পাত্র চাই- 'স্কুল শিক্ষক ব্যতীত'। রবিবার দৈনিক পত্রিকার পাত্রপাত্রীর এহেন বিজ্ঞাপন এখন নেট মাধ্যমের চর্চার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। যে শিক্ষকদের বিয়ের বাজারে একটা সময় কদর ছিল তাঁরাই এখন ব্রাত্য!
বিজ্ঞাপনের বয়ান,পাত্রী সরকারি চাকরিরতা। কর্মসূত্রে থাকেন ধূপগুড়িতে। নিজের বাড়ি উত্তর দিনাজপুরে। উত্তরবঙ্গেই সরকারি চাকুরে পাত্র খুঁজছেন ৩২ বছরের ওই মহিলা। ওই বিজ্ঞাপনেই লেখা,'উপযুক্ত পাত্র কাম্য (স্কুল শিক্ষক ব্যতীত)'। এই বিজ্ঞাপনই এখন ভাইরাল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এই তো সে দিনের ঘটনা। আলিপুরদুয়ারে প্রাথমিকের এক শিক্ষককে ঋণ দিতে গিয়ে টেট পাশের নথি চেয়েছিল ব্যাঙ্ক। এ বার 'পাত্র চাই'বিজ্ঞাপনেও স্কুল শিক্ষকরা আর 'মোস্ট এলিজিবল' থাকলেন না।
আসলে এসএসসি থেকে টেট! একের পর এক নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। তদন্ত করছে সিবিআই। ইতিমধ্যেই অনেকের চাকরি গিয়েছে। চলতি মাসেই প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে হাইকোর্টের নির্দেশে অতিরিক্ত তালিকায় থাকা ২৬৯ জনের চাকরি গিয়েছে। উত্তর দিনাজপুরেরই ৪০ জনের চাকরি হারিয়েছেন। এর মধ্যে ২০১৪ সালের প্রাথমিক টেট পাশ শিক্ষকদের সমস্ত নথি চেয়ে পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। ফলে আগামী দিনেও বহু শিক্ষকদের চাকরি নিয়ে টানাটানি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকে। ভবিষ্যৎ ভেবেই কি শিক্ষক পাত্র আর কাম্য নন?
ওই পাত্রী উত্তরবঙ্গের। সেখানকার বাসিন্দা রাজ্যের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর কন্যা অঙ্কিতা অধিকারীর চাকরি গিয়েছে। বেতনও ফেরত দিতে হয়েছে তাঁকে। অঙ্কিতার ফেরত দেওয়া বেতনও আদালতের নির্দেশে পাবেন মামলাকারী ববিতা সরকার।
এক শিক্ষকের আক্ষেপ,'একটা সময় শিক্ষকরা ছিলেন 'মোস্ট এলিজিবল ব্যাচেলর'। শিক্ষক পাত্রকে মোটা অঙ্কের পণও দিতে কার্পণ্য করতেন না পাত্রীর অভিভাবকরা। কিন্তু শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে প্রতিদিন হাইকোর্টের রায়ে শঙ্কিত মেয়ের মা-বাবারা। শিক্ষকের চাকরিই এখন পাকা নয়। কে জানে কখন হাইকোর্টের নির্দেশে চাকরি খোয়াতে হয়!'