বাংলায় কয়েক কোটি কৃষকের জন্য দারুণ খবর। কৃষক বন্ধু প্রকল্পের টাকা দেওয়া শুরু করল রাজ্য সরকার। আর এই খবর জানিয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কৃষক বন্ধু প্রকল্পে রাজ্য সরকার কৃষকদের আর্থিক সাহায্য় দেয়। বছরে দুটি কিস্তিতে টাকা দেওয়া হয়। যে সমস্ত কৃষকের এক একর বা তার বেশি চাষযোগ্য জমি রয়েছে তাঁরা বছরে ১০ হাজার টাকা পান। যে সমস্ত কৃষকের এক একর বা তার কম চাষযোগ্য জমি রয়েছে তাঁরা ৪ হাজার টাকা করে পান। প্রতি বছর দুবার, অর্থাৎ খরিফ ও রবি মরসুমে দুটি কিস্তিতে এই টাকা কৃষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি পাঠানো হয়।
মুখ্যমন্ত্রী কী জানিয়েছেন?
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মঙ্গলবার এক্স হ্যান্ডলে একটি পোস্ট শেয়ার করেন। সেখানে তিনি লেখেন, 'আমি অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, আসন্ন খরিফ মরসুমের জন্য কৃষক বন্ধু (নতুন) প্রকল্পে সহায়তা প্রদান আজ থেকে শুরু করা হল। কৃষক বন্ধু (নতুন) প্রকল্পে রাজ্যের কৃষকদের ও বর্গাদারদের বছরে দুই কিস্তিতে একর প্রতি ১০ হাজার টাকা সহায়তা দেওয়া হয়। যাঁদের কম জমি আছে, তাঁরাও আনুপাতিক হারে (ন্যূনতম ৪ হাজার টাকা) সহায়তা পান। এবারে রাজ্যের ১ কোটি ৯ লক্ষ কৃষক ও বর্গাদার এই সহায়তা পাচ্ছেন। তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে মোট ২,৯৩০ কোটি টাকা সরাসরি দেওয়া হচ্ছে। এই বছরের শেষের দিকে রবি মরসুমের জন্যও একই পরিমাণ টাকা দেওয়া হবে। ২০১৯ সালে চালু হবার পর থেকে এই প্রকল্পে মোট ২৪,০৮৬ কোটি টাকা আমরা আমাদের কৃষকদের কাছে পৌঁছে দিয়েছি। এজন্য আমি গর্বিত! শুধু তাই নয়, ১৮ বছর থেকে ৬০ বছর বয়স পর্যন্ত কোনো কৃষক মারা গেলে তাঁর পরিবারকে সামাজিক সুরক্ষা দেবার উদ্দেশ্যে ২ লক্ষ টাকা সহায়তাও দেওয়া হয়। এই খাতেও বাংলার প্রায় ১ লক্ষ ৪৬ হাজার কৃষক পরিবার মোট ২,৯২০ কোটি টাকা সহায়তা পেয়েছেন। আমি সবসময় মনে করি, আমাদের কৃষকরা আমাদের সম্পদ, আমাদের গর্ব। আমাদের সরকার আগামীদিনেও এভাবেই তাঁদের সার্বিক কল্যাণের উদ্দেশ্যে কাজ করে যাবে।' (অসম্পাদিত)
টানা বৃষ্টিতে এমনিতেই ক্ষতির মুখে পড়েছেন পশ্চিম মেদিনীপুর, হুগলি, পূর্ব বর্ধমান সহ রাজ্যের একাধিক জেলার কৃষকরা। এছাড়াও, হিমঘরে আলুর দাম না পাওয়াতে ক্ষতির পরিমাণ আরও বেড়েছে। কোল্ড স্টোরে আলু মাত্র ৬ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তাই এই সরকারি সহায়তা পেলে উপকৃত হবেন বহু কৃষক। তাঁদের চাষবাদের কাজে এই টাকা লাগতে পারে। কারণ, এই সময় ধান রোয়ার কাজ চলছে।
আপনি স্টেটাস চেক করতে পারেন কৃষক বন্ধুর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট krishakbandhu.net এ যান। কৃষকবন্ধু প্রকল্পের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে নথিভুক্ত কৃষকদের তথ্যের একটি অপশন পাওয়া যাবে। এই অপশনে ক্লিক করুন। আপনাকে অন্য পেজে নিয়ে যাওয়া হবে। আপনার বৈধ ভোটার আইডি কার্ড নম্বর দিতে হবে ও সার্চ বটনে ক্লিক করতে হবে। যদি Transaction Successfully লেখা দেখা যায় তাহলে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ব্যালেন্স চেক করে দেখতে হবে। আপনি যদি কোনও রেকর্ড খুঁজে না পান, তাহলে আপনাকে আপনার স্টেটাস সম্পর্কে জানতে CSC বা কৃষি সহকারী পরিচালকের অফিসে যেতে হবে। কৃষক বন্ধুর টাকা ঢুকেছে কি না তা জানার সব থেকে সহজ উপায় হল ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের স্টেটমেন্ট চেক করা। অথবা আপনার ফোনের মেসেজ বক্স চেক করুন। যদি আপনার ফোনের মেসেজে অথবা অ্যাকাউন্ট স্টেটমেন্ট ২০০০ টাকার ঢোকার মেসেজ আসে তাহলে জানবেন যে কৃষক বন্ধুর টাকা ঢুকেছে।