইউটিউব চ্যানেল শুরু করতে পারেন। একটি ব্লগের মতো, আপনি ইউটিউবে রেসিপি এবং রান্না, নাচ বা শিল্পের টিউটোরিয়াল থেকে যেকোনো ধরনের বিষয়বস্তু শেয়ার করতে পারেন। আপনাকে এর জন্য কোনো বিশেষ সাইটে সাইন আপও করতে হবে না। শুধু একটি ইমেল অ্যাড্রেস এবং একটি ইউটিউব অ্যাকাউন্ট থাকলেই চলবে। ব্লগের মতই, এখানেও আপনি বিজ্ঞাপনের মাধ্যমেও আয় করতে পারেন। বিজ্ঞাপন ছাড়াও, আপনি যদি অনেক ফলোয়িং পান, তাহলে আপনি আপনার ভিডিওতে প্রচার করতে পারবেন এমন ব্র্যান্ডগুলির সঙ্গে পেইড স্পনসরশিপ ডিলের মাধ্যমে অতিরিক্ত আয় করা যায়।
ট্রাভেল এজেন্ট বা প্ল্যানার হন
গৃহিণীদের জন্য সবচেয়ে আন্ডাররেটেড একটি কাজ হল বাড়িতে বসে ট্রাভেল এজেন্ট হিসেবে কাজ করা। ভ্রমণের ব্যবস্থা এবং টিকিট বুক সবই আজকাল অনলাইনে করা যেতে পারে, তবে যারা ব্যস্ত বা ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারেন না, তাদের জন্য এটি একটি বড় সমস্যা হতে পারে। আপনি একজন স্ব-নিযুক্ত ট্রাভেল এজেন্ট হিসাবে কাজ করতে পারেন। এখানে কোনও বিনিয়োগ বা কোনোকিছুর প্রয়োজনীয়তা নেই, যদিও আপনার জানা উচিত কীভাবে সস্তায় ফ্লাইট, সস্তায় হোটেল বুকিং এবং অন্যান্য ভাল ভ্রমণের ডিলগুলি খুঁজে পাবেন। আপনি কতটা উপার্জন করবেন তা নির্ভর করবে আপনার ক্লায়েন্ট, আপনি যে কোম্পানিতে কাজ করেন বা আপনি যে ধরনের ছুটির দিনগুলি নিয়ে কাজ করেন (উদাহরণস্বরূপ, বিলাসবহুল ছুটি কাটানো, পারিবারিক ভ্রমণ ইত্যাদি) তার উপর।
গ্রাফিক্স ডিজাইন
অনলাইনে ঘরে বসে আয়ের ক্ষেত্রে গ্রাফিকস ডিজাইন ভালো উপায়। যাঁরা এই কাজে দক্ষ, তাঁরা বিভিন্ন ডিজাইন অনলাইন মার্কেটপ্লেসগুলোতে দিয়ে রাখেন। সেখান থেকে তাঁদের আয় আসে। তাঁদের তৈরি একটি পণ্য অনেকবার বিক্রি হয়, অর্থাৎ একটি ভালো নকশা থেকেই দীর্ঘদিন পর্যন্ত আয় হতে থাকে। অনলাইনে এ ধরনের অনেক ওয়েবসাইটে গ্রাফিকসের কাজ বিক্রি করা যায়। এ ছাড়া অনলাইন মার্কেটপ্লেসগুলোতেও গ্রাফিকস ডিজাইনারদের অনেক চাহিদা রয়েছে।
ভার্চুয়াল সহকারী
এখন ভার্চুয়াল সহকারীদের কাজের ক্ষেত্র বেড়েছে। ঘণ্টাপ্রতি আয়ও বেশি। বাড়ি থেকে কর্পোরেট অফিসের নানা কাজ অনলাইনে করে দেওয়ার সুবিধা আছে এখন। ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে কর্মী বা নিজের ব্যবসা নিজেই চালানো যায়। বিভিন্ন দক্ষতার ভিত্তিতে ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট নিয়োগ দেয় প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে ফোন কল, ই-মেইল যোগাযোগ, ইন্টারনাল রিসার্চ, ডেটা এন্ট্রি, এডিটিং, রাইটিং, ব্লগ, গ্রাফিকস, টেক সাপোর্ট, সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবস্থাপনার মতো কাজ থাকে। একাধিক অনলাইন সাইট থেকে কাজ পাওয়া যায়।