হেরোদের উপর চাপ মমতার
নির্বাচনে হেরেছেন বাবা রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। অন্যদিকে নির্বাচনে হার হয়েছে শিলিগুড়ির নেতা প্রাক্তন পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব এরও। আবার এই দুই নেতার মধ্যে রেষারেষি ঠান্ডা লড়াই বরাবরই রয়েছে। একজন অপরজনকে দেখতে পারেন না।
রবির মেয়েকে গৌতমের মাথায়
এবার দু'জনকেই ব্যাকফুটে ঠেলে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শিলিগুড়ির দায়িত্ব দিয়ে দিলেন রবীন্দ্রনাথ ঘোষের মেয়ে পাপিয়া ঘোষকে। নতুন জেলা সভানেত্রী হয়েই তড়িঘড়ি তিনি গৌতম দেবের বাড়িতে গিয়ে তাঁর আশীর্বাদ-পরামর্শ চেয়ে আসলেন। হাসিমুখে অবশ্য গৌতমবাবু সব রকম সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু দলের অনেকেই মনে করছেন সহযোগিতা ততটা মিলবে না।
দলের পরিস্থিতি কি শুধরোবে ? সন্দেহ দলেই
কিন্তু দীর্ঘদিনের নেতা গৌতম এবং বিদায়ী জেলা সভাপতি রঞ্জন সরকারকে সরিয়ে তুলনামূলক অপেক্ষাকৃত নবীন ও পাশাপাশি কম সক্রিয় পাপিয়া ঘোষকে দায়িত্ব দেওয়া হবে। ফলে দলীয় সংগঠন কতটা চাঙ্গা হবে, তা নিয়ে সন্দিহান খোদ দলেরই একটা বড় অংশ।
অন্তর্কলহের আশঙ্কা দলেরই নেতাদের
পাপিয়া দেবীকে এর আগে সদস্য হিসেবে বিভিন্ন মিটিং মিছিলে দেখা গেলেও, ফোরফ্রন্টে থাকতে দেখা যায়নি কখনও। তিনি যে প্রবলভাবে আলোচনায় রয়েছেন, তাও নয়। তাহলে হঠাৎ পাপিয়াদেবীতে কেন জেলা সভাপতি করা হল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে দলেরই অন্দরে। এই সিদ্ধান্ত কতখানি ফলপ্রসূ হবে, তা আগামী নির্বাচনগুলি পার হলেই বোঝা যাবে। তবে এতে দলের অন্তর্কলহ এবং সাবোতাজ হতে পারে আশঙ্কা করছেন দলের স্থানীয় প্রবীণ নেতৃত্বদের অনেকেই।
মহকুমা পরিষদে নজর রাখতেই এই বদল ?
মূলত শিলিগুড়ি পুরনিগমের পঞ্চায়েত ভোটকে সামনে রেখেই এই রদবদল বলে মনে করা হচ্ছে। শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ এবং পুরনিগম এখনও পর্যন্ত নিজেদের দখলে আনতে পারেনি তৃণমূল। পুরনিগমে তবু একবার কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে জয়ে এলেও, পরে তারা কম আসন নিয়েও মেয়র পদের দাবি তুলে পুরবোর্ড ছাড়েন। তারপর থেকে এখনো পর্যন্ত আর কখনও কোথাও ক্ষমতা ভোগ করা হয়নি শিলিগুড়িতে। মহকুমা পরিষদ একের পর এক নেতা কর্মীকে দলে টানলেও তা কাজে লাগেনি।
পাপিয়া-তে তরী পার হবে ?
এবার মহকুমা এলাকার একজনকে জেলা সভানেত্রী করে মহকুমা পরিষদ এলাকায় দলকে চাঙ্গা করতে উদ্যোগী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুরনিগম এলাকায় গৌতম দেবেই আরও একবার ভরসা রাখলেও মহকুমা পরিষদ এলাকায় গৌতম-রঞ্জন কারও তেমন প্রভাব নেই। ফলে পাপিয়াদেবীতে ভরসা করে তরী পার হবে কি না, তা সময়ই বলবে।
দুয়ারে নয়, অন্তরে পৌঁছতে হবে
তবে দায়িত্ব নিয়ে পাকা রাজনীতিবিদের মতোই তিনি জানিয়েছেন, শুধু দুয়ারে পৌঁছলে হবে না। মানুষের অন্তরে পৌঁছতে হবে। পুর ও মহকুমা পরিষদ ভোটকে সামনে রেখেই দুর্নীতিমুক্ত দল গড়তে হবে।