বিগত বছর দুয়েকে করোনা মহামারীর ফলে আয়ের তুলনায় ব্যায় বেড়ে গিয়েছে অধিকাংশ মানুষের। এর ফলে দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষের সঞ্চয় তলানিতে ঠেকেছে। সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়েছে হাজার হাজার মানুষকে। তাই ঋণ নিতে বাধ্য হয়েছেন অনেকেই। কিন্তু ঋণ পাওয়াও এখন সহজ নয়। ইনস্ট্যান্ট লোনের সুবিধা বাড়লেও স্বল্প সুদে ব্যক্তিগত ঋণ পাওয়া এখনও দুর্লভ! এই পরিস্থিতিতে আজ এমন একটি ঠিকানা জেনে নেওয়া যাক, যেখান থেকে মাত্র ৯-১০ শতাংশ হারেই দ্রুত নিশ্চিত ঋণ পাওয়া যায়...
হঠাৎ করে টাকার প্রয়োজন হলে আমরা কী করব? হয় একটি ক্রেডিট কার্ড থেকে ঋণ নিয়ে নেব অথবা ব্যক্তিগত ঋণের জন্য আবেদন করে বসবো। কিন্তু আমরা আমাদের বিমা পলিসির সঙ্গে থাকা সুবিধাগুলির বিষয়ে খুব কমই মনোযোগ দিই। সত্যি বলতে যে কেউ সহজেই তার বিমা পলিসির থেকে ব্যক্তিগত তাৎক্ষণিক প্রয়োজনে ঋণ নিতে পারেন, তাও আবার সস্তা এবং সুবিধাজনক পদ্ধতিতে। যেখানে ব্যাংক বা ফাইন্যান্স কোম্পানি থেকে নেওয়া ঋণ ব্যয়বহুল, সেখানে জীবন বিমার থেকে নেওয়া ঋণ বেশ কিছুটা সস্তায় পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন: এক বছরে ৬৫৩% রিটার্ন, লগ্নির ১ লাখ টাকা বেড়ে ৮ লক্ষ!
আপনারও যদি কোনো জীবন বিমা থেকে থাকে, তাহলে জরুরী পরিস্থিতিতে ঋণ নিয়ে বেশি ভাবার দরকার নেই। সহজ কয়েকটি ধাপে আবেদন করুন এবং ঋণ নিন আপনার জীবন বিমা পলিসির থেকে। জীবন বিমার বিপরীতে ঋণ নেওয়ার প্রক্রিয়াটি খুবই সহজ এবং এই ঋণের কারণে আপনার বিমা কভার প্রভাবিত হবে না। আসুন জেনে নেওয়া যাক বিমার বিপরীতে ঋণ নেওয়ার প্রক্রিয়া সম্পর্কে।
আরও পড়ুন: পুজোর মেগা ব়্যালি: কলকাতায় বেশ কিছু রাস্তা বন্ধ-ওয়ানওয়ে কাল, জেনে নিন
বিমা কোম্পানি ঋণ দেওয়ার জন্য বিশেষ ফর্ম তৈরি করে, যা আপনাকে পূরণ করতে হবে। এর জন্য বিমা কোম্পানির নিকটতম শাখায় যেতে হবে। আপনি বিমা পলিসির ওয়েবসাইট থেকে ফর্মটি ডাউনলোড করতে পারেন। এটির একটি প্রিন্ট আউট নিন এবং সঠিকভাবে পূরণ করুন। ফর্মে পলিসির বিবরণ এবং ঋণের পরিমাণ লিখতে হবে। এই ফর্মটি পূরণ করুন এবং বিমা পলিসির নিকটতম শাখায় জমা দিন। এই কাজে আপনি একজন বিমা এজেন্টের সেবাও নিতে পারেন। অনেক কোম্পানি বিমার বিপরীতে ঋণ দেওয়ার জন্য অনলাইন সুবিধাও দেয়। আপনি কোম্পানির পোর্টালে গিয়ে অনলাইনে ঋণের জন্য আবেদন করতে পারেন।
আপনি কতটা ঋণ পাবেন?
বিমা কোম্পানিগুলি সমর্পণ মূল্যের ভিত্তিতে ঋণের পরিমাণ নির্ধারণ করে। সাধারণত, জীবন বিমার সমর্পণ মূল্যের ৯০% পর্যন্ত ঋণ নেওয়া যেতে পারে। একটি পরিশোধিত পলিসিতে ঋণের সীমা ৮৫ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে। যদি কোনো কোম্পানি ইউলিপের বিপরীতে ঋণ দেয়, তাহলে ঋণের পরিমাণ তার তহবিলের মূল্যের ওপর নির্ভর করে। সব বিমা কোম্পানি ঋণ সুবিধা প্রদান করে। শুধুমাত্র মেয়াদী বিমার বিপরীতে ঋণ সুবিধা পাওয়া যায় না।
সুদের হার কী হবে?
বর্তমানে বিমা কোম্পানিগুলো ঋণের ওপর ৯-১০ শতাংশ হারে ঋণ দিচ্ছে। ব্যাংক ইত্যাদিতে এই হার ১২-১৮ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে। এই প্রেক্ষাপটে বিমার জন্য নেওয়া ঋণ সাশ্রয়ী এবং সস্তা। বেশিরভাগ বিমা কোম্পানি তাদের হার গণনা করে অর্ধবার্ষিক চক্রবৃদ্ধি সুদের ভিত্তিতে। বেশিরভাগ বিমা কোম্পানি ১০% হারে ঋণ দিচ্ছে এবং ঋণ দুটি কিস্তিতে পরিশোধ করতে হবে। ঋণের মেয়াদ কত হবে, তা নির্ভর করবে বিমার মেয়াদের ওপর। আপনার যদি ৫ বছরের বিমা থাকে তবে আপনি ৫ বছরের জন্য ঋণ নিতে পারেন। যেকোন অবস্থাতেই মেয়াদপূর্তির আগে ঋণ পরিশোধ করতে হবে।