গত ৫ মে থেকে রাজ্যে বন্ধ করা হয়েছে লোকাল ট্রেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে রবিবার থেকে আগামী ৩০ মে পর্যন্ত রাজ্যজুড়ে কার্যত লকডাউন জারি করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। সারাদিনে হাতে-গোনা ট্রেন চলছে রেলকর্মীদের জন্য।
সূত্রে খবর, বিগত কয়েক সপ্তাহে হাওড়া ও শিয়ালদা শাখা মিলিয়ে দেড় হাজারেরও বেশি চালক, গার্ড ও রেলকর্মী করোনায় আক্রান্ত। ইতিমধ্যে শিয়ালদহ ডিভিশনে ৩০ জন রেলকর্মীর মৃত্যু হয়েছে করোনায়। আক্রান্ত হয়েছেন হাজার খানেক কর্মী।
এই পরিস্থিতিতে ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে কর্মীদের সুরক্ষিত রাখতে স্টাফ স্পেশ্যাল ট্রেনে যে কোনও সাধারণ যাত্রীদের ওঠার অনুমতি দিতে নারাজ রেল কর্তৃপক্ষ। তবে শুধুমাত্র স্বাস্থ্যকর্মীদেরই স্টাফ স্পেশ্যাল ট্রেনে চড়ার অনুমতি মিলেছে।
পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, উপযুক্ত পরিচয়পত্র দেখাতে পারলে তবেই স্বাস্থ্যকর্মীদের স্টাফ স্পেশ্যাল ট্রেনে চড়ার অনুমতি দেওয়া হবে। স্বাস্থ্যকর্মীরা যদি পরিচয়পত্র দেখিয়ে স্টাফ স্পেশ্যাল ট্রেনে চড়ার অনুমতি পান, তাহলে জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত বাংলার ব্যাঙ্ককর্মীরা অনুমতি পাবেন না কেন, প্রশ্ন তোলেন পশ্চিমবঙ্গ ইউনাইটেড ফোরাম অফ ব্যাঙ্ক উনিয়ন্স (UFBU)-এর প্রাক্তন আহ্বায়ক গৌতম বসু।
এ রাজ্যের (UFBU)-এর প্রাক্তন আহ্বায়ক গৌতম বসু বলেন, “মুখে জরুরি পরিষেবা বলা হলেও ব্যাঙ্ক সচল রাখতে তার কর্মীদের জন্য কোনও বিশেষ ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি। জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত থাকা সত্ত্বেও স্টাফ স্পেশ্যাল ট্রেনে চড়ার অনুমতি নেই ব্যাঙ্ককর্মীদের।”
গৌতমবাবু জানান, সোমবার সকালেই ইছাপুরের বাসিন্দা দুই ব্যাঙ্ককর্মীকে স্টাফ স্পেশ্যাল ট্রেনে চড়ার অপরাধে বিধাননগর স্টেশনে আটক করে রেল পুলিশ। পরে অবশ্য জরিমানা দিয়ে ছাড়া পান তাঁরা। এই ঝুঁকি আর হয়রানি সহ্য করে রাজ্যের ব্যাঙ্ক পরিষেবা সচল রাখা কী করে সম্ভব, প্রশ্ন তোলেন তিনি।
এই ঘটনার পর সোমবারই ব্যাঙ্ককর্মীদের স্টাফ স্পেশ্যাল ট্রেনে চড়ার অনুমতি চেয়ে পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজারকে চিঠি পাঠিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ ইউনাইটেড ফোরাম অফ ব্যাঙ্ক উনিয়ন্স (UFBU)-এর আহ্বায়ক গৌতম নিয়োগি।
ব্যাঙ্ককর্মীদের নিত্যযাত্রার দুর্ভোগ কমাতে পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি জরুরি পরিবহণ সংক্রান্ত সমস্যার কথা জানিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্য সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়েছে এ রাজ্যের UFBU-এর আহ্বায়ক গৌতম নিয়োগি। এই দুই পক্ষের উত্তরের উপর অনেকটাই নির্ভর করছে রাজ্যের ব্যাঙ্ক পরিষেবার ভবিষ্যতের হাল।