
পুজোর বাজার তখন জমে উঠেছে। পুজোর আগের এটাই শেষ রবিবার ছিল। ফলে অনেক রাত পর্যন্ত কেনাকাটা চলছিল। মাঝে কিছুদিন বৃষ্টি হওয়ায় বাজার তেমন জমেনি। গত দু-তিনদিন ধরে আকাশ পরিষ্কার, ঝকঝকে ওয়েদার। ফলে শেষ রবিবার এমন সময় শিলিগুড়ির নকশালবাড়ি বাজারে ঘটলো ছন্দপতন। হঠাৎ আগুন লেগে ভস্মীভূত হয়ে গেল একের পর এক দোকান।
আগুনের করাল গ্রাসে যখন চলে যাচ্ছে দোকানগুলি, হতবুদ্ধি ও দিশাহারা বিক্রেতারা এপাশ-ওপাশ ছোটাছুটি করেও কোনও উপায় বের করতে পারেননি। পুজোর আগেই এত বড় সর্বনাশ হয়ে যাওয়ায় এখন কার্যত অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু হয়ে পড়লেন একগুচ্ছ দোকানদার। রাতে পুলিশ এলে তাদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখান এলাকাবাসী। এই বড় ক্ষতিপূরণ কিভাবে হবে কেউ জানেন না।
চলতি সপ্তাহে বিভিন্ন চা বাগানে বোনাস হওয়ায় পুজোর বাজারে শেষ রবিবারে কেনাকাটা ভালোই জমে ছিল। প্রায় প্রতিটি দোকানে ছিল ঠাসাঠাসি ভিড়। অন্যান্য দিন রাত ৯ টার পরে চা বাগান সংলগ্ন এলাকার বাজার হওয়ায় শুনশান হয়ে যায়। তবে পুজোর ব্যাপার আলাদা। বাজারে ঘোরাঘুরি করছিলেন কয়েক হাজার লোকজন। আচমকা আগুন লেগে প্রায় ঘন্টাখানেকের মধ্যেই ১৫-২০টি দোকান সম্পূর্ণ পড়ে ছাই হয়ে যায়। যার মধ্যে বেশিরভাগই পোশাকের দোকান এবং প্রসাধনী এবং জুতোর দোকান। সঠিক সংখ্যা নিয়ে ধ্বন্দ থাকলেও প্রায় ৪০-৫০ টি দোকান বা তারও বেশি পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে.
রাত দুটো পর্যন্ত দমকল আগুন নেভাতে পারেনি। নকশালবাড়ি কেন্দ্র থেকে তিনটি ইঞ্জিন গিয়েও আগুনকে আনতে পারেনি। এরপর শিলিগুড়ি থেকে আরও তিনটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। দমকল সূত্রে খবর আরও বিভিন্ন এলাকা থেকে দমকলের ইঞ্জিন আসে। এদিকে বাজারে এলাকায় কোনও জলের উৎস না থাকার সমস্যায় পড়তে হয় দমকলকে। জল আনতে ইঞ্জিনগুলিকে যেতে হয় দুই কিলোমিটার দূরে। ফলে রাতের দিকে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়।
তবে কী কারণে আগুন লেগেছে তা স্পষ্ট হয়নি, মহাজনের থেকে সুদে টাকা নিয়ে অনেকে বাড়তি মাল তুলেছিলেন। কিন্তু এক রাতের আগুনে সব শেষ। এদিকে সুদ সহ আসল টাকাও গুনতে হবে কড়ায়-গন্ডায়। ফলে মাথায় হাত তাঁদের। সরকারি সহায়তা ছাড়া তাঁরা ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। রাতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছান শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের সভাধিপতি অরুণ ঘোষ সহ স্থানীয় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীরা।