
একজন মহিলা ৪৪টি ভিন্ন ভিন্ন বিধানসভা এলাকার ভোটার। এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসেছে পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার পাণ্ডবেশ্বরে। ওই মহিলার নাম মায়ারানী গোস্বামী। SIR (Special Intensive Revision)-এর সময় এনুমারেশন ফর্মের কিউআর কোড স্ক্যান করতেই তিনি দেখেন, এতগুলো বিধানসভা কেন্দ্রের ভোটার তালিকায় তাঁর নাম রয়েছে। যা নিয়ে বিজেপি ও তৃণমূলের মধ্যে রাজনৈতিক লড়াই শুরু হয়েছে।
পাণ্ডবেশ্বরের বৈদ্যনাথপুর পঞ্চায়েতের ডিভিসি পাড়ার বাসিন্দা মায়ারানি গোস্বামী। তিনি জানান, SIR ফর্মের QR কোড স্ক্যান করার পর দেখতে পান তিনি রাজ্যের বহু জায়গার ভোটার। অথচ তিনি এই তথ্য এর আগে কোনওদিন জানতেন না। বা কেউ তাঁকে জানায়নি। ভোটার তালিকাযগুলোতে তাঁর এবং স্বামীর নাম যথাক্রমে মায়ারানি এবং গৌর লেখা আছে। যদিও পদবি এবং EPIC নম্বর আলাদা। ওই মহিলা বলেন, 'আমি তো দেখে অবাক। নিজে তো কোনওদিন বুঝতেই পারিনি। এমনকী এটা কীভাবে সম্ভব সেটা জানাও জানি না।'
এদিকে এই ঘটনার পর, বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্য়ে রাজনৈতিক বাকবিতণ্ডা শুরু হয়েছে। বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারি বলেন, 'এট আসলে তৃণমূল কংগ্রেসের সুপরিকল্পিত কৌশল। তারা বছরের পর বছর এভাবে ভুয়ো ভোটারদের উপর ভিত্তি করে নির্বাচনে জিতে আসছে।' তৃণমূল কংগ্রেস পাল্টা জবাব দিয়ে অভিযোগ অস্বীকার করেছে। দলের সাংসদ কীর্তি আজাদ বলেন,'নির্বাচন কমিশনের অবহেলার কারণেই এই অসঙ্গতি তৈরি হয়েছে। বিজেপি সমর্থকরা এসআইআর প্রক্রিয়া ব্যাহত করার জন্য এখন এসব অজুহাত দিচ্ছে।'
এদিকে শিবপুরের একটি ঘটনা ঘিরেও রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে। সেখানে শ্যামলী বন্দ্যোপাধ্যায় নামে এক মহিলাকে মৃত দেখানোর অভিযোগ উঠেছে। তিনি দাবি করেন ২০০২ সালে ভোট দিয়েছিলেন। কিন্তু এখন তাঁর নাম তালিকা থেকে ডিলিটেড দেখাচ্ছে। যা নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন তিনি।
তিনি বলেন, '২০০২ সালে আমি নিজে ভোট দিয়ে এসেছি। আমি মরিনি। বেঁচে আছি। তারপরও কেন নাম বাদ দেওয়া হয়েছে, তা জানি না। এটা হতে পারে না।'
প্রসঙ্গত, SIR শুরু হওয়ার পর থেকে ভোটার তালিকা নিয়ে বিচিত্র সব ঘটনা সামনে এসেছে। যেমন, এই প্রক্রিয়ার কারণে ৩৭ বছর পর হারানো সন্তানকে ফিরে পেয়েছে পুরুলিয়ার এক সন্তান। ১৯৮৮ সালে বাড়ি ছাড়া সেই ব্যক্তি ফের পরিবারের কাছে ফিরে এসেছেন।