চার হাত এক করার মাত্র দু'দিন হয়েছিল। ফুলশয্যা তখনও বাকি। এইদিনটি প্রত্যেকের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ। বিয়ের পর এই রাতটির অপেক্ষাতেই কাটে অর্ধেক জীবন। কিন্তু সব ফুলশয্যা মধুর হয় না। কোনও কোনও ফুলশয্যায় জীবনের তাল কেটে যায়। এমনই ঘটনা ঘটেছে নদিয়ার নাকাশিপাড়ার থানারগাছা এলাকায়।ফুলশয্যার রাতের অনেকটা আগেই সন্ধ্যায় বাড়ির কাছে একটি আমগাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে নব বিবাহিতর ঝুলন্ত দেহ!
ঘটনার দিন অন্যমনস্ক ছিলেন
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে মৃতের নাম অসিত ঘোষ। বয়স ৩২ বছর। নদিয়ার থানারগাছাতেই তার বাড়ি। অসিতের দাদা অমরবাবু জানিয়েছেন, অস্বাভাবিক কিছু মনে হয়নি। তবে একটু অন্যমনষ্ক দেখাচ্ছিল। বিয়ের পরিবেশে তা নিয়ে তাঁরা অতটা মাথাও ঘামাননি। কারণ সবার মাথায় অনেক দায়িত্ব ছিল।শনিবার ফুলশয্যার দিন সকালে তাঁকে কাজে যেতে বলেন অসিতবাবু। বাড়ির কাজ একাই সামলে নেবে বলেও জানায়। তারপর তিনি নিশ্চিন্ত হয়ে বেরিয়ে যান।
পুকুরে স্নান করতে গিয়ে আর ফেরেননি
শনিবার দুপুরে বাড়ির কাছে একটি পুকুরে স্নান করতে যাচ্ছেন বলে যান অসিত। কিন্তু তারপর আর বাড়ি ফেরেননি। প্রথমে কেউ গা না করলেও পরে খোঁজ শুরু হয়। বিকেলে অমরবাবু এসে শোনেন ভাইকে নাকি পাওয়া যাচ্ছে না। খোঁজাখুজির পর দেখা যায় বাড়ির কাছেই গাছ থেকে গলায় গামছা বাঁধা অবস্থায় ঝুলে রয়েছেন অসিত। ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এই ঘটনায় শোকের ছায়া নেমেছে দুই পরিবারে। বিয়ের দু’দিনের মধ্যে স্বামীকে হারিয়ে মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছেন নববধূ।
বিয়ের বাজার, বউয়ের শাড়ি কেনেন নিজেই
জানা গিয়েছে, অসিত পেশায় কারখানার কর্মী। অভাবের সংসারে মূলত তার রোজগারেই চলত। তাঁর দাদা বেশ কিছু বছর ধরে আর্থিক সমস্যার পর আপাতত একটু থিতু হয়েছিলেন। পরিবারের লোকজন তাঁর বিয়ে ঠিক করেন। নাকাশিপাড়ার ছোট শিমুলিয়া এলাকায় প্রিয়া নামের একটি মেয়েকে পছন্দ হয় অসিতের পরিবারের। অসিতও তাতে আপত্তি করেনি। গত বৃহস্পতিবার বিয়ে হয় তাঁদের। শনিবার ছিল ফুলশয্যা। কিন্তু তার পরেই এই ঘটনা!
আত্মহত্যা না খুন?
পরিবারের দাবি, বিয়ে নিয়ে কোনও সমস্য়ার কথা তাঁদের জানা নেই। কারণ বিয়ে সংক্রান্ত কাজ, কেনাকাটা নিজেই করেছিলেন অসিত। হবু স্ত্রীর জন্য দামি শাড়িও কিনেছিলেন। আচমকা কেন তাঁকে আত্মহত্যা করতে হল, অথবা এটা আত্মহত্যা নয়, তা নিয়ে তাঁদের মধ্যে ধন্দ দেখা দিয়েছে।