দেশের অন্যান্য রাজ্যের মতো বাংলাতেই ক্রমশ ভয়াবহ হচ্ছে করোনা পরিস্থিতি। এ রাজ্যেও ক্রমশ বাড়ছে করোনা আক্রান্ত্রের সংখ্যা। পরিস্থিতি সামাল দিতে আজ থেকে আগামী ৩০ মে পর্যন্ত রাজ্যজুড়ে কার্যত লকডাউন জারি করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার।
দিনের বেলা নানা বিধি-নিষেধের পাশাপাশি রাত ৯টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত বাইরে বেরোনোয় নিষেদ্ধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে রাজ্যজুড়ে। করোনা বিধি না মানলে মহামারী আইন অনুযায়ী কড়া শাস্তির মুখে পড়তে হতে পারে বলে জানিয়েছে নবান্ন।
তবে এই পরিস্থিতিতেও যাঁদের আপৎকালীন পরিষেবা বা অনলাইন ডেলিভারির কাজে বাইরে বেরতে হচ্ছে, তাঁদের জন্য বিশেষ E Pass পরিষেবা চালু করেছে কলকাতা পুলিশ ও রাজ্য প্রশাসন।
যাঁরা এই ধরনের আপৎকালীন পরিষেবা বা অনলাইন ডেলিভারির কাজের সঙ্গে যুক্ত, তাঁদের E Pass-এর জন্য অনলাইনে আবেদন জানাতে হবে। ব্যাঙ্ককর্মীরা জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত। তাই E Pass জোগাড় হলেও রাস্তায় গণপরিবহণের অভাবে সমস্যায় পড়েছেন অনেকেই।
ব্যাঙ্ককর্মীদের অনেকরই নিজেদের মোটরসাইকেল বা গাড়ি নেই। রাজ্যজুড়ে চলা লকডাউনে কর্মস্থলে পৌঁছাতে তাই চূড়ান্ত হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে তাঁদের। মোটা টাকা ভাড়া গুণে দিনের পর দিন ব্যাঙ্ক পরিষেবা সচল রাখতে কর্মক্ষেত্রে যোগদান অনেকের ক্ষেত্রেই প্রায় অসম্ভব!
বর্তমান পরিস্থিতি প্রসঙ্গে এসবিআই স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের (বেঙ্গল সার্কেল) প্রাক্তন ডেপুটি চিফ সেক্রেটারি (Ex Dy Chief Secretary of SBISA) অশোক মুখোপাধ্যায় বলেন, “লকডাউনের ঘোষণার পর ব্যাঙ্ক পরিষেবা সচল রাখতে উপযুক্ত পরিকল্পনার প্রয়োজন। বিশেষ করে একটি নির্দিষ্ট পয়েন্ট থেকে কর্মীদের ব্যাঙ্কের শাখা পর্যন্ত পৌঁছানোর প্রাথমিক দায়িত্ব নিতে হবে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকেই।”
অশোকবাবু বলেন, “ব্যাঙ্ক পরিষেবা সচল রাখতে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি রাজ্য প্রশাসনেরও কিছু দাযিত্ব থাকে। সঠিক সমন্বয় আর পরিস্থিতি অনুযায়ী পরিকল্পনার অভাবে চূড়ান্ত হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে অনেক ব্যাঙ্ককর্মীকেই।”
এ বিষয়ে রাজ্যের ইউনাইটেড ফোরাম অফ ব্যাঙ্ক উনিয়ন্স (UFBU)-এর প্রাক্তন আহ্বায়ক গৌতম বসুর অভিযোগ, “মুখে জরুরি পরিষেবা বলা হলেও ব্যাঙ্ক সচল রাখতে তার কর্মীদের জন্য কোনও বিশেষ ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি। তার উপর ২টোয় ব্যাঙ্ক বন্ধ হলেও বাড়তি কাজের চাপ সামলে ছুটি পেতে পেতে প্রায় ৪টে বেজে যাচ্ছে। এর পর তাঁদের বাড়ি ফেরাও মুশকিল হয়ে যাচ্ছে।”
ইতিমধ্যেই গোটা বিষয়টি জানিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্য সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়েছে রাজ্যের ইউনাইটেড ফোরাম অফ ব্যাঙ্ক উনিয়ন্স (UFBU)। তবে ব্যাঙ্ক পরিষেবা সচল রাখতে রাজ্য প্রশাসনের পাশাপাশি কর্মীদের প্রতি নিজেদের প্রাথমিক দায়িত্ব পালন করতে হবে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকেই, মত পশ্চিমবঙ্গ UFBU-এর প্রাক্তন আহ্বায়ক গৌতম বসুর।