দৃষ্টিহীন আইএএস রক্তদান করে নজির গড়লেন। শনিবার মেদিনীপুরে। সবার তাঁর ভূমিকার প্রশংসা করেন। তিনি এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। আর তখন ঠিক করেন, রক্তদান করবেন।
মঞ্চ আলো করে তখন সবাই বসেছিলেন। উদ্বোধনী প্রদীপ প্রজ্জ্বলন হয়ে একদিকে যখন উদ্বোধনী অনুষ্ঠান চলছে তখনই নিরাপত্তারক্ষীদের সাহায্য নিয়ে তিনি গটগট করে নেমে গেলেন রক্তদান শিবিরে। যেখানে হচ্ছে সেই স্থানে। সেখানে গিয়েই সটান শুয়ে পড়লেন একটি খাটে। রক্তদানের উদ্দেশ্যে।
তিনি আর কেউ নন, তিনি হলেন দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী আইএএস তথা পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার অতিরিক্ত জেলাশাসক কেমপা হেনিয়া। যার মনের জোর অন্যান্য অনেককেই হার মানিয়ে দিয়েছে।
এদিন জেলা কালেক্টরেট চত্বরেই রক্তদান শিবির ও স্বাস্থ্য পরিক্ষা শিবিরের আয়োজন করেছিল পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কর্মচারী ফেডারেশনের জেলা শাখা। যার উদ্বোধন করেন মন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাতো। হাজির ছিলেন অন্যান্য আধিকারিক, সমাজসেবী থেকে শুরু করে সংগঠনের প্রতিনিধিরা।
সেই রক্তদান শিবিরেই প্রথম রক্তদাতা হিসেবে নজর কাড়েন কেমপা হেনিয়া। তাঁর কথায়, রক্তদান হল জীবনদান। বহুদিন ধরেই তার অভ্যাস আছে রক্তদান করার। প্রতি ছয় মাস অন্তরই তিনি সাধারনতঃ রক্তদান করে থাকেন। তিনি বলেছেন, সপ্তাহ খানেক আগে ফেডারেশনের জেলা সভাপতি অনুপ মান্না আমার অফিসে এসে শিবিরে হাজির থাকার অনুরোধ করেন। তখনই ঠিক করে নিই যে আমি রক্ত দেব। এদিন সেটাই করেছি মাত্র।
তবে দৃষ্টিহীন এই আইএএসের ভূমিকা নিঃসন্দেহে নজর কেড়েছে সকলের। এদিন রক্তদান শিবিরে মোট ১৩৭ জন রক্তদান করেছেন।
এই অফিসার গত একমাস আগে নিযুক্ত হয়েছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের অতিরিক্ত জেলাশাসক হিসেবে। নিজের নিরাপত্তারক্ষী ছাড়াও সঙ্গে একজন কর্মী থাকেন সর্বক্ষণের। যিনি হাতে ধরে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যান। অফিসে সহযোগিতা করেন। এদিন তাঁর ওই ভূমিকা চারিদিকে প্রশংসিত হচ্ছে। এখনও অনেক মানুষের মনে রক্তদান সম্পর্কে ভুল ধারণা রয়েছে। সেই ধারণা ভাঙতে এদিনের ঘটনা কাজ দেবে বলে মনে করা হচ্ছে। অনেক সময় রক্তের অভাব দেখা দেয়। তবে খুব সহজেই সেই সমস্যার সমাধান করা যায়। রক্ত দিলেই সেই সঙ্কট অনায়াসে মোকাবিলা করা যায়।