Siliguri Bengal Safari Park Kangaroo Death: শিলিগুড়ির বেঙ্গল সাফারি পার্কে ক্যাঙ্গারু মৃত্যুর পর কার্যত অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। আগেভাগে ইস্তফা দিয়ে চলে গিয়েছেন সহকারী জু সুপারভাইজার। কঠিন পরিস্থিতিতে তার ইস্তফা গ্রহণ করে নিয়েছে সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষও। আপাতত পার্কে সহকারী সুপারভাইজারের পোস্ট খালি রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে এই সময়ে অন্য ক্যাঙ্গারুটির দেখভালের প্রয়োজন, কিন্তু সহকারী জু-সুপারভাইজার না থাকায় তা ব্যহত হচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ গাড়ি-বাস-টয়ট্রেন বন্ধ হলেও দার্জিলিং পৌঁছে দেবে হেলিকপ্টার, নয়া উদ্যোগ রাজ্যের
উত্তরবঙ্গের মুখ্য বনপাল রাজেন্দ্র জাখর সংবাদমাধ্যমকে পুরো বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন। বুধবার তিনি বেঙ্গল সাফারি পার্কে যান সমগ্র বিষয়টি খতিয়ে দেখতে যান। এর আগেও সাফারি পার্কে কিছু কার্যকলাপ নিয়ে অভিযোগ উঠেছিল। পার্কের রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট নিয়োগে স্বজনপোষণের অভিযোগ ওঠে। অনেক ডক্টরেট প্রার্থী থাকা সত্ত্বেও কম শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পন্ন এক যুবতীকে দার্জিলিং চিড়িয়াখানা থেকে এখানে নিয়োগ দিয়ে নিয়ে আসা হয়। বিষয়টি নিয়ে দার্জিলিং চিড়িয়াখানাতে কর্মীদের মধ্যেও ক্ষোভ ছড়ায় বলে খবর মিলেছে। শিলিগুড়ির বেঙ্গল সাফারি পার্কেও এ নিয়ে ক্ষোভ দানা বাঁধছে।
দুদিন আগে বেঙ্গল সাফারি পার্কে মৃত্যু হয় উদ্ধার হওয়া অস্ট্রেলিয়ান ক্যাঙ্গারু অ্যালেক্সার। যেটি আরও একটি ক্যাঙ্গারুর সঙ্গে উদ্ধার হয়েছিল আরও কিছুদিন আগে। এরপর অপর ক্যাঙ্গারু জেভিয়ার একা হয়ে গিয়েছে। ঘটনায় বেঙ্গল সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বড়সড় গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে। আরেক সঙ্গী ক্যাঙ্গারু জেভিয়ারও অসুস্থ বলে জানা গিয়েছে। পার্ক কর্তৃপক্ষের একাংশের মতে, মাশরুম খেয়ে বিষক্রিয়ার কারণে মৃত্যু হয়েছে অ্যালেক্সার। আবার আরেক অংশের মতে, পার্কে আসা পর্যটকদের কাছ থেকে বাইরের ফাস্ট ফুড খাওয়ার ফলে মৃত্যু হয়েছে ওই ক্যাঙ্গারুর। তাও যদি হয় তাতেও সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষের গাফিলতি রয়েছে বলেই দাবি উঠেছে। অ্যালেক্সার মৃত্যুর পর ক্যাঙ্গারুর এনক্লোজারটি সম্পূর্ণ ঢেকে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি পর্যটকদেরও সেখানে যাতায়াতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার রাতে এলেক্সার মৃত্যু হয় বেঙ্গল সাফারি পার্কের ক্যাঙ্গারুর এনক্লোজারে। তার বয়স হয়েছিল মাত্র দু থেকে আড়াই বছর। প্রথমে ওই ক্যাঙ্গারুর মৃত্যুর খবরটি সম্পূর্ণভাবে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল বলে অভিযোগ পার্ক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। কিন্তু পরবর্তীতে এলেক্সা নামে ওই ক্যাঙ্গারুর মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে আসতেই হইচই পরে যায়। এমনকি উদবেগ প্রকাশ করেছেন রাজ্যের বন বিভাগের আধিকারিক থেকে রাজ্যের বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক পর্যন্ত। বেঙ্গল সাফারি পার্ক সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কয়েকদিন ধরেই অসুস্থ ছিল এলেক্সা। একইভাবে অসুস্থ ছিল জেভিয়ারও। কলকাতার পশু বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মতো চিকিৎসা চলছিল। তবে ক্যাঙ্গারুটির দেখাশোনায় গাফিলতি ছিল বলে অভিযোগ। প্রাণী দুটি অপুষ্টিতেও ভুগছিল বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুনঃ আসছে 'আচ্ছে দিন', সূর্যের আশীর্বাদে ৪ রাশির অপ্রতিরোধ্য সাফল্যের ইঙ্গিত
প্রসঙ্গত, এপ্রিল মাসের শুরুতেই মধ্যপ্রদেশের একটি চিড়িয়াখানা থেকে পাচারের সময় শিলিগুড়ি সংলগ্ন বেলাকোবা ও বৈকুন্ঠপুর ফরেস্ট ডিভিশনের থেকে তিনটে ক্যাঙ্গারু উদ্ধার করে বনবিভাগ। তার মধ্যে একটি ঘটনাস্থল থেকে মৃত্যু অবস্থায় উদ্ধার হয়েছিল। বাকি দুটিকে বেঙ্গল সাফারি পার্কে চিকিৎসার পর পর্যটকদের জন্য এনক্লোজারে ছাড়া হয়। কিন্তু ঠিক নয় মাসের মাথায় একটি ক্যাঙ্গারুর মৃত্যু হল। এ বিষয়ে রাজ্যের বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।