সোশ্যাল মিডিয়া অনেক কিছুই করতে পারে। বদলে দিতে পারে কারও ভাগ্য। মুছিয়ে দিতে পারে কারও চোখের জল। হাসি ফোটাতে পারে মুখে। তেমনই নজির তৈরি করেছিল দিল্লির 'বাবা কা ধাবা' নামে এক অখ্যাত খাবারের দোকান নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ার হইচই। লকডাউনে কোনওক্রমে দোকান আর সংসার চালানো বৃদ্ধের চোখে ছিল জল।
উত্তর দিল্লির মালভিয়া নগরের শিবালিক কলোনি। এখনেই রয়েছে 'বাবা কা ধাবা'। স্থানীয়রা জানলেও তেমন করে কেউ গুরুত্বই দিত না এক বৃদ্ধ ও বৃদ্ধার চালানো ওই দোকানকে। কিন্তু সেই দোকানেই উপচে পড়ে ভিড়। সৌজন্যে সোশ্যাল মিডিয়া।
কয়েক মিনিটের ভিডিওর সৌজন্যে রাতারাতি সোশ্যাল মিডিয়ার তারকা হয়ে গিয়েছিলেন। বলিউড তারকারাও তাঁর ছোট্ট দোকানে যাওয়ার অনুরোধ করেছিলেন। নাম, যশ, খ্যাতি, অর্থের পাশাপাশি বিতর্কও সঙ্গী হয়েছে ‘বাবা কা ধাবা’ খ্যাত কান্তা প্রসাদের। ইউটিউবার গৌরব ওয়াসনের দৌলতেই বিখ্যাত হয়েছিলেন কান্তা প্রসাদ।
সেই গৌরবের বিরুদ্ধেই বাবা কা ধাবার অনুদান নয়ছয় করার অভিযোগ উঠেছিল। অভিযোগ দায়ের করেছিলেন খোদ ধাবার মালিক কান্তা প্রসাদ ও তাঁর স্ত্রী। অনুদান সংগ্রহ করার নামে কয়েক লক্ষ টাকা প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে। গত ৩১ অক্টোবর গৌরবের বিরুদ্ধে মালব্যনগর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন 'বাবা কা ধাবা'-র মালিক কান্তা প্রসাদ। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতেই মামলা দায়ের করে পুলিশ।
এবার সোশ্যাল মিডিয়ায় বিখ্যাত 'বাবা কা ধাবা' মালিক কান্তা প্রসাদ ফের খবরের শিরোনামে ৮০ বছরের বৃদ্ধ এবার রেস্তোঁরা খুলে ফেললেন। নতুন রেস্তোঁরায়, বাবা সুরক্ষার কথা বিবেচনা করে সিসিটিভি ক্যামেরাও ইনস্টল করেছেন। সম্প্রতি, বাবা বলেছিলেন যে তাঁর প্রাণের ঝুঁকি রয়েছে। তাঁকে হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
বাবা কা ধাবার কান্ত প্রসাদ পুরান ধাবা থেকে এক মিনিট দূরে তাঁর নতুন রেস্তোঁরা শুরু করেছেন। এর আগে বাবার হনুমান মন্দিরের সামনের রাস্তার পাশে একটি ছোট্ট দোকানে ছিল। বাবা কা ধাবার নতুন রেস্তোঁরাতে একটি পৃথক কাউন্টার রয়েছে, যার উপরে কান্ত প্রসাদ বসে রয়েছেন। বাবা বলেছেন যে এই রেস্তোঁরাটিতে রান্না করার পাশাপাশি তিনি নিজেই অ্যাকাউন্টস সামলাবেন।
রেস্তোরাঁটিকে মনের মত করে সাজিয়েছেন তিনি। পুরনো ধাবাতে বাবা কান্তা প্রসাদ একটি ছোট্ট ঘুমটিতে রান্না করতেন এবং লোকেরা বাইরে দাঁড়িয়ে খাবার খেতেন। এই নতুন রেস্তোঁরাটিতে মানুষের বসার জন্য কেবল ভাল ব্যবস্থা নেই, রান্নার জন্য বড় রান্নাঘরও রয়েছে।
কান্তা জানান, বাবার কা ধাবা মানুষের কাছ থেকে অনেক ভালোবাসা পেয়েছিল। এর সাথে বাবার ধাবাতে গ্রাহকদের সংখ্যাও উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। এই বিবেচনা করেই তার নতুন রেস্তোঁরা খোলায যেখানে ২ থেকে ৩ জনের একটি কর্মীদলও রেখেছেন। বাবা বলেছেন যে এই নতুন রেস্তোঁরায় তিনি নিজেও রান্না করবেন। এছাড়াও, কর্মীরা তাঁকে সহায়তা করবে। গ্রাহকরা ইতিমধ্যে বাবার নতুন রেস্তোঁরায় আসতে শুরু করেছেন। বাবা ঠিকানা পরিবর্তন করলেও খাবারের মেনু এবং দাম একই রেখেছেন।