১ মে থেকে দেশজুড়ে শুরু হচ্ছে ১৮ বছর বা তার বেশি বয়সীদের করোনার টিকাকরণ! অর্থাৎ, ১ মে থেকেই দেশের অধিকাংশ নাগরিক করোনার টিকা নিতে পারবেন। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের সম্মতিতে সেরাম ইনস্টিটিউটের কোভিশিল্ডের নয়া দাম ঘোষণার পরই সরকারি হাসপাতাল থেকে বিনামূল্যে টিকা পাওয়ার দিন ফুরিয়েছে সাধারণ মানুষের।
নয়া ঘোষণা অনুযায়ী, ১ মে থেকে করোনার টিকা কোভিশিল্ডের এক একটি ডোজের দাম সরকারি হাসপাতাল থেকে নিলে পড়বে ৪০০ টাকা (যা এতদিন মিলছিল বিনামূল্যে) আর বেসরকারি হাসপাতাল থেকে নিলে জিএসটি এবং পরিষেবামূল্য সহ পড়বে প্রায় ৭০০ টাকা (যা এতদিন মিলছিল ২৫০ টাকায়)।
এর পরই বিনামূল্যে করোনার টিকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে কেরালা, ছত্তিসগড়, মধ্যপ্রদেশ সরকার। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও ঘোষণা করেন, ৫ই মে থেকে রাজ্যে একেবারে বিনমূল্যেই টিকাকরণ শুরু হবে।
ভ্যাকসিন কিনে গণটিকাককরণের জন্য পশ্চিমবঙ্গের প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা খরচ হতে চলেছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী দিনে রাজ্যের মানুষকে বিনামূল্যে করোনার টিকা দিতে রাজ্যসরকারকে অতিরিক্ত প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার দায়ভার নিতে হবে। কিন্তু দেশের সমস্ত ১৮ ঊর্ধ্ব নাগরিকদের করোনা টিকা দিতে কত খরচ পড়বে জানেন?
সম্প্রতি India Ratings and Research-এর একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, দেশের সমস্ত আঠারো-ঊর্ধ্ব নাগরিকদের করোনা টিকা দিতে খরচ পড়বে ৬৭ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে রাজ্যের খরচ ৪৬ হাজার ৩২৩ কোটি টাকা। বাকি খরচ কেন্দ্রের।
India Ratings and Research-এর ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, ১ মে থেকে দেশের প্রায় ৮৪.১৯ কোটি মানুষ করোনার টিকা পেতে চলেছেন। এই গণটিকাকরণের জন্য ১৫৫.৪ কোটি করোনা টিকার ডোজ কিনতে ৬৭ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা খরচ হবে যার মধ্যে ২০ হাজার ৮৭০ কোটি টাকার ব্যয়ভার কেন্দ্রীয় সরকার বহন করবে।
১ মে থেকে দেশজুড়ে গণটিকাকরণের জন্য যে ৬৭ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা খরচ হবে তা ভারতের GDP-র মাত্র ০.৩৬ শতাংশ। এর মধ্যে কেন্দ্রের যা খরচ হচ্ছে, সেটি দেশের GDP-র ০.১২ শতাংশ এবং গণটিকাকরণে রাজ্যের ভাগে যতটা খরচ তা রাজ্যগুলির বাজেটের ০.২৪ শতাংশ।
চুক্তি অনুযায়ী, টিকা উৎপাদক সংস্থাগুলি তাদের উৎপাদিত টিকার ৫০ শতাংশ কেন্দ্রকে এবং ৫০ শতাংশ রাজ্য ও বেসরকারি হাসপাতালে বিক্রি করছে। এই গণটিকাকরণে বিহারের খরচ হবে GDP-র ০.৬০ শতাংশ, ঝাড়খণ্ডের খরচ হবে ০.৩৭ শতাংশ, ওড়িশার খরচ হবে ০.৩০ শতাংশ, উত্তরপ্রদেশের খরচ হবে ০.৪৭ শতাংশ এবং মনিপুরের খরচ হবে ০.৩০ শতাংশ।
কোভিশিল্ড বা কোভ্যাক্সিন সম্পর্কে সংস্থার বিজ্ঞানীদের দাবি, এই টিকার প্রয়োগে তৈরি অ্যান্টিবডি বা অনাক্রমতা শরীরে কার্যকর থাকবে পরবর্তী ১২ থেকে ১৮ মাস। তাই এই গণটিকাকরণের খরচ কেন্দ্র এবং রাজ্যের পৌনঃপুনিক খরচ হিসেবেই চলতেই থাকবে।