করোনার উপর ডেঙ্গি হানা
করোনা সংক্রমণের মাঝেই এবার ডুয়ার্সের আলিপুরদুয়ার জেলায় ডেঙ্গির হানা। জেলায় করোনা সংক্রমণের প্রভাব কিছুটা কমে আসার মধ্যেই ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে ডেঙ্গির সংক্রমণ। ইতিমধ্যেই জেলায় ডেঙ্গির থাবায় মৃত্যু হয়েছে একজনের। অন্যদিকে জেলার বিভিন্ন ব্লকে জাল বিস্তার করতে শুরু করে দিয়েছে ডেঙ্গি।বৃহস্পতিবার পর্যন্ত জেলায় মোট ১৪ জনের দেহে ডেঙ্গির সংক্রমণ হয়েছে।
ডেঙ্গিতে মৃত্যু একজনের
কালচিনি ব্লকের গারোপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের রাজাভাত চা বাগানে শালবাড়ি এলাকায় এক প্রৌঢ়ের মৃত্যু হয়েছে।গত সোমবার ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে কোচবিহারের মহারাজা জিতেন্দ্র নারায়ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন চেতানুল ঠাকুর (৫০)। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়।
ডেঙ্গি রোধে বৈঠক
জেলায় ডেঙ্গি রোগের সংক্রমণ ঠেকাতে বৃহস্পতিবার কালচিনি ব্লক অফিসে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেন জেলার স্বাস্থ্য আধিকারিকরা।বৈঠকেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় জেলায় ডেঙ্গি সংক্রমণ ঠেকাতে স্বাস্থ্য দপ্তরের করণীয় সঠিক পদক্ষেপ কি নেওয়া উচিত।
ডেঙ্গি সংক্রমণ ঠেকানো এখন চ্যালেঞ্জ
আলিপুরদুয়ার জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরিশ চন্দ্র বেরা জানিয়েছেন, জেলায় করোনা সংক্রমণের সাথে স্বাস্থ্য কর্মীদের নতুন চ্যালেঞ্জ ডেঙ্গি সংক্রমণ ঠেকানো। স্বাস্থ্য কর্মীরা দিনরাত কাজ করে চলেছেন।
ডেঙ্গিপ্রবণ আলিপুরদুয়ার
জেলার বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে আক্রান্তদের চিকিৎসা চলছে। গিরিশ চন্দ্র বেরা জানিয়েছেন জেলায় এখনও পর্যন্ত ডেঙ্গির হানায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। স্বাস্থ্য দপ্তরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০১৭ সালেও কালচিনিতে ডেঙ্গির সংক্রমণে তিন জনের মৃত্যু হয়েছিল।২০০৯ সালে আলিপুরদুয়ার জেলায় ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ১২০ জনের মৃত্যু হয়।স্বাভাবিক ভাবেই আলিপুরদুয়ার জেলাকে ম্যালেরিয়া এবং ডেঙ্গি প্রবন এলাকা বলে চিহ্নিত করে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর।
শুয়োরের খামারেই বিপদ
জেলার কালচিনি ব্লকটি ভুটান পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত। এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে সিংহভাগ মানুষ গোর্খা ও আদিবাসী জনজাতির হওয়ার দরুন তাঁদের মধ্যে শুয়োর প্রতিপালনের প্রবণতা রয়েছে।ব্লকের চা বাগান থেকে শুরু করে সাধারণ লোকালয়ের কোনায় কোনায় প্রচুর শুয়রের খামার থাকার দরুন ডেঙ্গির প্রাদুর্ভাবের সম্ভাবনা অনেক বেশি বলে জানিয়েছেন জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর।
লার্ভা নষ্ট করতে মনস্থির
জমা জলে ডেঙ্গির মশার লার্ভা নষ্ট করতে ইতিমধ্যেই যৌথ অভিযানে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর ও কালচিনি ব্লক প্রশাসন।ডেঙ্গি প্রবণ এলাকা গুলিকে চিহ্নিত করে বিশেষ স্বাস্থ্য শিবির চালু করা হবে।সঙ্গে লাগাতার সচেতনতার প্রচার চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন ও জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর ।
কোন ব্লকে কত আক্রান্ত
জেলায় মোট ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ১৪ জন। আলিপুরদুয়ার এক নম্বর ব্লকে ৩ জন। আলিপুরদুয়ার দুই নম্বর ব্লকে ২ জন। কুমারগ্রাম ব্লকে ১ জন। ফালাকাটা ব্লকে ২ জন। কালচিনি ব্লকে ৬ জন।