Advertisement

Chanchal Choudhary Emotional Post: বাড়ির সদস্যকে অন্যের হাতে দিলেন চঞ্চল, চৌধুরী পরিবারের চোখে জল

'সত্যি,আজ যখন ওকে বিদায় দিলাম,খুব কষ্ট হচ্ছিল আমার,শান্তার….শুদ্ধ’র চোখটাও ছল ছল করছিল।' পরিবারের সদস্যকে বিদায় জানিয়ে ফেসবুকে লিখলেন চঞ্চল চৌধুরী।

Chanchal Choudhary
Aajtak Bangla
  • কলকাতা ,
  • 13 Apr 2023,
  • अपडेटेड 1:15 PM IST
  • নিজের প্রিয় চার চাকাকে বিদায় জানালেন চঞ্চল চৌধুরী।
  • ফেসবুকে লিখলেন বাংলাদেশের অভিনেতা।

মন খারাপ বাংলাদেশের অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরীর। বাড়ির প্রিয় সদস্যকে চিরকালের মতো বিদায় জানালেন।  অভিনেতা নিজেই লিখলেন,'নানান অজুহাতে আমি ওকে এই ছয়মাস ছাড়িনি। সত্যি,আজ যখন ওকে বিদায় দিলাম,খুব কষ্ট হচ্ছিল আমার,শান্তার….শুদ্ধ’র চোখটাও ছল ছল করছিল।''হাওয়া'র অভিনেতার ফেসবুক পোস্ট রীতিমতো ভাইরাল হয়েছে ফেসবুকে। বহু মানুষ তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছেন। অভিনেতার আবেগের প্রশংসাও করেছেন। 

অভিনেতা আসলে বিদায় জানিয়েছেন নিজের পুরনো চার চাকাকে। সেই বিদায়পর্বের কথা ফেসবুকে লিখতে গিয়ে নিজের ছোটবেলার কথা স্মরণ করেছেন। ছোটবেলায় ছোট ছোট চাওয়া-পাওয়াগুলির কথা তুলে ধরেছেন। যেগুলি আর পাঁচটা কিশোর-কিশোরীর মতোই। চঞ্চল বলেছেন, তাঁর একটা সাইকেল কেনার ইচ্ছা ছিল। তবে বাবার আর্থিক স্বচ্ছলতা না থাকায় তা পূরণ হয়নি। তিনি ফেসবুকে লিখেছেন,'হাফ প্যাডেল,ফুল প্যাডেল করে ছোটবেলায় যখন সাইকেল চালানো শিখেছিলাম,তখনই মনের মধ্যে একটা বড় স্বপ্ন জন্ম নিয়েছিল,একদিন নিজের একটা সাইকেল হবে। কিন্তু হয়নি…বাবার আর্থিক অস্বচ্ছলতার কথা বিবেচনা করে কোনদিন বাবাকে বলতে পারিনি,বাবা,একটা সাইকেল কিনে দাও। তখন হাই স্কুলে পড়ি। বাড়ি থেকে স্কুল মাইল দুয়েক দূরে। অনেকেই সাইকেল চালিয়ে স্কুলে যেতো আসতো, কিন্তু আমার ইচ্ছা তখন পূরণ হয়নি। ঠিক অন্যের মটর সাইকেল চেয়ে নিয়ে,চালানো শিখেছিলাম হাফ প্যান্ট পড়া কিশোর বয়সেই। তখন রাতে ঘুমের মধ্যে স্বপ্ন দেখতাম নিজের মটর সাইকেল চালাচ্ছি…… সে স্বপ্নও অধরাই থেকে গেছে। কারণ,আমাদের কোন সামর্থ্য ছিল না। তারপর থেকে অসম্ভব কোন কিছু প্রাপ্তির স্বপ্ন দেখিনি কোনওদিন। ভাগ্য বা যোগ্যতায় যখন যতটা অর্জন করতে পেরেছি,সেটা নিয়েই খুব খুশি থেকেছি।'


অভিনেতা হওয়ার পর চার চাকা গাড়ির স্বপ্নপূরণ করেছেন চঞ্চল। তা-ও খানিকটা বাধ্য হয়ে। সেই কাহিনি স্মরণ করে তিনি লিখেছেন,'অভিনয়কে যখন আমি ভালোবাসা আর নেশার সঙ্গে পেশা হিসেবে গ্রহণ করার যোগ্যতা অর্জন করলাম, তখন কোনওদিনই নিজের একটা গাড়ি হবে একথা ভাবিনি। পেশাগত কর্ম ব্যস্ততা যখন বাড়তে থাকলো,অভিনয়ে বড় বড় চরিত্র প্রাপ্তির সঙ্গে পোশাকের ব্যাগের আকার আর ওজনটাও যখন ভারী হতে থাকল, তখন শ্যুটিং ইউনিটের মাইক্রো বাসেই যাতায়াত করতাম। ভারী ব্যাগ কাঁধে নিয়ে,নির্দিষ্ট কোন যায়গায় গিয়ে মাইক্রো বাসে ওঠা বা শ্যুটিং শেষে গভীর রাতে নামিয়ে দেবার পর সেখান থেকে বাসায় ফিরতে ফিরতে এক সময় কাঁধের ব্যাথাটা যখন স্থায়ী রুপ ধারণ করল,তখনই সাহস করেছিলাম একটা গাড়ি কেনার। ২০০৭ সালে নিজ সামর্থ্যের বাইরে গিয়ে,ভাইয়ের কাছ থেকে লোন, প্রোডিউসারের কাছ থেকে আগাম সম্মানী আর ব্যাংকের লোন নিয়ে একটা গাড়ি কিনেছিলাম। তখন ওই গাড়িটাই হয়ে গেল আমার অর্জিত সবচেয়ে বড় সম্পদ। শুধু আমার নয়,এর আগে আমার বৃহত্তর পরিবারেও কেউ গাড়ি কেনেনি বা সেই সামর্থ্য বা সাহস কারো হয়নি। প্রথম মাসে ড্রাইভারের বেতন দেবার সময় অন্য রকম একটা ভালো লাগা কাজ করেছিল আমার মধ্যে যে,আমার কষ্টের উপার্জনের টাকার বেতনে আরেকটা পরিবার চলবে সেদিন থেকে। গ্রামের বাড়িতে নতুন গাড়ি নিয়ে যাওয়া,আর বাবা মাকে নতুন গাড়িতে ওঠানোর মুহূর্তটা ছিল জীবনের সবচেয়ে বড় উৎসব। এই গাড়িতে করেই শুদ্ধ’কে জন্মের পর হাসপাতাল থেকে নিজে ড্রাইভ করে বাসায় নিয়ে এসেছিলাম।'  

Advertisement

আরও পড়ুন- 'এখানে জন্মেছি, দেশ ছেড়ে যাব কেন?' হিংসা-ধ্বস্ত বাংলাদেশে প্রশ্ন চঞ্চলের

সেই গাড়িকে ১৬ বছর পর বিদায় জানালেন অভিনেতা। তাঁর কথায়,'দীর্ঘ ১৬ বছর,গাড়িটা আমার পরিবারের সদস্য হয়ে থাকলো। অনেক মায়া আর ভালোবাসা জন্মে গিয়েছিল এই জড় বস্তুটির প্রতি। মাঝে মধ্যে সে বিগড়ে যেত,অবাধ্য হতো….তারপর আবার যত্ন নিয়ে ওকে ঠিক করতাম। মাস ছয়েক আগে নতুন একটা গাড়ি যখন আমার পরিবারের নতুন সদস্য হল, তখনই হয়তো ও বুঝতে পেরেছিল,ওকে আমরা ছেড়ে দেবো অন্য কারো কাছে। নানান অজুহাতে আমি ওকে এই ছয়মাস ছাড়িনি। সত্যি,আজ যখন ওকে বিদায় দিলাম, খুব কষ্ট হচ্ছিল আমার,শান্তার…. শুদ্ধ’র চোখটাও ছল ছল করছিল। কাগজ পত্রের কাজ শেষ করে,ওর নতুন মালিকের হাতে ওকে যখন বুঝিয়ে দিচ্ছিলাম,আমি কোন কথা বলতে পারছিলাম না। শুধু অনুরোধ করলাম,তাকে যেন একটু আদর যত্ন করে। ওকে নিয়ে যাবার পর,খালি গ্যারেজটাতে দাড়িয়ে চোখ বন্ধ করে ভাবছিলাম,জীবের সঙ্গে জড়ের এই সম্পর্কটা আসলে কি ? শুধুই মায়ার?? ভাবছিলাম,ওকে ছেড়ে দিয়ে আমার যে কষ্ট হচ্ছে,ও কি সেটা বুঝতে পারছে? হয়তো পারছে না,হয়তো পারছে…কিন্তু আমরা তিনজন গেইটের রাস্তায় দাড়িয়ে ছিলাম,যতক্ষন পর্যন্ত ওর চলে যাওয়াটা দেখা যায়…'

 
একটা গাড়ির প্রতি অভিনেতার এমন আবেগের প্রশংসা করেছেন নেটিজেনরা। কেউ লিখেছেন,'মানুষের আবেগগুলো মনে হয় এমনটাই হয়।' কারও লেখায়,'জীবকে ছাড়িয়েও যে ভালোবাসার পূর্ণতা পেতে পারে তারই দৃষ্টান্ত যেন এই লেখনী।' কেউ লিখেছেন,'মায়া অদ্ভুত একটা অনুভূতির নাম।'
 

Read more!
Advertisement

RECOMMENDED

Advertisement