বহু দলে বিভক্ত রাজ্য রাজনীতি
কংগ্রেস, সিপিএম, তৃণমূল, বিজেপি বড় দলের পাশাপাশি এসইউসিআই, গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা, গোর্খা ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট, সিপিআই, আরএসপি, ফরওয়ার্ড ব্লক এর মত দল রয়েছে। এ ছাড়াও বহু জন সমাজ পার্টি, সমাজবাদী পার্টি, আম আদমি পার্টির মত অন্য রাজ্যের পরিচিত কিছু দল রয়েছে রাজ্যের বেশ কিছু জায়গায়। তবে প্রথম চারটি দলের মত কারও তেমন উপস্থিতি খালি চোখে টের পাওয়া যায় না। তবুতো আছে।
এবার তালিকায় সংযোজন, নতুন দল
এবার সেই তালিকায় জুড়তে চলেছে নতুন একটি দল। দার্জিলিং পাহাড় থেকে অতি দ্রুত আরও একটি রাজনৈতিক দল আত্মপ্রকাশ করতে চলেছে। সেপ্টেম্বরেই সম্ভবত পূর্ণাঙ্গ দল, রাজ্য রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ করতে পারে। যার নেতৃত্বে থাকছেন সদ্য একা হয়ে যাওয়া অনিত থাপা।
আলাদা দল ছাড়া উপায় নেই
আগামী পুরো ও পঞ্চায়েত ভোটে পাহাড়ে একক ক্ষমতায় লড়ার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে অনিত। আলাদা লড়তে হলে তাকে আলাদা দল গঠন করে তা রেজিস্টার করেই তারপর লড়তে হবে।
আদালতে বিনয় ছাড়া বিনয়পন্থীদের অস্তিস্ত সংকটে
কারণ আদালতের নির্দেশে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা দুটি শাখায় বিভক্ত। তাতে একটি বিমলপন্থী এবং অপরটির বিনয়পন্থী বলে স্বীকার করা রয়েছে। যদিও দল ও সংগঠন করার অধিকার দেওয়া হলেও ভোটে লড়ার অধিকার তারা পাননি। আগে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা হিসেবে একক দল থাকার সময়ে নির্বাচনে লড়ার অনুমতি ছিল। নতুন করে দুই মোর্চার বিবাদে ভোটের অধিকার হারিয়েছেন তাঁরা। ফলে শেষ বিধানসভা নির্বাচনের নির্দল প্রার্থী হিসেবে নিজেদের নাম নথিভুক্ত করেছিল।
আইনি জটিলতা এড়াতে দল ছাড়া গতি নেই
ফলে আলাদা পরিচয় ছাড়া রাজনীতিতে টিকে থাকা অনিতের পক্ষে কার্যত অসম্ভব। পাশাপাশি আইনি জটিলতা বজায় থাকার কোন মানে হয় না। যেখানে বিনয় তামাং প্রতিষ্ঠিত দল-এ বিনয় তামাং নিজেই দল ছেড়ে চলে গিয়েছেন। ফলে অনিতের পক্ষে নতুন দল ছাড়া অন্য কোনও উপায় নেই।
অনিতের নেতৃত্ব অবৈধ দাবি বিমল-রোশনদের
যদিও আপাতত বিনয় প্রতিষ্ঠিত মোর্চার সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক, যৌথ পদই দখল করে বসে আছেন অনিত। যাকে সম্পূর্ণ অবৈধ বলে ঘোষণা করেছেন বিমলপন্থী মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি।
জিএনএলএফ ছেড়ে একচ্ছত্র রাজত্ব মোর্চার
এর আগে ২০০৭ সালে সুভাষ ঘিসিংয়ের গোর্খা ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট জিএনএলএফ ছেড়ে বিমল গুরুং, রোশন গিরি, অনিত থাপা, বিনয় তামাং সহ জিএনএলএফের প্রথম সারির প্রায় বেশির ভাগ নেতাই বেরিয়ে এসে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা স্থাপন করেন। তারপর থেকে ২০১৭ পর্যন্ত পাহাড়ে একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল বিমল গুরুংয়ের নেতৃত্বাধীন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার।
কারা আসল মোর্চা
২০১৭ পৃথক রাজ্যের দাবিতে আন্দোলন এবং ধারাবাহিক হিংসা ঘটনার পর থেকে একাধিক মামলায় জর্জরিত হয়ে গ্রেফতারের ভয়ে পাহাড় ছাড়েন বিমল গুরুং, রোশন গিরি সহ বহু মোর্চার নেতা। সেই সুযোগে রাজ্য সরকারের সঙ্গে সমঝোতা করে বিনয় তামাং এবং নিজেদের গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা সভাপতি ও সম্পাদক বলে ঘোষণা করেন। বিমল গুরুংয়ের মোর্চা থেকে বিমল গুরুং সহ অন্যান্য নেতাদের বহিষ্কৃত বলে ঘোষণা করেন বিনয়। যদিও গোপন আস্তানা থেকে তিনিই আসল মোর্চা সভাপতি বলে বারবারই দাবি করে থাকেন বিমল।
অনিতের সঙ্গে দূরত্ব
ফিরে আসার পর ফের নিজেদের মোর্চার নামেই তারা দল চালাতে থাকে। বিষয়টি আদালতে গেলে আদালত দুটি গোষ্ঠীকেই নিজেদের দলীয় কর্মসূচি করতে অনুমতি দেয়। তবে নির্বাচনে লড়ার অনুমতি পায়নি। প্রায় চার বছর আলাদাভাবে দল চালিয়ে হঠাৎই অনিত থাপার সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়ে যায় বিনয়ের।
বহিষ্কৃত বিমলকেই পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিলেন বিনয়
নিজের প্রতিষ্ঠিত দল থেকেই অনিতকে বিপদে ফেলতে তিনি দলের সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে বিমল গুরুংকে ইস্তফাপত্র পাঠিয়ে দেন। যাকে তিনি মোর্চার পদ থেকে বহিষ্কার করেছিলেন, তাঁর কাছেই ইস্তফাপত্র পাঠানো রাজনীতিতে অন্য একটা মাত্রা এনে দেয়। বিনয় ২০১৭ সালে যে সমস্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তা ভুল বলে দাবি করে পাহাড়বাসীর কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন।