
গরমের দিনে দেহে জলশূন্যতা বা ডায়রিয়ার সময় বাজার থেকে ‘রেডি টু ড্রিঙ্ক’ ওআরএস পানীয় নেওয়া অনেকেরই প্রথম পছন্দ। কমলালেবু, আপেল, আনারস, লিচু বা ব্ল্যাককারেন্ট-বিভিন্ন স্বাদে পাওয়া যায় এই ধরনের ওআরএস। মুখে খেতেই সহজ, তাই জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় খাদ্য সুরক্ষা দফতর (FSSAI) জানাচ্ছে, বাজারে থাকা অধিকাংশ ওআরএস আসলে নিরাপদ নয়।
সম্প্রতি FSSAI-এর নির্দেশে রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের খাদ্য সুরক্ষা বিভাগকে জানানো হয়েছে, যে সমস্ত পানীয়ে ‘ওআরএস’ লেখা আছে অথচ মেডিক্যাল ফর্মুলা মেনে তৈরি করা হয়নি, সেগুলির অবিলম্বে বিক্রি বন্ধ করতে হবে। অধিকাংশ ভুয়ো ওআরএস আসলে শুধুই চিনিগোলা জল, যেখানে সামান্য নুন এবং সিন্থেটিক স্বাদ মেশানো থাকে।
ওআরএস বলতে বোঝায় ‘ওরাল রিহাইড্রেশন সল্ট’, যা WHO অনুমোদিত ওষুধ। FSSAI স্পষ্ট জানিয়েছে, শুধুমাত্র মেডিক্যাল ফর্মুলা মেনে এবং অনুমোদন নিয়ে তৈরি ওআরএসই এই নাম ব্যবহার করতে পারবে। অন্যথায়, উৎপাদকরা ২০০৬ সালের খাদ্য সুরক্ষা ও মান নিয়ন্ত্রণ আইন ভঙ্গ করছেন। ফুড ইনস্পেক্টররা ইতিমধ্যেই সতর্ক করা হয়েছে।
ভুয়ো ওআরএস খেলে শরীরের উপকারের পরিবর্তে ক্ষতি হতে পারে। হায়দরাবাদের শিশু চিকিৎসক শিবরঞ্জনী সন্তোষের মতে, অতিরিক্ত চিনি যুক্ত ভুয়ো ওআরএস শরীরে আর্দ্রতা যোগানোর বদলে উল্টো প্রভাব ফেলতে পারে।
ক্রেতাদের সতর্কতা:
১. ওআরএস-এর আগে বা পরে ব্র্যান্ড নাম থাকলেও তা অনুমোদিত নয়।
২. উপাদানের তালিকা দেখে নিশ্চিত হোন, সঠিক ইলেক্ট্রোলাইট ও গ্লুকোজ ব্যবহৃত হয়েছে কি না। WHO অনুযায়ী প্রতি লিটার পরিশ্রুত জলে থাকা উচিত- ১৩.৫ গ্রাম গ্লুকোজ, ২.৬ গ্রাম সোডিয়াম ক্লোরাইড, ১.৫ গ্রাম পটাশিয়াম ক্লোরাইড ও ২.৯ গ্রাম ট্রাইসোডিয়াম সাইট্রেট ডিহাইড্রেট।
৩. যদি কোনো দোকানে নিয়ম মেনে ওআরএস বিক্রি না হয়, খাদ্য সুরক্ষা দফতরের হেল্পলাইনে রিপোর্ট করুন।