পুরসভায় নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে এবার বিজেপি বিধায়ক পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে হানা দিল সিবিআই। আজ অর্থাত্ সোমবার সকালে রানাঘাটের বিজেপি বিধায়কের বাড়িতে হানা দেয় সিবিআই। রানাঘাট পুরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়।
পার্থসারথি তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যোগ দিয়েছিলেন। তৃণমূল কংগ্রেসের থাকাকালীন তিনি রানাঘাট পুরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন। টানা ২৫ বছর রানাঘাটে পুরপ্রধান ছিলেন তিনি। প্রথম ১৫ বছর কংগ্রেসের হয়ে, এবং তারপর ১০ বছর তৃণমূল কংগ্রেসের। ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি-তে যোগ দেন। রানাঘাট থেকে জিতে বিধায়ক হন। ২০১১ সালে রানাঘাটে তৃণমূলের টিকিটে জিতেছিলেন পার্থসারথি। ২০১৬ সালে হেরে যান। বিজেপি বিধায়কের বাড়ি ছাড়াও আরও ৬ জায়গায় তল্লাশি চালাচ্ছে সিবিআই।
অন্যদিকে উলুবেড়িয়া পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান অর্জুন সরকারের বাড়িতেও চলছে সিবিআই হানা। আজ সকাল ১০টা নাগাদ উলুবেড়িয়া পুরসভার ২০ নম্বর ওয়ার্ডে ফুলেশ্বরের কুসবেরিয়ায় অর্জুনের বাড়িতে তল্লাশি শুরু করেন সিবিআই-এর ৫ জন অফিসার। বাড়ির বাইরে ঘিরে রাখে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সশস্ত্র জওয়ানরা। অর্জুন সরকার পুরসভার দু বারের প্রাক্তন চেয়ারম্যান। ২০১৫ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি। তাঁর আমলে কিছু নিয়োগ দুর্নীতির ঘটনা নিয়ে সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদ করছে বলে জানা যাচ্ছে। সিবিআই হানা শুরু হয়েছে, ডায়মন্ড হারবার পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান মীরা হালদারের বাড়িতেও।
পুরসভায় নিয়োগ দুর্নীতিতে ইতিমধ্যেই তৃণমূল কংগ্রেসের একাধিক নেতা-মন্ত্রীর নাম জড়িয়েছে। মন্ত্রী ও কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম ও তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্রের বাড়িতে হানা দিয়েছে সিবিআই। দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদও করেছে। ফিরহাদ, মদন ছাড়াও তল্লাশি অভিযান চলেছে হালিশহরের অংশুমান রায়, কাঁচরাপাড়ার সুদমা রায়, উত্তর দমদমের সুবোধ চক্রবর্তী এবং নিউ ব্যারাকপুরের তৃপ্তি মজুমদারের বাড়িতে।
রবিবার ৯ ঘণ্টা সিবিআই তল্লাশি ও জিজ্ঞাসাবাদ শেষে কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম সিবিআই ও কেন্দ্রকে একযোগে নিশানা করে বলেন, 'বিজেপির কাছে মাথা নত করব না বলেই কি এ ভাবে আমার সম্মানহানি করা হচ্ছে? সমাজসেবা করেছি। এটাই কি আমার অপরাধ? তা না হলে এ ভাবে হেনস্থা করা হবে কেন? আমার ভাইয়ের আজ শ্রাদ্ধ ছিল। সেখানেও যেতে দেওয়া হল না আমাকে। বলুন তো, পুর-নিয়োগের কোনও ফাইল কি পুরমন্ত্রীর কাছে আসে। একটা অসভ্য, বর্বর দল। এদের কাছে মাথা নত করব না বলে এ ভাবে আমার পরিবারকে অপমান করা হচ্ছে। বিজেপিকে বলব, আমাকে জেলে রাখুন, কিন্তু এ ভাবে অপমান করবেন না।'
কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্রের কথায়, 'আমাকে বলল, আপনার একটা বৌ না দুটো বৌ? আমি বললাম, সেটা তো খোঁজ করলেই পাওয়া যাবে। তবে এটা জানি, আমি হাঁটলেই ৫০ জন গোপিনী হাঁটবে। কিন্তু আমার নামে কোনও ৪৯৮ ধারায় মামলা নেই। আমার সব ভার্চুয়াল।'