২৮ অগাস্ট ১৯৪৯ সালে ভারতের গভর্নর জেনারেলের সঙ্গে কোচবিহারের মহারাজা জগদ্দীপেন্দ্র নারায়ণ ভূপবাহাদূরের একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সেই চুক্তি ‘কোচবিহার রাজ্যের ভারতভুক্তি চুক্তি’ নামে পরিচিত। সেই চুক্তি অনুসারে ১২ সেপ্টেম্বর ১৯৪৯ সালে কোচবিহার রাজ্য ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয়। তবে চুক্তির দিনটিকে আলাদা করে মান্যতা দেওয়া হয়।
আরও পড়ুনঃ Morning Headche: সকালে উঠেই শুরু হয় ভয়ঙ্কর মাথাব্যথা? জানুন এর থেকে বাঁচার উপায়
কোচবিহারের আদি ইতিহাস
বর্তমান পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম জেলা কোচবিহার অতীতে বৃহত্তর কামরূপ রাজ্যের অন্তর্গত ছিল। বিভিন্ন গবেষণা ও ইতিহাস ঘেঁটে জানা যায়, কামরূপের রাজধানী দুই ভাগ হয়ে গেলে কোচবিহার ‘কামতা’-র অন্তর্গত হয়ে পড়ে। সপ্তদশ শতাব্দীর মধ্যভাগে রচিত শাহজাহাননামা বইয়ে কোচবিহার নামটির উল্লেখ পাওয়া যায়। অষ্টাদশ শতাব্দীতে একটি মানচিত্রে কোচবিহারকে ‘বিহার’ নামে উল্লেখ করা হয়।
কোচবিহারের ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্তি
১৭৭২ সালে ভুটানের সঙ্গে যুদ্ধ বাধে কোচবিহারের। সেই সময় কোচবিহারের রাজা ধৈর্যেন্দ্রনারায়ণ ওয়ারেন হেস্টিংসের সঙ্গে একটি চুক্তি করতে বাধ্য হন। সেই চুক্তির ফলে কোচবিহার ব্রিটিশদের করদ রাজ্যে পরিণত হয়। ১৭৭৩ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সঙ্গে একটি চুক্তির মাধ্যমে রাজ্যটি 'কোচবিহার' নামে পরিচিত হয় এবং এর রাজধানীর নাম হয় 'বিহার ফোর্ট'। কোচ জাতির আবাস হিসেবেই 'কোচবিহার শব্দটির আমদানি।
কোচবিহারের ভারতভুক্তি
১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীনতা লাভ করে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত হলে পশ্চিমবঙ্গ আলাদা রাজ্য হয়। এরপর তার ভূখণ্ডের মধ্যে থাকা কোচবিহারকে নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রয়োজন হয়ে পড়ে। ১৯৪৯ সালের ২৮ অগাস্ট রাজা জগদ্দীপেন্দ্রনারায়ণ কোচবিহার রাজ্যকে ভারতের সঙ্গে সংযুক্ত হতে অনুমতি দেন। ওই বছর ১২ সেপ্টেম্বর থেকে কোচবিহার ভারতের কমিশনার শাসিত প্রদেশে পরিণত হয়। ১৯৫০ সালের ১ জানুয়ারি কোচবিহার স্থায়ীরূপে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের একটি জেলায় পরিণত হয়।
আরও পড়ুনঃ Dolle Khorsani: মারাত্মক ঝাল 'ডল্লে খোরসানি', কালিম্পঙের এই লঙ্কায় মজেছে আরব দুনিয়া
কোচবিহারের ভারতভুক্তি চুক্তি ৭৪ তম বছরে পা দিল
সেই অনুসারে এবার কোচবিহারের ভারতভুক্তির ৭৩ বছর পূরণ করে ৭৪ তম বছরে পা দিল। গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশনের (GCPA) তরফে কোচবিহারের নিশিগঞ্জে পান্থনিবাসের সামনে জিসিপিএ’র পতাকা উত্তোলন করেন সংগঠনের মাথাভাঙ্গা-২ ব্লক সম্পাদক তথা রাজবংশি ডেভলপমেন্ট ও কালচারাল বোর্ডের সদস্য পরিমল বর্মন। স্থানীয়রাও উপস্থিত ছিলেন। এদিন জিসিপিএ’র পতাকা উত্তোলনের পর পরিমল বর্মন জানান, কোচবিহারবাসীর স্বার্থে ভারতভুক্তি চুক্তির সর্বাত্মক রূপায়নের দাবি রয়েছে। এখনও যা যথাযথভাবে করা হয়নি। ভারতভুক্তি চুক্তিতে যে সব সুযোগ সুবিধা কোচবিহারবাসীর পাওয়ার কথা, তা থেকে বাসিন্দারা এখনও বঞ্চিত বলে অভিযোগ তাঁর। এ ছাড়াও জেলার আরও কিছু জায়গায় এদিনটি স্মরণ করা হয়েছে।