আপনি নিশ্চয়ই জানেন যে লক্ষ লক্ষ বছর আগে জুরাসিক যুগে, পৃথিবীতে ডাইনোসর এবং ম্যামথের মতো বিশাল বিশাল প্রাণীরা বসবাস করত। পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় এই বিশালাকার প্রাণীদের দেহাবশেষ পাওয়া গিয়েছে, যা দেখে তাদের বিশাল আকৃতির সম্পর্কে অনুমান করা যায়।
কিন্তু আপনি কি জানেন যে, ম্যামথ এবং ডাইনোসরের আমলে পৃথিবীতে বিশালাকার কুমিরও ছিল, যেগুলো এতটাই ভয়ানক ছিল যে ডাইনোসরদেরও মেরে খেয়ে ফেলত!
এই বিশালাকার কুমিরের প্রজাতির নাম সারকোসুকাস (Sarcosuchus)। এগুলি এখনকার কুমিরের চেয়ে কয়েকগুণ ভারী এবং বড় ছিল। সারকোসুকাসের দৈর্ঘ্য ছিল প্রায় ৯.৫ মিটার বা প্রায় ৩১ ফুট, আর এগুলির ওজন ছিল প্রায় চার টন অর্থাৎ ৩৬০০ কেজিরও বেশি।
এই বিশালাকার কুমিরের চোখ ছিল দুরবীনের মতো এবং তারা রাতের বেলাতেও সহজেই তাদের শিকারকে দেখতে পেত। তাদের উপরের চোয়ালে ৩৫টি দাঁত ছিল এবং নীচের চোয়ালে ৩১টি দাঁত ছিল।
বিজ্ঞানীদের বিশ্বাস, সারকোসুকাস (Sarcosuchus) তার বিশাল চোয়ালে চাপ দিলে একবারে ১০০টিরও বেশি মানুষের হাড় ভেঙে ফেলতে পারত!
গবেষকদের মতে, সারকোসুকাস (Sarcosuchus) অল্প বয়সে মাছকে তাদের শিকারে পরিণত করত, কিন্তু বড় হওয়ার পর তারা ভয়ঙ্কর, দৈত্যাকার ডাইনোসরকেও নিজেদের শিকারে পরিণত করত।
গবেষকরা বলছেন, সম্পূর্ণরূপে বিকশিত হওয়ার পর এই সারকোসুকাসের (Sarcosuchus) একটি পূর্ণবয়স্ক থেরোপড ডাইনোসরের ঘাড় ভেঙে দেওয়ার ক্ষমতা ছিল।
মানুষ এই বিশালাকার কুমির (Sarcosuchus) সম্পর্কে প্রথম জানতে পারে ১৯৫০ সাল নাগাদ যখন আলবার্ট ফেলিক্স নামে একজন ফরাসি গবেষক সাহারা মরুভূমিতে এর মাথা এবং দাঁতের বেশ কয়েকটি নমুনা খুঁজে পান।
এই আবিষ্কারের পর এটি বিশ্বাস করা হয়েছিল যে, এই দৈত্য প্রাণীরা লক্ষ লক্ষ বছর আগে জুরাসিক যুগে উত্তর আফ্রিকার ঘন অরণ্যে বসবাস করত, যা এখন সাহারা মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে।